নয়াদিল্লি: নিজের থেকে আয়কর বৃদ্ধির সওয়াল করে রিপোর্ট প্রস্তুত করে সেটি জনসমক্ষে প্রকাশ করার জন্য কেন্দ্রের কোপে পড়েছে ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (আইআরএসএ)। সেই রিপোর্ট তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য এবার তিন উচ্চপদস্থ রেভিনিউ সার্ভিসের আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল সেন্ট্রাল বোর্ড ডিরেক্ট ট্যাক্স। নিয়মবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করার পাশাপাশি তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেই খবরে সিলমোহর দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, ‘ওই তিন উচ্চপদস্থ আধিকারিক – প্রশান্ত ভূষণ (১৯৮৮ সালের ব্যাচ), প্রকাশ দুবে (২০০১ সালের ব্যাচ) এবং সঞ্জয় বাহাদুরকে (১৯৮৯ সালের ব্যাচ) তাঁদের বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: কোয়ারেন্টাইন সেন্টার নাকি চিড়িয়াখানা? ভাইরাল ভিডিয়োতে অস্বস্তিতে যোগী সরকার
করোনার জেরে যে অর্থনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সেটির থেকে মুক্তির জন্য ধনীদের ৪০ শতাংশ করে ট্যাক্স দেওয়ার সওয়াল করা হয়েছিল ওই রিপোর্টে। এছাড়াও ছিল উত্তরাধিকার কর ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব সহ বেশ কিছু দাওয়াই, যেগুলির জেরে রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় ভারতের কর্পোরেট জগতে। কিন্তু সরকারকে না জানিয়ে এরকম রিপোর্ট প্রকাশ করায় রুষ্ট কেন্দ্র। এই তিন উচ্চপদস্থ অফিসারকে নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে লিখিত ভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য। Fiscal Options & Response to Covid-19 Epidemic (FORCE) রিপোর্টটি শনিবার আইআরএস অ্যাসোসিয়েশনের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয়। পরের দিনই সরকার এটিকে খারিজ করে দেয় ও জানিয়ে দেয় তেমন কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হলেন ভূষণ, যুগ্ম সচিব হলেন দুবে। অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিনয় ঝা প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না।
অর্থমন্ত্রকের এক কর্তা জানান যে এই তিন আইআরএস অফিসার তাদের জুনিয়ারদের এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করতে বলেছিলেন। প্রায় ৫০জন তরুণ অফিসার এই রিপোর্ট তৈরী করেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানা যাচ্ছে।
কোনও অধিকার ছাড়া রিপোর্টটি জনসমক্ষে প্রকাশিত করার দায়ে অভিযুক্ত ভূষণ। দুবে তাঁর জুনিয়ার অফিসারদের এই রিপোর্টটি প্রস্তুত করতে বলেন। বাহাদুর এই রিপোর্টটি আইআরএস অ্যাসোসিয়েশনের হাতে তুলে দেয়। অর্থমন্ত্রকের কর্তার মতে এই তিন বর্ষীয়ান কর্তাদের তিরিশ বছরের ওপর অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও সাবধানতা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হন এবং তরুণ অফিসারদের বিভ্রান্ত করেন। পুরো বিষয়টিকে কয়েকজন আধিকারিকের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ’ বলে মন্তব্য করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কের মধ্যেই ৫০ জন ঋণখেলাপির ৬৮ হাজার কোটি মকুব! তালিকায় রামদেব-মেহুল চোকসি