নয়াদিল্লি : রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউ যাতে সেনাবাহিনীর বীরত্বকে ব্যবহার না করতে পারে সেজন্য অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে খোলা চিঠি লিখে এমনই দাবি করেছেন নৌবাহিনীর প্রাক্তন প্রধান অ্যাডমিরাল এল রামদাস।
পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকেই অন্যান্য আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রসঙ্গকে পিছনে ফেলে, তা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের রাজনৈতিক ময়দানের সব থেকে বড় ইস্যু। পুলওয়ামায় জঙ্গি নাশকতা থেকে ভারতীয় বায়ুসেনা, ক্যাপ্টেন অভিনন্দন থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান, প্রচারের মঞ্চে তর্কাতীত ভাবে সামনে চলে এসেছে এই বিষয়গুলি। এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান অ্যাডমিরাল এল রামদাস।মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে লেখা খোলা চিঠিতে এই অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর বীরত্বকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার কাজে ব্যবহার করছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এই সংস্কৃতি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিপন্থী।
দু’পাতার ওই চিঠিতে এল রামদাস লিখেছেন, ‘সেনাবাহিনী সব সময়ই আমাদের গর্বের বিষয়। তারা অরাজনৈতিক ও ধর্মনিরপেক্ষ। আমি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক ও নৌবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী।আমার চোখে পড়েছে, রাজনৈতিক দলগুলি যথেচ্ছ ভাবে সেনার ইউনিফর্ম, ছবি ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্টারে সেনাবাহিনীর সদস্যদের মুখের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের মুখ দেখা যাচ্ছে। দেশের এক জন দায়িত্ববান নাগরিক এবং ভারতীয় সেনার এক জন প্রাক্তন সদস্য হিসেবে এই সব ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। সেনাবাহিনীর এই অপব্যবহার কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’ এই সব ঘটনা সেনাবাহিনীর মানসিক কাঠামোয় প্রভাব ফেলতে পারে বলেও নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন অ্যাডমিরাল এল রামদাস।তাঁর দাবি, সংবিধানের রচয়িতারা যে দৃষ্টিভঙ্গি ও নৈতিকতার কথা বলে গিয়েছেন, তা সশস্ত্র বাহিনী অনুসরণ করে। ভোটের জন্য সেনাবাহিনীর কৃতিত্বকে ব্যবহার করা হবে, এমনটা মেনে নেওয়া যায় না।সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সদস্যরাও তাঁকে এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বলে চিঠিতে লিখেছেন তিনি।অ্যাডমিরাল এল রামদাস লিখেছেন,’আমি জানি, আমার মতো আরও অনেকেই মনে করেন, সৈনিকদের সততা ও ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র নষ্ট করা হচ্ছে।’
তাঁর বক্তব্য, ‘কয়েক সপ্তাহ পরেই নির্বাচন। সেনাবাহিনীর বীরত্বকে ভোটপ্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সেনাবাহিনীর এই অপব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানাচ্ছি। নির্বাচনী প্রচারে সেনার ছবি বা নাম ব্যবহার করা যাবে না, এই মর্মে রাজনৈতিক দলগুলিকে অবিলম্বে চিঠি দেওয়া হোক।’