কাশ্মীরের (Kashmir) রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ব্রিটেনের এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী নাইজেল অ্যাডমস। জানালেন, ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। তবে এটাও তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। তাই এ নিয়ে মধ্যস্থতার পথে হাঁটবে না বরিস সরকার।
বিদেশনীতি অত্যন্ত গুরুত্ত্বপুর্ণ বিষয়। নোট বাতিলের মত তা রাতারাতি বদলে ফেলা যায় না। ভারত এতদিন পর্যন্ত যেভাবে বিদেশনীতি পরিচালনা করেছে বিজেপি সরকারে আসার পর তা ধাক্কা খায়। মোদীর অতিরিক্ত ট্রাম্প প্রীতি ভারতের বৈদেশিক নীতিতে আঘাত হেনেছে বলে অনেকের ধারণা।
এই ট্রাম্প প্রীতিকে মার্কিন প্রীতির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। আসলে ট্রাম্পের মুসলিম বিরোধী মন্তব্য, আরএসএস নেতা ও বিজেপি নেতাদের খুব মনে ধরে। তা না হলে সেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই তো আছে। তাহলে বিজেপি নেতাদের আর তেমন উৎসাহ নেই কেন ? এ প্রশ্ন রাজনীতি সচেতন মানুষের।
আরও পড়ুন: ‘ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে, আপাতত আমরাই খাওয়াব’ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে মমতা
নাইজেল অ্যাডমস আরও জানান, “জম্মু ও কাশ্মীর ব্রিটেনের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের আটক এবং সেখানকার বিধিনিষেধ নিয়ে ভারত সরকারের কাছে আমরা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব ভারত সফরে নয়াদিল্লির প্রতিনিধির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।” স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটেনের মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে দিল্লি। তাঁদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে ব্রিটেনের বিদেশনীতি বিষয়ক পরামর্শদাতাদের একটি রিপোর্ট।
ওই রিপোর্টে ভারতকে চিন, সৌদি আরব ও তুরস্কের সঙ্গে ‘ডিফিকাল্ট ফোর’ গোষ্ঠীতে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে রিপোর্টে ওই কূটনীতিবিদরা বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতির জেরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অর্থাৎ মুসলিম, খ্রিস্টানরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছে।
ওই রিপোর্টে ভারতকে চিন, সৌদি আরব ও তুরস্কের সঙ্গে ‘ডিফিকাল্ট ফোর’ গোষ্ঠীতে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে রিপোর্টে ওই কূটনীতিবিদরা বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতির জেরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অর্থাৎ মুসলিম, খ্রিস্টানরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ভারতের হাই কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, “ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশের পার্লামেন্টে আলোচনা করা হোক, তা মোটেই পছন্দ করে না নয়াদিল্লি। ভারত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও ভুয়ো তথ্য এড়ানোর জন্য ব্রিটেন সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে হাই কমিশন।”
প্রাক্তন কূটনীতিবিশেষজ্ঞদের কারও কারও মতে মোদী জমানায় দেশে যে বিদ্বেষের বাতাবরণ তৈরী হয়েছে,তাকে উন্নত বিশ্ব ভালোভাবে নিচ্ছে না। ভারত চিরদিন গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষ বৈচিত্রময় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করেছে। বিশ্বকে দেখিয়েছে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য কাকে বলে। আজ সেই ভারতে হিন্দুত্বের নাম করে বিশেষ ধরণের বিদ্বেষ সংস্কৃতি চাপিয়ে দেবার চেষ্টা হচ্ছে। যা সার্বিকভাবে ভারতের ক্ষতি করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্টের আত্মমর্যাদাকে তাঁর দেশের সচেতন নাগরিকদের সামনে ক্ষুন্ন করছেন, মোদীও অনেকটা তেমনই করেছেন। এমনটাই বিজেপি বিরোধীদের দাবি। তাদের বক্তব্য গণতন্ত্রে ভোটার গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভোটারকে যখন ভক্ত বানিয়ে ফেলা হয় তখন তার ভিতর দিয়ে বের হয়ে আসে একনায়কতান্ত্রিকতা।
আরও পড়ুন: প্রকাশিত হল গোপন নথি, আমেরিকার ভরসায় চিনের সঙ্গে ‘পাঙ্গা’ নিতে চেয়েছিল মোদী সরকার