কোচবিহার: মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে কোচবিহারের রাসমেলা মাঠে সভা প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর৷ ৭ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর এবং ৮ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচার করবেন৷ ইতিমধ্যেই সভা মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল৷ এখানেই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি নেতৃত্ব৷ আগেই যদি মুখ্যমন্ত্রীর সভা মঞ্চ তৈরি হয়ে যায়, তবে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী সভা করবেন?
এই মুহূর্তে কোচবিহারে তীব্র উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছে সভাস্থল নিয়ে।প্রধানমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতি দেখতে শুক্রবার সভাস্থল পরিদর্শনে যায় এসপিজি। আর তার মধ্যেই মাঠে তৃণমূলের পতাকা লাগানো নিয়ে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। এগিন এসপিজি কর্তাদের সঙ্গে সভাস্থল নিয়ে বৈঠকেও বসে জেলা প্রশাসন। গোটা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। সকাল থেকেই জেলার পুলিশ কর্তারা সভাস্থল পরিদর্শনে যান। অপ্রীতিকর কিছু না ঘটলেও দুই দলের টানোপোড়েনে গোটা শহরেই তৈরি হয়েছে উত্তেজনা।কোচবিহারেই রয়েছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এদিন, প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে তৃণমূলের পতাকা লাগানো নিয়ে হুঁশিয়ারিও দেন বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, “মমতা প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানছে না। তৃণমূল কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল আটকে রেখেছে। রাজনৈতিক দলের ফান্ডামেন্টাল রাইট নষ্ট করছে তৃণমূল। জেলাশাসককে বারবার বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।”
আগামী ১১ তারিখ কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভোট দিয়ে শুরু হবে রাজ্যের প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচন৷ তাই শাসকদল হোক কিংবা বিরোধী সকলেই আপাতত পাখির চোখ করেছে উত্তরবঙ্গকেই৷ তৃণমূল এবং বিজেপির হাইভোল্টেজ ভোটের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তরে৷ ইতিমধ্যেই শিলিগুড়িতে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কোচবিহারে পরপর দু’দিন নির্বাচনী প্রচার করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এখানেই শেষ নয়৷ প্রথম দফার ভোটাভুটির আগে আরও একবার ভোটপ্রচারে কোচবিহারে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু’জনেই৷ রাসমেলা মাঠে আগামী ৭ এপ্রিল বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের সমর্থনে প্রচার সভা করবেন মোদি৷ আর তার ঠিক পরেরদিন, অর্থাৎ ৮ এপ্রিল ওই একই জায়গায় তৃণমূল প্রার্থী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর সমর্থনে জনসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷সূত্রের খবর, ৮ এপ্রিল সভার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত ওই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে তৃণমূল৷ সেই সুযোগে ইতিমধ্যেই মাঠজুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভা মঞ্চও তৈরি করে ফেলেছে তারা৷ বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যানার, পোস্টার৷ আর এখানেই আপত্তি বিজেপির৷ গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, ৬ এপ্রিলের মধ্যে মাঠজুড়ে যদি সভামঞ্চ তৈরি হয়ে যায়৷ তবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য কীভাবে মঞ্চ তৈরি করা হবে? আর সেটা বন্ধ করতে না পারলে সোমবার যখন মোদী বক্তব্য রাখবেন তখন সেই মাঠ সাজানো থাকবে ঘাসফুলের পতাকা, ব্যানারে। ইতিমধ্যে এই জটিলতা নিয়ে নির্বাচনী কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি৷ শুক্রবার বিকেলের মধ্যে মঞ্চ সরিয়ে না ফেললে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেই হুঁশিয়ারি কৈলাস বিজয়বর্গীয়র৷ যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷