Site icon The News Nest

স্বাস্থ্য সঙ্কট আরও জটিল, ডাক্তার নিগ্রহের ঘটনায় পদত্যাগ করলেন এনআরএসের অধ্যক্ষ-সুপারের

sskm 5

#কলকাতা: ডাক্তার নিগ্রহ নিয়ে এনআরএস হাসপাতালে চলতি অচলাবস্থার মধ্যেই সংকট আরও তীব্র হল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল সৌরভ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রিন্সিপাল শৈবাল মুখোপাধ্যায় দুজনেই সরকারের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন।

ডিরেক্টরেট অব মেডিক্যাল এডুকেশনের কাছে দেওয়া ওই ইস্তফা পত্রে তাঁরা দু’জনেই বলেছেন, তাঁদের দায়িত্ব থেকে যেন অবিলম্বে অব্যহতি দেওয়া হয়। কারণ, সরকার তাঁদের যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করতে তাঁরা অপারগ।
সূত্রের খবর, কাল শুক্রবার এনআরএস হাসপাতালের আরও ষোলো জন সিনিয়র ডাক্তার ইস্তফা দিতে পারেন। ফলে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের সংকট শুধু যে তীব্র হল তা নয়, সরকারের শীর্ষ আমলারা এ ঘটনার পর আরও বড় বিপদের আশঙ্কা করছেন। তাঁদের আশঙ্কা এই ঘটনা সংক্রমণের মতো ছড়াতে পারে দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গের সরকারি হাসপাতালগুলিতে। কারণ, তাঁরা ইতিমধ্যেই খবর পেয়েছেন যে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা ইতিমধ্যে বৈঠকে বসেছেন। শুক্রবার গণ ইস্তফার পথে হাঁটতে পারেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর চব্বিশ পরগনার কামারহাটিতে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৮ জন সিনিয়র ডাক্তার ইস্তফাপত্র পেশ করেন। তার পরেই এনআরএসে এই ইস্তফার ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালের একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন বন্ধ করতে সরকার যে কঠোর অবস্থান নিতে চলেছে তাতে সামগ্রিক ভাবে চিকিৎসকদের গরিষ্ঠ অংশই অসন্তুষ্ট। বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন সাংবাদিক বৈঠক করে বা বিবৃতি দিয়ে এর তীব্র নিন্দা করেছেন। অনেকের মতে, এনআরএস হাসপাতালের সুপার এবং প্রিন্সিপাল দুজনেই হয়তো আশঙ্কা করছেন এর পর সরকার পুলিশ দিয়ে আন্দোলন থামানোর চেষ্টা করতে পারে। সেই দায় হয়তো তাঁরা আর নিতে চাইলেন না।

আন্দোলন শুরু হয়েছিল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ থেকে। সেখানকার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। পরিষেবা বন্ধের পাশাপাশি হাসপাতালই কার্যত অবরুদ্ধ। আউটডোর জরুরি পরিষেবা তো বন্ধই, ইন্ডোরে ভর্তি রোগীরাও ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, চার ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  কিন্তু তাতে কান না দিয়ে আন্দোলনকারীরা আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তাঁরা আন্দোলন তুলবেন না। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরেও সামান্যতম উন্নতি হয়নি। এর মধ্যেই বিকেলের দিকে এক দল বহিরাগত হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর জলের বোতল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি  হয়। পুলিশ বহিরাগতদের হঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের মূল ফটক আটকে তালাবন্ধ করে দেওয়া হয়। সন্ধে পর্যন্ত দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

 

 

Exit mobile version