কলকাতা: গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে মৃত্যু হল আরও চার জনের। এদের চারজনই করোনা পজেটিভ ছিলেন। তবে করোনাই এদের মৃত্যুর কারণ কিনা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে রবিবার সকালের মধ্যে এঁদের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের দু’জন ভর্তি ছিলেন এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। আরও দু’জন ভর্তি ছিলেন সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের প্রভাব! টলটলে নীল জল গঙ্গা ও যমুনায়, ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ বছর বয়সী রেলকর্মীর। তিনি শিলিগুড়ির প্রধাননগর এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসার পর তাঁকে ২৬ মার্চ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। তাঁকে রাখা হয়েছিল রেসপিরেটরি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (রিকু)-তে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রথমে তাঁর একবার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। রিকুতে তাঁর পাশের বেডেই ছিলেন কালিম্পঙের মহিলা যিনি পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই মহিলাকে পরে আইসোলেশনে রাখা হয়। ইতিমধ্যে প্রধাননগররে এই বাসিন্দার অবস্থার অবনতি হয়। সূত্রের খবর, শুক্রবার ফের তাঁর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হলে শনিবার রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া যায়। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, হাসপাতালেই সংক্রামিত হয়েছেন ওই ব্যক্তি।
অন্যদিকে শেওড়াফুলির যে বাসিন্দা সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শ্বাসকষ্ট নিয়ে, তাঁরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ৩০ মার্চ তাঁর লালারসের পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ পাওয়া যায়। তিনি ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ২৮ মার্চ। একই ভাবে শনিবার রাতে পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা ৪৯ বছরের এক মহিলার। রাজা রামমোহন রায় সরণিতে ওই মহিলার বাড়ি। তিনি জটিল কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। কিডনির সমস্যা নিয়েই তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পরে তাঁর দেহে কোভি়ড সংক্রমণের উপসর্গ দেখা গেলে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় প্রদীপ জ্বালান, #9pm9minute ট্যাগ ব্যবহার করে মনে করিয়ে দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী
গত ২৪ ঘণ্টায় চতুর্থ মৃত্যুর খবর এসেছে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে। ওখানে ভর্তি ছিলেন মহেশতলা থানা এলাকার ৩৪ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি হিমোফিলিয়া আক্রান্ত ছিলেন। সোমবার তিনি ভর্তি হয়েছিলেন এনআরএস হাসপাতালে। সূত্রের খবর, এনআরএসে ভর্তির আগে তাঁকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল এবং এসএসকেএম হাসপাতালের আউটডোরে নিয়ে যাোয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ওই যুবকের শরীরে কোভিডের সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয়। শুক্রবার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শনিবার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।
শনিবার রাত পর্যন্ত রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯। শনিবার পর্যন্ত লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে ১০৪২ জনের। স্বাস্থ্য দফতর সরকারি ভাবে এই চারটি মৃত্যুর উল্লেখ করে কোনও বুলেটিন এখনও প্রকাশ করেনি। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা খতিয়ে দেখছি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্যই ওই চার জনের মৃত্যু হয়েছে কি না।’’ সরকারি ভাবে রাজ্যে করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।
আরও পড়ুন: ‘বাত্তি অফ বাটার অন’! আমূল গার্লের কার্টুন দেখে হেসে খুন দেশবাসী