#মিনাখাঁ: বিজেপির দুই কর্মীর দেহ নিয়ে নাটকের অবসান। কলকাতায় শ্মশানে দাহ করা হচ্ছে না। সন্দেশখালিতেই দুই বিজেপি কর্মীর দেহ দাহ করবেন পরিজনরা। এরইসঙ্গে আগামিকাল ১২ ঘণ্টার বসিরহাট মহকুমা বনধের ডাক দিল বিজেপি। একইসঙ্গে রাজ্যজুড়ে পালিত হবে কালা দিবস।
শনিবার সন্দেশখালিতে বিজেপি কর্মীদের মৃত্যুর পর আজ রবিবার এলাকা পরিদর্শনে যান বিজেপি নেতা-সাংসদদের ৭ জনের একটি প্রতিনিধি দল। গতকাল নিহত দু’জনের দেহ বসিরহাট হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। তার পর মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব প্রথমে নিহতদের বাড়িতে যান। সেখান থেকে দু’টি শববাহী গাড়িতে মৃতদেহ-সহ দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, অর্জুন সিংহ, লকেট চট্টোপাধ্যায়র মৃতদেহ নিয়ে কলকাতার দিকে রওয়ানা হন।
কিন্তু মালঞ্চর কাছে আসতেই পুলিশ সেই কনভয় আটকায়। আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিল র্যাফ। পুলিশ ও র্যাফ কনভয় আটকানোর চেষ্টা করতেই বিজেপি নেতা-নেত্রীরাও বলপ্রয়োগ শুরু করেন। প্রশ্ন করতে থাকেন, কেন আটকানো হচ্ছে তাঁদের? এর পরই শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। ওই পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ-র্যাফের বাধা টপকে কলকাতার দিকে এগিয়ে আসে কনভয়। এই মালঞ্চ এলাকাতেই ধস্তাধস্তির সময় বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তথা হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ দলের।
কিন্তু তার চেয়েও বড় উত্তেজনা ছড়ায় মিনাখাঁয়। মালঞ্চ মোড়ে পুলিশের বাধা পেরিয়ে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের কনভয় ও শববাহী দু’টি গাড়ি কলকাতার দিকে এগিয়ে এলেও আটকে পড়ে বামনপুকুরে। সেখানে পৌঁছতেই ফের আটকে পড়ে কনভয়। কারণ, আগে থেকেই রাস্তার উপর আড়াআড়ি ভাবে প্রিজন ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিল পুলিশ ও র্যাফ। বিজেপি নেতারা গাড়ি থেকে নেমে স্লোগান দিতে শুরু করেন। গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন দলের নেতা-নেত্রীরা। পুলিশকে প্রশ্ন করেন, কেন তাঁদের আটকানো হচ্ছে? কিন্তু সে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী-আধিকারিকরা। তবে তাঁরা সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন, কোনও ভাবেই মৃতদেহ কলকাতায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। সন্দেশখালির গ্রামেই ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে সৎকার করতে হবে দেহ দু’টি।
দেহ নিয়ে ঘণ্টা দেড়েক সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকেন বিজেপি নেতারা। কলকাতাতেই সত্কার করতে চেয়ে অনড় থাকেন। রাস্তাইতে দেহ সত্কারের হুঁশিয়ারি দেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। সাজানো হয় চিতা। পরে সিদ্ধান্ত বদল করেন তাঁরা। পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর রাহুল সিনহা জানিয়ে দেন, মৃতদের পরিজনরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। দেহের অমর্যাদা হোক, সেটা চায় না বিজেপি।
বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা জানান, আগামিকাল ১২ ঘণ্টার বসিরহাট মহকুমা বনধ পালন করবে বিজেপি। রাজ্যজুড়ে কালা দিবস পালন করব। ১২ জুন মহাধিক্কার মিছিল করা করবে। ওয়েলিংটন স্কোয়্যার থেকে লালবাজারে যাবে বিজেপি। হাজার হাজার মানুষকে ওই মিছিলে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।