কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ১,০২,৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করল নবান্ন। শনিবার আমফান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সেখানেই এই বিপুল অর্থ দাবি করা হয়। ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলায় ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গকে ১,০০০ কোটি টাকা সাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আমফান পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আকাশপথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই সময় তিনি রাজ্যের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করেন।
আরও পড়ুন: দলে থেকে আজেবাজে বকা যাবে না,বৈঠকে দলকে কড়া বার্তা মমতার
শুরু থেকেই নবান্নের তরফে জানানো হয়েছিল, আমফানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দুই ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। নবান্নের তরফে স্পষ্টই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় নগন্য।
এর পরেই কেন্দ্রীয় দল আসে রাজ্যে। সাত সদস্যের আন্তঃমন্ত্রক ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অনুজ শর্মা। এ ছাড়াও ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের অধিকর্তা নরেন্দ্র কুমার। দলে মৎস্য চাষ দফতর, শক্তি মন্ত্রক এবং পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
রাজ্যের পেশ করা হিসাব অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে ঝড়ে ২৮,৫৬,০০০ বাড়ি ভেঙেছে। যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২৮,৫৬০ কোটি টাকা। মোট ১৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে কৃষিতে ১৫,৮৬০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। এছাড়া উদ্যান পালন বিভাগে মোট ২,৫০,৫৫৬ হেক্টর জমিতে আম, লিচু, পান ইত্যাদি চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের প্রায় ৮,০০০ নৌকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা বয়েছে।
এছাড়া রাজ্যে ২১,২২,০০০ গবাদি পশু মারা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে নবান্নের তরফে। মোট ১,৫৮,০০০ হেক্টর জমির বনভূমি নষ্ট হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ১৪,৬৪০টি স্কুল বাড়ির। ১২,৬৭৮টি আইসিডিএস কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ৩০১টি কলেজ ভবনের ক্ষতি হয়েছে। ২৪৫ কিলোমিটার নদীবাঁধ ও ৪ কিলোমিটার সমুদ্র বাঁধ ভেঙেছে।
সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ১ লাখ ২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকার— দাবি নবান্নের।নবান্নের দেওয়া এই রিপোর্ট সোমবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পেশ করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান অনুজ শর্মা।
আরও পড়ুন: করোনায় রাজ্যে এক দিনে মৃত্যু ১৭ জনের, নতুন করে আক্রান্ত ৪৩৫