আমদাবাদ: রাজ্যসভা ভোটের আগে এবার বিজেপির দুর্গ গুজরাতেও কংগ্রেসের শিবিরে মহাসংকট দেখা দিচ্ছে। রাজ্যসভা নির্বাচন যখন শিয়রে, ঠিক সেইসময় রাজ্য বিধানসভা থেকে কংগ্রেসের পাঁচ বিধায়ক ইস্তফা দিলেন। রবিবার স্পিকার রাজেন্দ্র সূর্যপ্রসাদ ত্রিবেদীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন তাঁরা। যদিও এই পদত্যাগের কথা স্বীকার করেনি কংগ্রেস।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছাড়ার পর থেকেই মধ্যপ্রদেশে দল বদলের তাড়াহুড়ো শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পাশাবদলের খেলায় পিছিয়ে নেই গুজরাতও। রবিবার সকালে চার বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার পরে জল্পনা চলছিল, দুপুর গড়াতেই আরও একজন ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মার্চ মাসের ২৬ তারিখ গুজরাতে রাজ্যসভা নির্বাচন।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্ক! ব্যালটে পুরভোট আয়োজন করতে চায় নির্বাচন কমিশন
এদিন সকালে চারজন কংগ্রেস বিধায়ক গুজরাত বিধানসভার স্পিকারের কাছে তাঁদের ইস্তফাপত্র জমা করেছেন। যে চারজন বিধায়ক ইস্তফা জমা করেছেন তাঁদের নাম-মঙ্গল গভিত, জেভি কাকাডীয়া, সোমাভাই পটেল, প্রদ্যুমান জাদেজা এবং সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রবীন মারো’র ইস্তফাপত্র মিলিয়ে মোট পাঁচজন এখনও অবধি ইস্তফা দিয়েছেন।যখন কংগ্রেস ১৪ জন বিধায়কের প্রথম দলকে জয়পুরে নিয়ে গিয়েছেন সেইসময় থেকেই মিসিং ছিলেন প্রথম চার বিধায়ক। যদিও কংগ্রেস বিধায়ক ভিরজিভাই ঠুম্মর ইস্তফাপত্রের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। সোমাভাই পটেল দলের সঙ্গে শনিবার অবধি যোগাযোগে ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে দলীয় সুত্রে।
মধ্যপ্রদেশে সরকার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও গুজরাতে তা নেই। কিন্তু এই চার বিধায়কের ইস্তফার পিছনে অন্য কারণ দেখছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, আগামী ২৬ মার্চ রাজ্যসভার ভোট। গুজরাত থেকে তিনটি আসন ফাঁকা হচ্ছে এবার। অনেকের বক্তব্য তা নিয়েই যত মারপ্যাঁচ।বিজেপি ওই তিন আসনে প্রার্থী দিয়েছে। গেরুয়া শিবির প্রার্থী করেছে অভয় ভরদ্বাজ, রমিলা বরা এবং নরহরি আমিনকে। কিন্তু তৃতীয় আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেসও। শক্তি সিন গোহিলকে প্রার্থী করেছে সাবেকদল। অনেকের বক্তব্য তৃতীয় আসনে ‘ক্রস ভোটিং’ ঠেকাতেই বিজেপি পিছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে। যদিও চার বিধায়কের ইস্তফাকে গুজরাত কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কলহ বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপকে ‘বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করল কেন্দ্র, মৃত্যুতে পরিবারকে ৪ লাখ ক্ষতিপূরণ
ঘোড়া কেনাবেচা হতে পারে বুঝে আগেই ১৪জন বিধায়ককে জয়পুরের রিসর্টে পাঠিয়ে দিয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু তাও ঠেকানো গেল না। গুজরাতের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তুলেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলৌত। তিনি গুজরাত থেকে দলীয় বিধায়কদের স্থানান্তরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানান, “এর আগে মহারাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রদেশ থেকেও কংগ্রেস বিধায়কদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। এটা বিজেপির ঘোড়া কেনাবেচার রাজনীতির জের”।গুজরাত বিধানসভায় মোট আসন মোট আসন ১৮২। গতবার বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস জিতেছিল ৭৩টি আসন। চার বিধায়কের ইস্তফার পর কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়াল ৬৯-এ। ফলে তৃতীয় আসনে বিজেপি প্রার্থীর জয় প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।
(আপনার আশপাশের পরিবর্তনের অংশ হতে চান? আমাদের খবর পাঠান ইমেল্ ও হোয়াটআপের মাধ্যমে)