নয়াদিল্লি : পুলওয়ামা হামলা ও ভারতের প্রত্যাঘাত হামলার পর ভারতীয় সেনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের শুরু হয়েছে নজিরবিহীন চর্চা।এর আগে কখনো এমনটা হয়নি। লোকসভার আগে হঠাতই রাজনৈতিক চর্চায় সেনাকে টেনে আনার ব্যাপারে আপত্তি ওঠে খোদ সেনা মহল থেকেই। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল,সেনার সাফল্যকে ব্যবহার করে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক মজবুত করতে চাইছে বিজেপি। তবে সে অভিযোগ ভিত্তিহীন তা অবশ্য বলা যায় না। সেনা পোশাক পড়ে নির্বাচনী প্রচার করতে দেখা গিয়েছে বিজেপির সাংসদকে। শহীদদের ছবি পিছনে রেখে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। তবে আর তা হবে না বলে জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। শনিবার দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে নিয়ন্ত্রণরেখার আকাশে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি সামরিক রেষারেষি চলার সময় পাকিস্তান আটক করেছিল। ৬০ ঘন্টা পাকিস্তানের হেফাজতে থাকার পর তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে বিজেপির মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি সহ একাধিক বিজেপি নেতা ও নেত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সাফল্য’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। মোদী না থাকলে যে এমনটা সম্ভব হতো না, এই কথাও তাঁরা বলেছিলেন একাধিকবার।
Dear Election Commission of India:
Is this permissible?
Using photograph of a serving soldier in political posters?
If not, will you act against it? pic.twitter.com/IiGUkphZWM— Yogendra Yadav (@_YogendraYadav) March 9, 2019
স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব বিজেপির ব্যানারের ছবি তুলে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে টুইটারে পোস্ট করেন। এই ভাবে সেনাবাহিনীকে কী ভাবে কোনও দল নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন করেন তিনি।রাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব বিজেপির ব্যানারের ছবি তুলে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে টুইটারে পোস্ট করেন। এই ভাবে সেনাবাহিনীকে কী ভাবে কোনও দল নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন করেন তিনি।
শনিবার নির্বাচন কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনায় বসে। সমস্ত দলকেই নোটিস পাঠিয়ে সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে।নির্বাচন কমিশন তাদের নোটিসে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বরের একটি চিঠি ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলগুলির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। ওই নোটিসে বলা হয়, “এখানে এই কথাটির স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাক যে, দেশের সেনাবাহিনী হল দেশের সীমান্ত, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অভিভাবক। তারা অরাজনৈতিক এবং নিরপেক্ষ অংশ এই আধুনিক গণতন্ত্রের। তাই রাজনৈতিক দলগুলি ও তাদের নেতাদের অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে সেনাবাহিনীর উল্লেখ করার আগে”। ওই নোটিসে আরও বলা হয়, “তাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের বলা হচ্ছে, তাঁরা যেন নির্বাচনী প্রচারে কোনওভাবে সেনাবাহিনী বা প্রতিরক্ষা কর্মীদের ছবি ব্যবহার না করেন এবং করে থাকলেও অভিলম্বে তা যেন সরিয়ে দেন”।