Site icon The News Nest

সাফারি পার্ক থেকে উধাও চিতাবাঘ, আতঙ্ক শিলিগুড়িতে

ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিনেই চিতাবাঘের আতঙ্ক ছড়াল শিলিগুড়িতে। বেঙ্গল সাফারি পার্কের এনক্নোজার থেকে উধাও চিতাবাঘ৷ আপাতত বেঙ্গল সাফারি পার্ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ পর্যটকদের পার্কে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না৷ সাফারি পার্কে বাঘের সন্ধানে তল্লাশিতে নেমেছে বনদপ্তরের পাঁচটি স্পেশ্যাল টিম৷
শিলিগুড়ি শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান বেঙ্গল সাফারি পার্ক৷ শীতের মরশুমে প্রতিদিন সাফারি পার্কে ভিড় জমান পর্যটকরা৷ বড়দিন কিংবা নিউ ইয়ারে কার্যত ভিড় উপচে পড়ে৷ কিন্তু এ বছর ১ জানুয়ারির সকালে সাফারি পার্ক খোলার আগেই ঘটল বিপত্তি৷ প্রতি দিন সকাল ১০টায় ওই পার্ক খোলার আগে একটি রুটিন পরিদর্শন করেন বনকর্মীরা। রোজকার মতোই মঙ্গলবার সকালে সাড়ে সাতটা নাগাদ সাফারি পার্কে টহল দিচ্ছিলেন মনিটারিং টিমের সদস্যরা, তখন তাঁদের নজরে পড়ে শচীন নামের চিতাবাঘের এনক্লোজারটি ফাঁকা৷ দাবানলের মতো খবর ছড়িয়ে পড়ে শিলিগুড়ি শহরে৷ তত ক্ষণে দর্শণার্থীদের জন্য পার্কের টিকিট বিক্রিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, চিতাবাঘটির হদিশ না মেলায় দর্শণার্থীদের জন্য পার্কের দরজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বন দফতর। যদিও বন দফতর বা পার্ক কর্তৃপক্ষ— কোন পক্ষই এ নিয়ে সরকারি ঘোষণা করেননি।
শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে মাত্র একটা বছর হয়েছে সচিন রয়েছে। গত বছর জানুয়ারিতেই খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে সচিন ও সৌরভ নামে দুটি চিতাবাঘকে আনা হয় এখানে। তাদের ঘিরেই পর্যটকদের উন্মাদনা তুঙ্গে। বন দফতর সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর পর্যন্ত ওই চিতাবাঘটির খোঁজ মেলেনি। সেবক রোডে বেঙ্গল সাফারি পার্কটি যথেষ্ট ব়ড় এলাকা নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে পার্কের ভিতরেই কোথাও ওই চিতাবাঘটি লুকিয়ে রয়েছে, নাকি পার্ক সংলগ্ন কোনও জঙ্গলে চলে গিয়েছে, তা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে ধোঁয়াশায় ছিলেন বনকর্মীরা। পার্ক থেকে যদি ওই চিতাবাঘটি পালিয়েও যায় বলে ধরে নেওয়া যায়, তবে পার্কের উঁচু তার টপকে কী ভাবে সেটি পালাল, তা নিয়েও ধন্দে পার্ক কর্তৃপক্ষ। তবে গোটা পার্ক তন্ন তন্ন করে খোঁজার পর বনকর্মীরা নিশ্চিত যে ওই চিতাবাঘটি পার্ক থেকে পালিয়ে পাশের জঙ্গলে চলে গিয়েছে।
চিতাবাঘের হদিশ না মেলা নিয়ে দু’টি সম্ভাবনার কথা বলছেন বন দফতরের কর্তারা। বনকর্মীদের একাংশের মতে, পার্কের সামনে থাকা উঁচু গাছের ডালে উঠে তার টপকে যেতে পারে চিতাটি। অন্য অংশের মতে, বর্ষবরণের রাতে শিলিগুড়িতে প্রচুর শব্দবাজি পোড়ানো হয়েছে। সেই আওয়াজেই ভয় পেয়ে হয়তো প্রথমে পার্কের কোথাও লুকিয়ে ছিল। এর পর সেটি পালিয়ে যায় পাশে জঙ্গলে। বনদপ্তরের বৈকুন্ঠপুর ও শারুগারা রেঞ্জের কর্মীরা ছয়টি দলে ভাগ হয়ে সাফারি পার্কে চিতাবাঘের সন্ধান চালাচ্ছেন৷ তবে এখনও পর্যন্ত চিতাবাঘের খোঁজ মেলেনি বলে জানা গিয়েছে৷ আপাতত বেঙ্গল সাফারি পার্কে আগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ৷ ঘুমপাড়ানি গুলি নিয়ে চলছে তল্লাশি।
এদিকে এই ঘটনায় বেঙ্গল সাফারি পার্কের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ কয়েক মাসে আগে শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে একটি রয়্যাল বেঙ্গল শাবকের মৃত্যু হয়েছিল৷ 

Exit mobile version