নয়াদিল্লি: রবিবার রাত নটায় সব আলো বন্ধ করে নয় মিনিটের জন্য বাড়ির বারান্দা বা দরজায় গিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ, প্রদীপ জ্বালিয়ে সেটা বিশ্বের কাছে বার্তা দিতে আহ্বান করেছেন মোদী। কিন্তু আচমকা বিদ্যুতের চাহিদা অতটা কমে গেলে গ্রিড সেটা সহ্য করতে পারবে কি না, সেই নিয়েই এখন চিন্তিত কেন্দ্রীয় বিদ্যুত মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: করোনার জেরে স্থগিত ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলা FIFA অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপ
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে বিদ্যুত মন্ত্রক। বিদ্যুতমন্ত্রী আরকে সিং ও Power Grid Corporation of India Limited (PGCIL) এবং গ্রিড অপারেটর POSOCO National Load Despatch Centre এর বরিষ্ঠ কর্তারা এই বৈঠকে সামিল ছিলেন। লকডাউনের জেরে কলকারাখানা বন্ধ। ফলে এমনিতেই চাহিদা তলানিতে। এর ওপর যদি সবাই আলো বন্ধ করে দেন তাহলে গ্রিডের ওপর মারাত্মক চাপ পড়বে, এই নিয়েই উদ্বেগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বরিষ্ঠ অফিসার জানিয়েছেন যে মিটিংয়ে PGCIL ও লোড ডিসপ্যাচাররা বলেছেন যে তারা ওদিন বিদ্যুতের গ্রিড যাতে স্টেবল থাকে, সেটা নিশ্চিত করবেন। বাণিজ্যিক কাজ কর্মের অভাবে এই মুহূর্তে চাহিদা প্রায় ৩০ শতাংশ কম। এর ওপরে অত দ্রুত চাহিদার চড়াই-উতরাই নিয়ে চিন্তা। Bridge to India Energy Private Limited-এর ম্যানিজিং ডিরেক্টর বিনয় রুস্তাগি বিষয়টা বুঝিয়ে বললেন। নটার সময় সবাই যদি আলো নিভিয়ে দেয় ও তারপর নটা দশ নাগাদ আবার চালু করে তাহলে অল্প সময়ের মধ্য ১০-১৫ GW লোড কমে গিয়ে আবার ফিরে আসবে। এরকম আগে কখনো হয়েছে বলে জানেন না বিনয় রুস্তাগি। প্রয়োজনে হাইড্রো ও গ্যাস পাওয়ারের ব্যাকআপ রাখতে হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ‘ধন্যবাদ নয়, আপনি শুধু হুকুম করুন’, কেজরিওয়ালের কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত কিং খান
আর এই বিপত্তি এড়াতে রবিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ধাপে ধাপে লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশের বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের মতে, এমন কৌশলে প্রধানমন্ত্রীর আর্জিও রক্ষা হবে। আবার পাওয়ার গ্রিডেও বাড়তি চাপ পড়বে না। ওই বিশেষ ৯ মিনিট দেশের প্রতিটি বিদ্যুৎ সংস্থাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করেছে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডও। করোনা সঙ্কটের মধ্যে এই বিপত্তি সামলানোই এখন চ্যালেঞ্জ বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের কাছে। এ নিয়ে দফতরের কর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছেন এসএলডিসি-র ডিরেক্টর রাম স্বরথ। তাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রবিবার রাত ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ধাপে ধাপে যেন লোডশেডিং করা হয়। তাতে সামলানো যাবে বিপর্যয়।
An unprecedented drop in electricity demand at 9pm Sunday &an immediate surge at 9.09 pm could cause the electrical grid to crash. So Electricity Boards are contemplating load shedding from 8 pm & staggered return to normal after 9.09pm. One more thing the PM didn’t think about! pic.twitter.com/zbmcyYm838
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) April 4, 2020
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দেন, করোনা সঙ্কটে যে অন্ধকার তৈরি হয়েছে, তা শেষ করতে আলোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এ জন্য ১৩০ কোটি দেশবাসীকে ‘মহাশক্তি’ জাগ্রত করার আর্জি জানান তিনি। মোদীর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা শশী তারুর। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘রবিবার রাত ৯টায় বিদ্যুতের চাহিদা আচমকা কমবে, এবং রাত ৯টা ৯ মিনিটের পর চাহিদা আচমকা বাড়বে, প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের গ্রিডে বিপর্যয় ঘটাতে পারেন। তাই বিদ্যুৎ দফতর ওই দিন রাত ৮টা থেকে ধাপে ধাপে লোডশেডিংয়ের চিন্তা ভাবনা করছে এবং ধাপে ধাপে তা ফিরবেও। রাত ৯টা বেজে ৯ মিনিট থেকে তা স্বাভাবিক হতে থাকবে। এটা আরও একটা ব্যাপার, যা প্রধানমন্ত্রী চিন্তাই করেননি!’
আরও পড়ুন: অসন্তোষ বিজেপির অন্দরেও,চাপের মুখে জম্মু-কাশ্মীরের চাকরি নীতি সংশোধন কেন্দ্রের
If all lights are switched off at once it might lead to failure of grid. All our emergency services will fail&it might take a week's time to restore power.I would appeal to the public to light candles&lamps without switching off lights:Nitin Raut,Maharashtra Energy Minister (3.4) pic.twitter.com/2j2gtOoJKi
— ANI (@ANI) April 4, 2020
মোদীর উল্টো যুক্তি দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎমন্ত্রী নিতিন রাউত-ও। তাঁর মতে, একসঙ্গে সব আলো নেভালে ভেঙে পড়তে পারে গ্রিড ব্যবস্থা। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জরুরি পরিষেবা।
আরও পড়ুন: মড়ক লেগেছে মার্কিন মুলুক! ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দেড় হাজার প্রাণ নিল করোনাভাইরাস