effective homemade pesticide to protect your plants

শখের গাছকে পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন ঘরোয়া কীটনাশক

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

এখনকার দিনে অনেকেই বাগান করতে আগ্রহী। অত বড় না হোক, ছোটই সই। বেলকনিতে, ছাদ, বারান্দা ছাড়াও অনেকে এখন ইনডোর প্ল্যান্টও লাগিয়ে থাকেন। তো এই গাছ লাগিয়ে সার আর পানি দিলেই শুধু হয়ে যায় না, খেয়াল রাখতে হয় পিঁপড়া ও পোকামাকড়ের দিকেও। দুই-চারটা গাছ লাগাতেই দেখা যায় পিঁপড়ে, শুঁয়োপোকা, জাব পোকা, মিলিবাগ, ছোট শামুক এসবের অাক্রমন। ফলে গাছ যায় মরে, তখন মন খারাপ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় থাকে না। আর এই গাছ লাগানোর ইচ্ছেটাও যায় মরে। সঠিক দমন ব্যবস্থা কিংবা পরিচর্যা জানা না থাকার কারনে শখের গাছ টিকিয়ে রাখতে পারেন না অনেকেই। আবার কীটনাশকের ক্ষতির কথা ভেবে এসব রাসায়নিক পদার্থও ব্যবহার করতে চান না।

তাই আপনাদের জন্য রইলো কিছু ঘরোয়া উপায়। বাসায় থাকা উপাদানগুলোকে ব্যবহার করতে পারেন কীটনাশক হিসেবে, যা পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করবে আপনার শখের গাছটিকে। বাগানে পোকার আক্রমন দমনের দশটি ঘরোয়া উপায়ঃ

১. লেবু

গাছে পোকা-মাকড় বা পিঁপড়ার আক্রমন কমাতে গাছের পাতা ও ডালে দুই-তিন দিন পরপর লেবুর রসের সাথে জল মিশিয়ে স্প্রে করুন। যদি পোকা বা পিঁপড়া গাছে আক্রমন করে ফেলে, সেক্ষেত্রে আক্রমন স্থলে প্রতিদিন লেবুর রসের সাথে জল মিশিয়ে স্প্রে করুন। লেবুর খোসা ব্লেন্ড করে বা শুকিয়ে টবে বা গাছের গোড়ার মাটিতে ফেলে রাখলেও পিঁপড়ার আক্রমন কম হয়।

২. ডিটারজেন্ট

পাতা খাওয়া পোকা-মাকড়, শুঁয়োপোকা এসব থেকে গাছকে রক্ষা করতে সামান্য জলে ডিটারজেন্ট ভালোভাবে গুলিয়ে নিয়ে গাছের পাতায় স্প্রে করুন। সম্ভব হলে বিকেলের দিকে গাছে ডিটারজেন্ট জল স্প্রে করুন। অনেক সময় সূর্যের আলোতে ডিটারজেন্ট জল দিলে তা পাতার ক্ষতি করে। বিকেলে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জল স্প্রে করে পরদিন সকালে রোদ ওঠার আগেই স্বাভাবিক জল দিয়ে গাছের পাতা পরিষ্কার করে নিন। পোকার আক্রমন বেশি হলে সপ্তাহে দুইবার আর কম হলে সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। এছাড়া ঢাকনা ছাড়া প্লাস্টিকের বক্স বা বোতলে ডিটারজেন্ট-জল গুলিয়ে সেটি গাছে ঝুলিয়ে রাখুন। পোকামাকড় দূরে থাকবে।

৩. ছাই

গাছের গোড়ায় কিছুদিন পরপর ছাই দিন। ছাই এক ধরনের প্রাকৃতিক কীটনাশক। এটি জাব পোকার বড় শত্রু। মাসে অন্তত দুইবার গাছের পাতায় ছাই ছিটিয়ে দিন। পোকার আক্রমন কমে যাবে। ছাইয়ের সাথে শুকনো গোবর রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে মিশিয়ে নিতে পারলে আরো ভালো হয়। নারকেলের ছোবড়া পোড়ানো ছাই বা কাঠ পোড়ানো ছাই গাছের জন্য খুবই ভালো।

৪. নিম

বাগানে লাগানো গাছের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে মিলিবাগ। খুব দ্রুতই এটি ছড়িয়ে যেতে পারে পুরো বাগানে। গাছকে মিলিবাগ মুক্ত রাখতে নিমের তেল স্প্রে করুন। নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে তা গাছের গোড়ায় দিয়ে রাখুন। জলে নিম পাতা ও কাঁচা রসুন একসাথে জ্বাল দিয়ে সেই জল গাছে স্প্রে করলেও তা কীটনাশকের কাজ দেবে। সূর্যের আলোতে নিম এবং এর তৈরি কীটনাশক কম কাজ করে। তাই সন্ধ্যার পরে গাছে নিম প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন: ইনডোর প্লান্টে কতটুকু আলো ও জল দেওয়া দরকার? জানুন বিস্তারিত

৫. লবণ

এমনিতে লবণ গাছে প্রয়োগ করলে গাছের ক্ষতি হয়। তবে পরিমিত পরিমানে ব্যবহার করলে তা কীটনাশকের কাজে দেয়। অনেক সময়ই টবের মাটিতে বা গাছের গোড়ায় খুব ছোট ছোট শামুক দেখা যায়। এই শামুক দূর করতে লবণ জল স্প্রে করুন। এছাড়াও টবের আগাছা দূর করতে পারে লবণ। এক মুঠো লবণ নিয়ে আগাছার উপর ছড়িয়ে দিন। কিছুক্ষন পর দেখবেন সহজেই সেগুলো টেনে তোলা যাচ্ছে। সেই স্থানে আগাছাও পরবর্তীতে কম জন্মাবে।

৬. রাবিং অ্যালকোহল

হয়ত ভাবছেন রাবিং অ্যালকোহল কিভাবে কীটনাশক হয়। হ্যা রাবিং অ্যালকোহলকেও কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। তবে এটি ব্যবহার করলে অনেক সময় গাছ মরে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রথমেই অল্প পরিমানে রাবিং অ্যালকোহল নিয়ে তা সমপরিমান পানির সাথে মিশিয়ে গাছের গোড়ার দিকের কয়েকটি পাতায় স্প্রে করে দেখুন। যদি পাতার কোনো ক্ষতি বা পরিবর্তান না ঘটে তাহলে সমপরিমান রাবিং অ্যালকোহল ও জল মিশিয়ে গাছে স্প্রে করুন নিশ্চিন্তে।

৭. সাদা ভিনেগার

পোকা-মাকড়ের পাশাপাশি আগাছাও গাছপালার জন্য খুবই ক্ষতিকর। গাছের জন্য ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের বেশিরভাগেরই জন্ম হয় আগাছাতে। যদি বাগানকে পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচাতে চান, তাহলে যতটা সম্ভব বাগান থেকে বা টব থেকে আগাছা তুলে ফেলুন। আগাছা দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন সাদা ভিনেগার। যেসব আগাছা মেরে ফেলতে চান সেগুলোর ওপর সাদা ভিনেগার স্প্রে করলেই কাজ হয়ে যাবে। বাগানে আগাছা কমলে পোকার আনাগোনাও কমে যাবে।

৮. বেকিং সোডা

ভাবছেন বেকিং সোডা তো রান্নার উপাদান, এখানে কি করছে? আপনার গাছগুলোকে ফাঙ্গাস ও ফাঙ্গাসের মাধ্যমে সংঘটিত রোগবালাই থেকে দূরে রাখতে চাইলে বেকিং সোডাই সর্বোত্তম সমাধান। কিভাবে জানতে চান? প্রথমেই বেকিং সোডার সাথে ডিশ সোপ গুলিয়ে নিন। এবারে এটি জলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এই তরলটি মাসে অন্তত দুইবার গাছে স্প্রে করুন। ফাঙ্গাস গাছের ধারেকাছেও আসবে না।

৯. হলুদ গুড়ো

টবের একপাশে একটুখানি হলুদ গুড়ো দিয়ে রাখুন। পোকামাকড় আসবে না ধারেকাছেও। পোকার আক্রমন বেড়ে গেলে হলুদ গুড়ো জলেতে মিশিয়ে স্প্রে করে দিন। চাইলে হালকা করে হলুদ গুড়ো পাতার উপরেও ছিটিয়ে দিতে পারেন। এটি যে কোনো পোকা দমনেই সহায়তা করবে। মরিচের গুড়োও একই কাজ করে।

১০. জল

অনেকেই ভাবছেন হয়ত জল কি করে পোকা দমন করবে? তাই তো? কিছু কিছু পোকা আছে যারা একবার গাছ থেকে মাটিতে পরে গেলে আর উঠতে পারে না। জাবপোকা, অ্যাফিড পোকা সেইসব পোকাদের মধ্যে অন্যতম। এদের জন্য জলই কীটনাশকের কাজ করে। আমরা সাধারনত জল দিই গাছের গোড়ায়। আর এরা থাকে পাতায়, কান্ডে কিংবা ডালে। তাই এসব পোকা দূর করতে গাছের পাতায়, কান্ডে, ডালে, ফুলে নিয়মিত জলস্প্রে করুন। সপ্তাহে চার-পাঁচবার ভালোভাবে জল স্প্রে করলেই এসব পোকা চলে যাবে। সেইসাথে কমবে পিঁপড়ের উপদ্রবও।

আরও পড়ুন: ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ লঙ্কাজবা ফুলের গাছ লাগাতে পারবেন টবেই, জেনে নিন পদ্ধতি

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest