Site icon The News Nest

৭ যুবতী মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সঙ্গমের অভিযোগ, ডোমের সহযোগী গ্রেপ্তার

morgue

মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সঙ্গমের ঘটনার কথা বেনজির নয় নিশ্চয়, তবে তা আকছার ঘটে এমনও নয়। এবার সেই ঘটনাই ঘটল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে। সেখানে যুবতীদের মৃতদেহের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল সহকারী ডোম মুন্না ভগত (২০)। তাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি (CID)।

লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, ছিল না ধর্ষণের লক্ষণও। অথচ সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডাক্তারের পাঠানো প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াবে (এইচভিএস) ’ পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি। অনুসন্ধানে জানা গেলো, মরদেহগুলো মর্গে আসার পর সেগুলোর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করেছিলেন ডোমের সহযোগী মুন্না ভক্ত (২০)।

আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ হল পর্নহাব, প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ থাইল্যান্ডবাসীদের

মুন্না ভক্তকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ শুক্রবার ঘটনাটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তারা। মুন্নার বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের জুরান মোল্লার পাড়ায়। তিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের কোনো কর্মচারী নন। হাসপাতালের ডোম শ্রী যতন কুমারের ভাগনে হওয়ার সুবাদে তিনি সেখানে কাজ করত।

মর্গের চাবি তার কাছে থাকত। মর্গে আসা মরদেহগুলো সে গ্রহণ করত, ময়নাতদন্তের সময় ডাক্তারদের সাহায্য করত এবং ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো স্বজনদের বুঝিয়ে দিত।

সিআইডি বলছে, গত বছরের ২৯ মার্চ থেকে চলতি বছরের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মুন্না অন্তত পাঁচজন মৃত কিশোরীর লাশ ধর্ষণ করেছেন বলে তারা প্রমাণ পেয়েছে। মৃত এই কিশোরীদের বয়স ছিল ১১ থেকে ১৭ বছর। আত্মহত্যার পর তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছিল।

শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলায় সিআইডির পরিদর্শক মো. জেহাদ হোসেন বলেছেন, মৃত্যুর আগে ওই কিশোরীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল কি না, তা জানতে ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস) ’ সিআইডির ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছিলেন। পরীক্ষায় এই এইচভিএসগুলোতে পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। শুক্রাণুর ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিং করে সেটি একই ব্যক্তির বলে নিশ্চিত হন পরীক্ষকেরা।

মরদেহগুলোর সুরতহালে বলপ্রয়োগজনিত কোনো আঘাতের চিহ্ন বা ধর্ষণের চিহ্নের কথা উল্লেখ ছিল না। এই পাঁচ তরুণীর লাশই যেদিন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, তার পরদিন ময়নাতদন্ত করা হয়।

প্রথম আলোকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় জেহাদ হোসেন বলেন, যেহেতু লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, তাই তরুণীদের লাশ হাসপাতালে আসার পর কিছু একটা ঘটেছে বলে তাঁরা ধরে নেন। তখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডোম ও তাঁর সহযোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। বিষয়টি টের পেয়ে মুন্না হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।পরে বাবুবাজার সেতু থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সেলিম রেজা বলেন, ছেলেটা মানসিকভাবে অসুস্থ। কোনো সুস্থ ব্যক্তির দ্বারা এটা সম্ভব না। এই যৌন বিকৃতিকে নেক্রোফিলিয়া বলা হয়। তিনি আরও বলেন, কোনও প্রশিক্ষিত ‘মর্চুয়ারি অ্যাসিসটেন্ট’ এখানে নেই। বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে না। ব্রিটিশ আমল থেকে যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরাই বংশগতভাবে এটি করে যাচ্ছেন। এ কারণে যিনি ডোম হিসেবে নিয়োগ পান, তিনিই তাঁর সহযোগী হিসেবে আত্মীয়স্বজনের কয়েকজনকে নিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন: ২৬/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদের ১০ বছরের জেল

Exit mobile version