Site icon The News Nest

সকালে বাদ, অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে পড়ে মোদীর ক্যাবিনেট প্যানেলে রাতেই কামব্যাক রাজনাথের

modi rajnath shah oath 759

#নয়াদিল্লি: সকালে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সূর্য ডুবতেই তাঁকে ফেরানো হল। ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে মোদী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবিনেট কমিটিতে ফেরানো হল প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে।

বুধবার থেকেই মন্ত্রিসভার কমিটিগুলির বিন্যাস ধাপে ধাপে ঘোষণা করছিল মোদী সরকার। তাতে স্বরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে আনা রাজনাথ সিংহের ডানা ছাঁটা হচ্ছিল অল্প অল্প করে। আর তার থেকেও বেশি গতিতে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ওজন বাড়ানো হচ্ছিল। গত দু’দিনে পর্যায়ক্রমে মোট আটটি কমিটি ঘোষণার পরে দেখা গেল, সব ক’টিতেই রয়েছেন অমিত। এমনকি দু’টির নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। নির্মলা সীতারামনের মতো নেত্রীও সাতটি কমিটিতে রয়েছেন। পীযূষ গয়াল রয়েছেন পাঁচটিতে। কিন্তু খাতায়-কলমে সরকারের ‘নম্বর টু’ রাজনাথ রয়েছেন দু’টিতে। মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক বিষয়ের মতো কমিটি থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি।

রাজনাথকে ওই কমিটিগুলি থেকে বাদ দেওয়ায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছিলেন। কেননা প্রধানমন্ত্রীর পরেই যিনি শপথ নেন তাঁকেই দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ধরা হয়। তাঁকেই ক্যাবিনেট এবং রাজনৈতিক সম্পর্কের কমিটিতে রাখা হয় প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে। আগের বার মোদী সরকারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে ওই কমিটিতে রাখা হয়েছিল। বিজেপি সূত্রের মতে, দিনভর পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, ঘনিষ্ঠ মহলে রাজনাথ বলেন, এর পরে তাঁর মন্ত্রিসভায় থাকার কোনও অর্থ হয় না। আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। দিনভর বিতর্ক আর বিদ্রোহের আঁচ পেয়ে সন্ধের পরে পিছু হটতে হয় মোদীকে। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা ১৯ মিনিটে নয়া সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করে ওই কমিটিতে রাজনাথের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। দিনের শেষে ক্যাবিনেট কমিটিতে শুধু রাজনাথকে ফিরিয়েই আনা হয়নি, সংসদ বিষয়ক কমিটির প্রধান করা হয়েছে তাঁকে।

পুনর্বিবেচনার পরে রাজনাথ সিংহকে সমস্ত কমিটিতে রাখা হল, অমিত শাহর থেকে উঁচু পদে। একমাত্র নিয়োগ ও বাসস্থানের কমিটি ছাড়া। নিয়োগের কমিটিতে কেবল অমিত ও মোদীই রয়েছেন। মোদী অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্যাবিনেটটির মুখ্য ভূমিকায় থাকবেন। ওই কমিটিতে তিনি ছাড়া রয়েছেন রাজনাথ, অমিত, নীতিন গড়করি, নির্মলা সীতারামন, পীযূষ গোয়াল, ডিভি সদানন্দ গৌদা, নরেন্দ্র তোমার, রবিশঙ্কর প্রসাদ, হরসিমরত কৌর বাদল, সুব্রমনিয়াম জয়শঙ্কর এবং ধর্মেন্দ্র প্রধান। সংসদীয় কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, রাজনাথ, অমিত, নির্মলা, নরেন্দ্র তোমার, রবিশঙ্কর প্রসাদ, রামবিলাস পাসোয়ান, থাওয়ারচন্দ গেহলত, প্রকাশ জাভড়েকর ও প্রহ্লাদ যোশী। নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি, যেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কমিটি, তাতে রয়েছেন মোদী, রাজনাথ, অমিত, নির্মলা ও জয়শঙ্কর। বিনিয়োগ ও বৃদ্ধি কমিটিতে রাজনাথ, অমিত, নীতিন, নির্মলা ও পীযূষ রয়েছেন। বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। আর এক নতুন কমিটি কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটি। সেখানে মোদী, রাজনাথ, অমিত, নির্মলা, নরেন্দ্র তোমার, রমেশ পোখরিয়াল, ধর্মেন্দ্র প্রধান, মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডে, সন্তোষ গাঙ্গোয়ার ও হরদীপ সিংহ পুরী রয়েছেন। ওই প্যানেলের বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।

রাজনাথের দফতর থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, তিনি আদৌ ইস্তফা দিতে চাননি। সঙ্ঘের হস্তক্ষেপেরও প্রশ্ন নেই। কিন্তু এই যুক্তির পরেও প্রশ্ন থেকে যায়, রাজনাথকে বাদ দিয়ে মোদী কমিটি গড়েছিলেন কেন এবং সন্ধে হতে না-হতেই সেই কমিটি নতুন করে সাজাতে হল কেন? কেনই বা অমিতকে সরিয়ে একটি কমিটির দায়িত্ব রাজনাথের হাতেই তুলে দিতে হল? কেনই বা আটটির মধ্যে ছ’টিতেই রাজনাথকে রাখতে বাধ্য হলেন মোদী?

 

Exit mobile version