নয়াদিল্লি: দিল্লির লোক নায়ক হাসপাতালের পর এবার প্লাজমা থেরাপির পথে হাঁটতে চলেছে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকাল সায়েন্সেস। সোমবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তবলিঘি জামাতের ৩০০ জন সদস্যের প্লাজমা সংগ্রহের কাজ। সুলতানপুরী এবং নারেলার দুটি কোভিড কেয়ার সেন্টারে শুরু হয়েছে এই কাজ। সোমবারই ২৫ জনের প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
করোনাকে কুপোকাত করে যাঁরা জয়ী হয়েছেন। রবিবার তাঁদের কাছে রক্তের প্লাজমা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। করোনামুক্ত তবলিঘি জামাত সদস্যদের কাছে একই অনুরোধ করেছিলেন এই সংস্থার প্রধান মৌলানা সাদ। তাতে সাড়া দিয়ে রক্তের প্লাজমা দান করার আবেদন জানালেন তবলিঘি জামাতের ৩০০ জন সদস্য। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে সাধুবাদ জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।
রবিবার অরবিন্দ কেজরিওয়াল অনুরোধ করেছিলেন, ‘যাঁরা করোনাকে হারিয়েছেন তাঁরা এগিয়ে আসুন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা রোগীদের চিকিৎসার জন্য রক্তের প্লাজমা দান করুন। আমরা সবাই করোনা ভাইরাসের ফলে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চাইছি। যদি আগামীকাল একজন হিন্দু রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকে, তাহলে কে জানে যে তিনি একজন মুসলিমের দেওয়া প্লাজমা থেকে সুস্থ হবেন না। অথবা যদি একজন মুসলিম রোগী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় থাকেন তাহলে তাঁকে হয়তো সুস্থ বাঁচাবেন কোনও হিন্দু।’ এরপরই সুস্থ হওয়া তবলিঘি সদস্যরা রক্তের নমুনা দেন। তারপর নারেলা এলাকা থেকে ১৯০, সুলতানপুর থেকে ৫১ ও মানগোলি এলাকার ৪২ জনের শরীর থেকে প্লাজমা নেওয়া যাবে বলে জানান চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: আর্থিক অচলাবস্থা কাটাতে ধনীদের ওপর কর চাপানোর প্রস্তাব, তিন অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন্দ্রের
কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপিতে রক্তের প্লাজমা ব্যবহার করা হয় যাতে ভাইরাস ফাইটিং অ্যান্টিবডি রয়েছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীর থেকেই প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। সেই দিয়েই চিকিত্সা করা হয় গুরুতর কোভিড রোগীদের।
AIIMS-এর মেডিকাল সুপার ডা ডি কে শর্মা জানিয়েছেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন দাতার থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করেছি। এবার আমরা উপযুক্ত গ্রহিতার খোঁজে রয়েছি। এমন এক রোগীর প্রয়োজন যিনি ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে রয়েছেন, অথচ প্লাজমা থেরাপি সহ্য করতে পারবেন।’ যাঁদের রেসপিরেটরি রেট ৩০-এর বেশি (২০ স্বাভাবিক) এবং অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০ শতাংশের কম (৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ)স্বাভাবিক অথবা ফুসফুসে পাস জমেছে তাঁদেরই প্লাজমা থেরাপি করা হয়। যে সব রোগীর অবস্থা খুবই গুরুতর তাঁদের রাখা হয়েছে AIIMS-এর ট্রমা সেন্টারে। ভ্যাকসিন এবং ওষুধের অভাবে প্লাজমা থেরাপি দিয়েই চিকিত্সা চালানোর পথে এগিয়েছেন এদেশের ডাক্তাররা। এখনও পর্যন্ত, লোক নায়ক হাসপাতালে ৬ জন রোগীর প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কের মধ্যেই ৫০ জন ঋণখেলাপির ৬৮ হাজার কোটি মকুব! তালিকায় রামদেব-মেহুল চোকসি