রোম: নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে চেষ্টার কোনও কসুর করছে না ইতালি সরকার। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেড় কোটি মানুষকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তার পরেও এই মারন ভাইরাসের বিস্তার রুখতে হিমশিম অবস্থা তাদের। রবিবার ইউরোপের এই দেশটিতে করোনার থাবায় একদিনে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে এই রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬৬। এদিকে, ফ্রান্সে মৃতের সংখ্যা ১১ থেকে বেড়ে ১৯ হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত সে দেশে ভাইরাস-আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১১২৬ জন।
আরও পড়ুন: কেরলে ৩ বছরের শিশুর দেহে মিলল ভাইরাস, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪৩
চিনের পর সবচেয়ে বেশই যে দেশে থাবা বসিয়েছে মারণ ভাইরাস, সেটা হল ইটালি। এই মুহূর্তে সরকারি হিসাবে ইটালিতে ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৯২ ছুঁয়েছে। তবে বেসরকারি মতে, এই সংখ্যাটা আরও বেশি বলে দাবি ইটালির সংবাদমাধ্যমগুলির। দেশের এমনই অবস্থা যে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষদের গৃহবন্দি করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। ইটালিতে এখন অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে। উত্তর ইটালিতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলি শরণার্থী শিবিরের রূপ নিয়েছে। প্রায় ভেনিস এবং দেশের বাণিজ্যনগরী মিলানের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে দেড় কোটি মানুষ রয়েছেন। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, দেশের উত্তর ভাগে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশ বা প্রস্থানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশজুড়ে মাল্টিপ্লেক্স, প্রেক্ষাগৃহ এবং মিউজিয়ামগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের মোট ১০৫টি দেশ এবং অঞ্চলে মারন করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। যার জেরে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৩,৬০০ জনের। এর মধ্যে তিন হাজারের বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শুধুমাত্র চিনে। চিনের পরে করোনাভাইরাসে সবথেকে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। মৃতের সংখ্যার নিরিখে তৃতীয় স্থানে ইরান। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। তবে ইতালিতে এক দিনে ১৩৩ জনের মৃত্যু এবং ১,৪ ৯২ জন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় গোটা ইউরোপজুড়ে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।পোপ ফ্রান্সিসের শরীরও খুব একটা ভাল নেই।সর্দি-কাশিতে ভুগতে থাকা পোপ ফ্রান্সিস আজও ভ্যাটিকানে ভক্ত-সমাবেশ এড়িয়ে যান। পূর্বনির্ধারিত ভাবে আজ প্রথম বার তাঁর প্রার্থনা ‘লাইভ’ সম্প্রচার করা হয় ‘ভ্যাটিকান নিউজ়ে’।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের জেরে বন্ধ আমদানি, বাজার থেকে উধাও হচ্ছে প্যারাসিটামল
ওয়াশিংটনে কাল দু’জনের মৃত্যু ধরে আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৯। আক্রান্ত ৪০০। নিউ ইয়র্কে গত কালই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সেখানকার প্রশাসন। ক্যালিফর্নিয়ার উপকূলে আটকে থাকা প্রমোদতরী গ্র্যান্ড প্রিন্সেসের যাত্রীরা এখনও অথৈ জলে। সেখানে ২১ জনের শরীরে সংক্রমণ মিলেছে। প্রশাসন তাঁদের ঘরে ফেরানোর আশ্বাস দিলেও, জাহাজটিকে কোন বন্দরে আনা হবে, তা ঠিক হয়নি। জাহাজে থাকা নিউ মেক্সিকোর এক বৃদ্ধের অনুনয়, ‘‘ক্যাপ্টেন রোজই আমাদের আশা জোগাচ্ছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্লেগ আক্রান্তের মতো অসহায় মনে হচ্ছে নিজেদের।’’