আগরতলা: রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক এবং পুলিশ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টের ভিত্তিতে ত্রিপুরা পূর্ব আসনে ভোট পিছিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যের যা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তাতে সুষ্ঠু এবং স্বাভাবিক নির্বাচন সম্ভব নয়। যে কারণে, দ্বিতীয় দফায় আগামী ১৮ এপ্রিলের ভোটগ্রহণ পিছিয়ে করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল। ওই কেন্দ্রের নির্বাচন আধিকারিকরা আশঙ্কা করেছেন, গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট মতে, দুর্বৃত্তরা ভোট প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করতে পারে। যার জোরালো প্রমাণ মিলতে শুরু করেছে শেষ ৩৬ ঘণ্টাতেই।
নির্বাচন কমিশন তো রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। সেই জায়গা থেকেই যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের প্রচারপর্ব শেষ হওয়ার পরই বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক-সহ অন্যান্য নির্বাচনী আধিকারিকরা অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করেছেন। ঠিক কী কারণে?
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শেষ ৩৬ ঘণ্টায় ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে ৬টি খুনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। সংঘর্ষ অগুন্তি। জানা গিয়েছে, খুনের ঘটনাগুলি ঘটেছে লংতরাইভ্যালি মহকুমার মানিকপুরের ডেবাছড়ায়, বাইখোড়ার মংছাই মগপাড়ায়, চুরাইবাড়ির খেরেংজুরি এবং আমতলি থানার বাধারঘাট শ্রীপল্লিতে। এর মধ্যে শুধু ডেবাছড়াতেই হয়েছে তিনটি খুন।
এরই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, ত্রিপুরা পশ্চিম কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে তিক্ত অভিজ্ঞতা। ওই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি উঠলেও কমিশনের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু পূর্ব আসনে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সিপিএমের দাবিই মান্যতা পেল। পশ্চিম কেন্দ্রের বিশৃঙ্খলা দেখার পরই সিপিএম ওই কেন্দ্রের পুনর্নির্বাচনের পাশাপাশি পূর্ব কেন্দ্রে সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোটের দাবি তুলে আসছিল।
ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে পুলিশের ডিজির সঙ্গে দেখা করে সিপিএমের একটি প্রতিনিধি দল। দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক গৌতম দাশ, পূর্ব কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী জিতেন্দ্র চৌধুরী এবং রাজ্য কমিটির সদস্য মানিক দে ডিজির সঙ্গে বৈঠকে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটের দাবি জানান। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক তরণীকান্তি রায় ভোটগ্রহণ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ঠিক একই দাবি তুলেছিল কংগ্রেসও। যে কারণে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে খুশি সিপিএম-কংগ্রেস।