মাস্টারহীন মাস্টার ব্লাস্টার, প্রয়াত কোচ রমাকান্ত আচরেকর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নতুন বছরের শুরুতেই ভারতীয় ক্রিকেটে শোকের আবহ। চলে গেলেন রমাকান্ত আচরেকর। গোটা বিশ্ব তাঁকে চিনত মাস্টার ব্লাস্টারের কোচ হিসেবে। ৮৭ বছর বয়সে জীবনাবসান হল তাঁর। মুম্বই ক্রিকেটে যেন একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল।
সচিন তেণ্ডলকর ছাড়াও বিনোদ কাম্বলি, অজিত আগরকর, বলবিন্দর সিং সান্ধু, সঞ্জয় বাঙ্গারের মতো ভারতীয় ক্রিকেটের নক্ষত্রদের ছোটবেলার কোচ ছিলেন তিনি। এছাড়াও মুম্বইয়ের দাদরে শিবাজি পার্কে তাঁর কোচিংয়ে একাধিক প্রথম সারির ক্রিকেটার উঠে এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর শারীরীক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নিজের বাড়িতেই জীবনাবসান হয় এই প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেট কোচের। এই অকৃতদার মানুষটির এক আত্মীয়া সংবাদ মাধ্যমকে তাঁর মৃত্যুর খবর দেন।
শচীন তেণ্ডুলকরের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে গিয়েছিল মানুষটির নাম। নিজের প্রথম কোচের নানা কাহিনি বহুবার ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন মাস্টার ব্লাস্টার। গুরু আচরেকার স্যরের মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তাঁর সেরা ছাত্র সচিনও। বলেছেন,’খেলার মাঠেও যেমন সোজা ব্যাটে খেলতে বলতেন আচরেকর স্যর, তেমনই জীবনেও সহজ-সরল থাকার পরামর্শ দিতেন সবসময়। যদি স্বর্গ বলে কিছু থেকে থাকে, তবে আচরেকর স্যরের অন্তর্ভুক্তিতে সেখানকার ক্রিকেট সমৃদ্ধ হবে।’
১৯৩২ সালে মহারাষ্ট্রের মালভনে জন্মগ্রহণ করেন রমাকান্ত। ১৯৪৩ সালে ক্রিকেটে হাতেখড়ি। বছর দুয়েক পর নিউ হিন্দ স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে ক্লাব ক্রিকেটে পা রাখা। পাশাপাশি মহারাষ্ট্র একাদশ, গুলমোহর মিলস এবং মুম্বই পোর্টের হয়েও খেলেছেন। ১৯৬৩-৬৪ সালে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে অল-ইন্ডিয়া স্টেট ব্যাংকের হয়ে একমাত্র প্রথম শ্রেণির ম্যাচটি খেলেছিলেন তিনি। তবে কোচিংয়ে পা রেখেই খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। শচীন তেণ্ডুলকরের মতো প্রতিভাকে চিনতে ভুল করেনি তাঁর চোখ। তাঁর বিখ্যাত এবং সফল শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন অজিৎ আগরকর, বিনোদ কাম্বলি, চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, প্রবীণ আমরে-সহ অনেকে। ভারতীয় ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছিলেন দ্রোণাচার্য পুরস্কার। এমনকী, পদ্মশ্রী সম্মানেও ভূষিত হন তিনি।
সচিনের জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি আদর্শ গুরুর মতোই হাজির ছিলেন ছাত্রের পাশে। সচিনের জীবনের শেষ টেস্ট হোক বা আত্মজীবনী প্রকাশ, গুরু আচরেকর অসুস্থতা সত্ত্বেও সচিনের পাশে থেকেছেন বরাবর। মাঝেমাঝেই ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ গিয়ে দেখা করে আসতেন তাঁর সঙ্গে। সচিন কখনও গুরুর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কার্পণ্য করেননি। প্রতি বছর শিক্ষক দিবসে নিয়ম করে হাজির হয়েছেন গুরুর বাড়িতে। একাধিকবার একাধিক সাক্ষাতকারে সচিন স্বীকার করেছেন, গুরু আচরেকরই তাঁকে নিয়ম-নিষ্ঠা ভরে ক্রিকেটের পুজো করা শিখিয়েছেন। আচরেকরের দৌলতেই তিনি এতটা শৃঙ্খলাপরায়ণ হতে পেরেছেন।সাংবাদিক কুনাল পুরন্দারের লেখা ‘রমাকান্ত আচরেকর: মাস্টার ব্লাস্টার্স মাস্টার’-এ কোচের জীবনের নানা কাহিনি উঠে এসেছে। তাঁর প্রয়াণে শোকাহত ভারতের ক্রিকেট মহল।

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest