বেঁচে থাকলে এদিন তাঁর বয়স হতো ৮৭। তিনি অর্থাৎ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। কবি হিসেবে খ্যাতির চূড়ায় থাকাকালীন আত্মপ্রকাশ উপন্যাস এবং ছোট গল্পের দুনিয়ায়। কিশোর সাহিত্যের ময়দানেও এসেছিলেন, দেখেছিলেন এবং জয় করেছিলেন। লিখেছেন অজস্র প্রবন্ধ থেকে শুরু করে নাটকও। ৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার তাঁর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। তাঁর বিপুল সাহিত্যকীর্তি থেকে সেরা কয়েকটি কাজের দিকে ফিরে দেখা যাক।
ঔপন্যাসিক হিসেবে তর্কাতীতভাবে সুনীলের সেরা কাজ। সময়কে নায়ক করে ‘প্রথম আলো’ এক ঐতিহাসিক উপন্যাস। ১৮৮৩ সাল থেকে ১৯০৭ পর্যন্ত সময়কাল বিস্তৃত এই উপন্যাসের পাতায় পাতায়। সুনীল নিজেই জানিয়েছিলেন পূর্বকল্পিত কোনও ছক ছিল না এই লেখার আগে।
সুনীলের অন্যতম সেরা কাজ এই উপন্যাস। নিজেই জানিয়েছিলেন ‘সেই সময়’ তাঁর সব থেকে উচ্চাকাঙ্খী উপন্যাস। বাংলায় নবজাগরণের সময়কাল এই উপন্যাসের পরতে পরতে তুলে ধরেছেন সুনীল। বাঙালি জাতির আত্ম পরিচয় খোঁজার ঘটনাকাল নিয়েই ‘সেই সময়’ লিখেছিলেন সুনীল।
দেশবিভাগ হওয়ার বিচ্ছেদ বেদনা রয়ে গেছে দু’ পারের বাংলার মানুষদের মধ্যে। সু’দিকের বাংলার ইতিহাসের মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে এই কাহিনী .বিশ্বের পূর্ব গোলার্ধ থেকে পশ্চিম গোলার্ধে ছড়িয়েছে, ছুঁয়েছে এই বিরহ। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। দেশ, সময় আলাদা হলেও টান যে আলাদা হয় না তাও ফুটে উঠেছে উপন্যাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে। মানুষের মনের মশয়েও অভ্যুত্থান এবং পতনের বিভিন্ন পালা ক্রমাগতভাবে চলার কথাও উপন্যাসের মর্মে ফুটিয়ে তুলেছিলেন লেখক।
আরও পড়ুন: দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের আজ জন্মদিন, জানুন কবির না জানা বহু কথা
এই উপন্যাসের শুরু বিশ্বযুদ্ধের দু’এক বছর আগে। রয়েছে ভারতের দুর্ভিক্ষ, ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম দাঙ্গা এবং ভারত বিভাগের পর স্বাধীনতার ঘটনা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই স্মরণীয় উপন্যাসে রয়েছে সেই সময়ের নানান কথার পাশাপাশি মানুষের এক বিরাট মিছিল।
কবিতা ছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচয় অসম্পূর্ণ। সুনীল নিজেই বলতেন উনি মনেপ্রাণে কবি। তাঁর অসংখ্য এবং ‘মাস্টারপিস’ কবিতার মধ্যেও সবথেকে চর্চিত সম্ভবত ‘নীরা’-কে নিয়ে লেখা তাঁর কবিতাগুচ্ছ। জীবনানন্দ দাসের যেমন বনলতা সেন, সুনীলের তেমন ‘নীরা’। এক কল্পিত নারীকে কেন্দ্র করে সুনীলের লেখা এইসব কবিতা চিরন্তন ঠাঁই পেয়েছে বাংলা সাহিত্যপ্রেমীদের হৃদয়ে।
আরও পড়ুন: বাঙালিকে শিরদাঁড়া সোজা করতে চলতে শিখিয়েছিলেন কবি নজরুল