পরাজয়ের ‘১০০ শতাংশ দায়’ নিয়ে সভাপতিপদে ইস্তফার ইচ্ছাপ্রকাশ রাহুলের, খারিজ করলেন দলীয় নেতারা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#নয়াদিল্লি: জাতীয় কংগ্রেসের কার্যকরী সমিতির বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতিপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন রাহুল গান্ধী। এ দিন দিল্লিতে এই উচ্চস্তরের বৈঠকে তিনি ইস্তফা দেওয়ার কথা জানালে তাঁকে বিরত করেন উপস্থিত কংগ্রেস নেতৃত্ব।

এ দিন সকাল ১১টা থেকে দেশ জুড়ে নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর্যালোচনায় শুরু হয় কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির বৈঠক। সেখানে যোগ দিয়েছেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, মল্লিকার্জুন খাড়গে ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুরু থেকেই এ বারের লোকসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না-হওয়ার ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা হয়। প্রচারে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে ভাবে আক্রমণের সুর চড়ানো হয়েছিল, তার ফল কেন ইভিএমে মিলল না, সে সমস্ত বিষয়েই পর্যালোচনা হয়। একই সঙ্গে এই বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতিপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান রাহুল। কিন্তু তাঁর সেই ইচ্ছাকে সরাসরি খারিজ করে দেন দলের সামনের সারির নেতারা। যদিও কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দাবি করেছেন, রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করেননি। এবং কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির তরফ থেকেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও ঘোষণা এখনও করা হয়নি।  দলীয় সূত্রে খবর, পরাজয়ের জন্য ‘১০০ শতাংশ দায়’ নিয়েছেন রাহুল। তিনি মনে করেন, রাফাল দুর্নীতি বা চৌকিদার ইস্যু-সহ কর্মসংস্থান, শিল্পোন্নয়নকে হাতিয়ার করে তিনি যে ভাবে প্রচারে সুর চড়িয়েছিলেন, তার প্রতিফলন দেখা যায়নি নির্বাচনী ফলাফলে। উত্তরপ্রদেশের অমেঠী দীর্ঘকাল যাবৎ নেহরু-গান্ধী পরিবারের দুর্গ বলে পরিচিত। এবার সেখানে রাহুল হেরেছেন বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে। কংগ্রেস সভাপতি ওয়ানাড় কেন্দ্রটি জিতেছেন বটে কিন্তু তাতে অমেঠী হারানোর ক্ষতি পূরণ হয় না।

রাহুল কি কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না কি ওই পদেই থাকবেন, লোকসভার ফল বেরনোর পর থেকেই এ নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। গোটা রাজনৈতিক মহলে এ দিন সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয় ছিল রাহুলের পদত্যাগের বিষয়টি। কিন্তু সেই জল্পনায় আপাতত দাঁড়ি টানল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সূত্রের খবর, বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনে দেশ জুড়ে দলের ভরাডুবির বিষয়টি নিয়ে কাঁটাছেড়া হবে। কেন এমন ফল হল, কোথায় কোথায় ত্রুটি ছিল— সবই আলোচনায় উঠে আসতে পারে এই বৈঠকে।

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৪টি আসন। গত বারের তুলনায় এ বার টেনেটুনে আরও ৮টি আসন বাড়াতে পেরেছে তারা। দেশ জুড়ে যে মোদী বিরোধী ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন রাহুল, সেই প্রচেষ্টা থমকে গিয়েছে মোদী-শাহের কৌশলে। আগের বারের তুলনায় আরও ২৩টি আসন বাড়িয়ে বিপুল জয় নিয়ে এসেছে বিজেপি। মোদী ম্যাজিকের কাছে পুরোপুরি ফ্লপ রাহুলের ‘চৈকিদার চোর হ্যায়’। ভোটের ফল দেখার পরই দলের বিপর্যয়ের দায় নিজের ঘাড়ে নিয়েছেন রাহুল। দলীয় সূত্রে খবর, তার পরই  কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ছিলেন রাহুল গান্ধী । তাঁকে প্রশ্নও করা হয়েছিল, তা হলে কি এ বার সভাপতির পদ ছাড়তে চলেছেন রাহুল? এ প্রসঙ্গে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “ওয়ার্কিং কমিটি ও আমার উপর বিষয়টা ছেড়ে দেওয়াই ভাল।”

লোকসভায় এ বার ২০১৪ সালের মতোই প্রধান বিরোধী দলের তকমাও হারাতে চলেছে কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দল হতে গেলে ৫৪৩ আসনের লোকসভায় অন্তত ৫৫ টি আসন পেতে হয়। কংগ্রেস তার চেয়ে তিনটি কম পেয়েছে। দলের তিন প্রবীণ নেতা ইতিমধ্যে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাজ বব্বর, কর্ণাটকের এইচ কে পাটিল এবং ওড়িশা কংগ্রেসের প্রধান নিরঞ্জন পট্টনায়েক।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest