চুইঝাল মূলত বাংলাদেশের দক্ষিণ–পশ্চিম অঞ্চলের জেলাগুলোয় মসলা হিসেবে খুব জনপ্রিয়। চুইগাছ দেখতে পানের লতার মতো। পাতা কিছুটা লম্বা ও পুরু। পাতায় ঝাল না থাকলেও এর কাণ্ড ও ডালের স্বাদ ঝাল। মূলত গরু, খাসি, হাঁস ও মুরগির মাংস, মাছ, সবজিসহ যেকোনো ঝোলজাতীয় রান্নায় মসলা হিসেবে চুইগাছের কাণ্ড বা লতার ব্যবহার করা হয়। দেড় থেকে দুই ইঞ্চি টুকরা করে কেটে কাণ্ড বেশি মোটা হলে মাঝখান দিয়ে ফেড়ে ২, ৪ বা ৬ টুকরা করে খাবার রান্নার সময় যোগ করতে হয়।
আরও পড়ুন: গরমে জুড়াবে প্রাণ! ম্যাঙ্গো আইসক্রিম তৈরি করুন ঘরেই
রান্নায় চুইয়ের ব্যবহারে খাবারে কিছুটা ঝাল স্বাদ বাড়ে। আর সেই সঙ্গে রান্নায় আলাদা সুঘ্রাণ তৈরি হয়। এর কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল ও ফল ভেষজ গুণসম্পন্ন। চুই গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, খাবারের রুচি বাড়ায়, রক্তস্বল্পতা দূর করে, ক্ষুধামান্দ্য দূর করে, শরীরের ব্যথা সারায়, কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া সারাতে কার্যকর ও সদ্যপ্রসূতি মায়েদের শরীরের ব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে বলে জানা যায়।
চুইঝাল খুলনা অঞ্চলের খুবই জনপ্রিয় একটি মশলা , মাছ বা মাংসের সাথে রান্না করা হয় যা খেতে খুবই সুস্বাদু ও অনেক গুনাগুন সম্পন্ন।আসুন দেখে নিই চুইঝাল হাঁসের রেসিপি ।
উপকরণঃ
হাঁসের মাংস-১.১/২ কেজি,চুইঝাল -১০০ গ্রাম, নারকেলের দুধ-৩ কাপ, পেঁয়াজ বাটা-৩ টেবিল চামচ, রসুন বাটা-১ চা চামচ, আদা বাটা-১ টেবিল চামচ, জিরা বাটা-১টেবিল চামচ, ধনিয়া গুঁড়া- ১ চা চামচ, শুকনা লঙ্কার(মরিচের ) গুঁড়া- ১.১/২ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া- এক চিমটি, তেল- ৩/৪ কাপ, হলুদের গুঁড়া-১ চা চামচ, লবন-স্বাদ মতো, আলু-৩-৪টি(নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী),তেজপাতা+দারচিনি+এলাচ-প্রতিটি ২ টি করে, ভাজা জিরার গুঁড়া- ১/৪ চা চামচ,ভাজা গরম মসলার গুঁড়া- ১/৪ চা চামচ,নারকেল বাটা- ১ টেবিল চামচ।
প্রস্তুতপ্রণালীঃ
হাঁসের পালক ভালোভাবে পরিষ্কার করে মাংস ধুয়ে জল ঝড়িয়ে রাখতে হবে। তেল গরম করে তারমধ্যে প্রতিটি আলু চার টুকরা করে কেটে নিয়ে এক চিমটি লবন ও হলুদ দিয়ে ভেজে একটি পাত্রে তুলে রাখতে হবে। এবার ঐ তেলের মধ্যে ভাজা জিরা এবং ভাজা গরম মসলার গুঁড়া বাদে একে একে করে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা এবং গরম মসলা দিয়ে অল্প অল্প জল মিশিয়ে ভুনতে হবে। মসলা দিয়ে যখন সুন্দর একটা ভাজা ভাজা ঘ্রাণ বের হবে তখন এরমধ্যে হাঁসের মাংস দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নারকেলের দুধ দিয়ে দিতে হবে। মাংস যখন আধা সেদ্ধ হবে তখন এরমধ্যে আলু আর চুইঝাল দিতে হবে। যদি বুঝি ঝোলের জল টেনে গেছে কিন্তু মাংস সেদ্ধ হয়নি তাহলে একটু গরম জল দিতে হবে। সবশেষে লবন চেখে নিয়ে মাংসের উপরে ভাজা জিরার গুঁড়া ও ভাঁজা গরম মসলার গুঁড়া ছড়িয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুন: বাড়াতেই হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, শিখে নিন ‘ইমিউনিটি বুস্টিং’ চাটনি