নয়াদিল্লি :পাঁচটি স্তম্ভের ওপর আত্মনির্ভর ভারত গড়তে হবে বলে মোদীর সুরেই সুর মেলালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ধাপে ধাপে আর্থিক প্যাকেজের বিস্তারিত তথ্য জানান হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য অর্থনীতি, পরিকাঠামো, প্রযুক্তির সাহায্যে চালানো প্রক্রিয়া, ডেমোগ্রাফি ও চাহিদার ওপর জোর দিতে হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ২০১৪-১৯ সালের মধ্যে জনধন-আধার-মোবাইল (জ্যাম) সংস্কার এখন কাজে আসছে বলে জানান নির্মলা সীতারামন। একই সঙ্গে বিভিন্ন সেক্টরে গত ছয় বছরে কী কী সংস্থার করেছে মোদী সরকার, তাও জানান নির্মলা সীতারামন।
নির্মলা জানান তিনি আগামী কয়েকদিন তিনি রোজ সাংবাদিক সম্মেলন করবেন, যেখানে তিনি বিস্তারিত ভাবে জানাবেন কোন খাতে টাকা দেওয়া হবে।ছোটো ব্যবসায়ীদের জন্য তিন লক্ষ কোটি টাকার লোন দেবে সরকার। ১০০ শতাংশ ক্রেডিট গ্যারান্টি দেবে সরকার। এর দ্বারা ৪৫ লক্ষ ব্যবসাকে সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিন ১৫টি ভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান তিনি। এর মধ্যে ছয়টি ক্ষুদ্র, ছোটো ও মধ্য সংস্থার জন্য, দুটি ইপিএফের জন্য, দুটি এনবিএফসি ও এমএফআই-এর জন্য ও একটি করে ডিসকম, কন্ট্রাক্টর ও রিয়োল এস্টেটের জন্য ও তিনটি কর প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ঘোষণা।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের প্যাকেজ বিভ্রান্তিকর, অশ্বডিম্ব, দুর্দিনে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হল! তোপ মমতার
চার বছরের জন্য লোন নেওয়া যাবে। এর মধ্যে আসলের ওপর একবছর সুদ দিতে হবে না। সুদের হারের ঊর্ধ্বসীমা থাকবে। ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসি গুলি সম্পূর্ণ ঋণ গ্যারান্টি দেওয়া হবে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে লোন নিতে হবে। ১০০ কোটি টাকার কম টার্নওভারের এমএসএমই-দের এই সুযোগ দেওয়া হবে।
যে সব এমএসএমই আর্থিক ভাবে দুর্বল, তাদের জন্য কুড়ি হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়ার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। একই সঙ্গে যে সব এমএসএমই ভালো ব্যবসা করছে, তাদের জন্যেও ৫০,০০০ কোটি টাকা ফান্ডে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্মলা।
কোনটা ক্ষুদ্র, কোনটা ছোটো ও কোনটা মধ্য আকারের ব্যবসা, সেই সংজ্ঞা বদলাল কেন্দ্র। ইনভেস্টমেন্ট ও টার্নওভারের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
২০০ কোটি টাকা অবধি ব্যবসার জন্য গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে না। এখানে ভারতের এমএসএমই দের লাভ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ই-মার্কেট লিংকেজ করে এমএসএমইদের আরও বিশ্ববাজারে তুলে ধরার ওপর জোর দেন অর্থমন্ত্রী।
আরও তিন মাসের জন্য ছোটো সংস্থাগুলির জন্য ইপিএফ-এর টাকা দিয়ে দেবে কেন্দ্র। এর জন্য মোট ২৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে, লাভবান হবেন প্রায় ৭২.২২ লক্ষ কর্মী, ৩.৬৭ লক্ষ সংস্থায়।
যে সব সংস্থা এই ওপরের স্কিমের আওতায় নেই, তাদের জন্য আগামী তিন মাস দশ শতাংশ করে ইপিএফ দিলেই চলবে।কর্মীদেরও দশ শতাংশ করে দিতে হবে। তবে সরকারি সংস্থাগুলি ১২ শতাংশ করেই ইপিএফ দেবে। দুই শতাংশ করে কম টাকা দিয়ে ৬৭৫০ কোটি টাকা বাঁচাতে পারবে সংস্থা ও কর্মীরা।
তিরিশ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থের জোগান দেওয়া হবে এনবিএফসিদের। ৪৫, ০০০ কোটি টাকার আংশিক ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম থাকবে এনবিএফসিদের জন্য।
বিদ্যুৎ সংস্থাদের অতিরিক্ত ৯০ হাজার কোটি টাকার জোগান দেওয়া হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
মাইনে ছাড়া অন্যান্য খাতে পাওয়া অর্থের ওপর টিডিএস কমল ২৫ শতাংশ। নির্মলা জানান যে এটি লাগু হবে কন্ট্র্যাক্ট, প্রফেশনাল ফিজ, ডিভিডেন্ড, কমিশন ও ব্রোকারেজ ইনকাম। সম্পূর্ণ ২০২০-২১ সালের জন্যে এই নিয়ম বহাল থাকবে।
নির্মলা সীতারামন বলেন যে ২০১৯-২০ সালের অর্থবর্ষের ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভরলেই হবে। যে সব ট্যাক্স অডিট করার কথা ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর, সেগুলিকে ৩১ অক্টোবর অবধি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চ্যারিটেবেল ট্রাস্ট ও নন কর্পোরেট বিজনেসদের দ্রুত ট্যাক্স রিফান্ড দিতে বলেছে কেন্দ্র। একই সঙ্গে বিবাদ সে বিশ্বাস স্কিমের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর অবধি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘আত্মনির্ভর’ প্যাকেজে প্রথম বড় ঘোষণা নির্মলার, দেখে নিন কি কি রয়েছে তাতে