কলকাতা: বাড়ল লকডাউনের সময়সীমা। ১৩ এপ্রিল নয়, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যে বহাল থাকবে লকডাউন। নবান্নে এমনটা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যজুড়ে বহাল লকডাউন। আক্রান্তের সংখ্যা ২২ ছুঁয়েছে ২২। মারা গিয়েছেন ২ আক্রান্ত। সবমিলিয়ে করোটার কাঁটায় তটস্থ গোটা রাজ্য। পরিস্থিতির পর্যাচলোচনা করতে দফায় দফায় বৈঠক নবান্নে দলীয় বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজও নবান্নে একটি বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই সময়সীমা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫০০ কোটি দিল রিলায়েন্স, সঙ্গে ৫ লক্ষ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় রাজ্যের জেলাগুলি কতটা প্রস্তুত তা সোমবার খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে নবান্ন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন প্রতিটি জেলা ধরে ধরে জেলাশাসকদের প্রশ্ন করেন, করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য কোথায় কোথায় আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে?
আরও পড়ুন: সম্রাট ও সুন্দরী! ২০ জন ‘বিশেষ সেবিকা’ নিয়ে ‘সেলফ আইসোলশনে’ থাইল্যান্ডের রাজা
জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জেলার মূল হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড করতে বারণ করেন। তিনি জেলাশাসকদের বলেন, ‘‘মূল হাসপাতালের মধ্যে করোনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে সাধারণ রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভবনা থেকে যাবে। সেটা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।’’ সে কারণে মুখ্যমন্ত্রী মূলত বিচ্ছিন্ন জায়গায় করোনা চিকিৎসার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন।
প্রতিটি জেলাতেই বেসরকারি হাসপাতাল, এমনকি পর্যটকদের থাকার জায়গাগুলোয় আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া বীরভূমের বাসিন্দাদের জন্য দুর্গাপুর-আসানসোল এলাকার তিনটি বড় বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। এ দিনের রিভিউ বৈঠকে অধিকাংশ জেলাশাসকই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, প্রতিটি ব্লকে গড়ে দু’টি করে কোয়রান্টিন সেন্টার করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, লকডাউন জারি থাকলেও খোলা থাকবে জরুরি পরিষেবা। হাসপাতাল, বাজার, ব্য়াঙ্কের সমস্ত সুবিধাই পাবেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি মমতা জানিয়েছেন, এই লকডাউন চলাকালিন যাঁরা ভলান্টিয়ার করতে চান তাঁরা সংশ্লিষ্ট নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। যোগাযোগের নম্বরটি হল- 03323412600. এ দিনের বৈঠকে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী-সহ যাঁরা কোভিড-১৯ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত আছেন তাঁদের বিমার পরিমাণ ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিমার আওতায় বেসরকারি হাসপাতালের কর্মী, যাঁরা করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মিলছে লকডাউনের সুফল,এখনও করোনা ভাইরাসের ‘স্টেজ-২’তে ভারত- জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন রাজ্যের সীমানা এবং সীমান্ত কড়া হাতে সিল করতে বলেন। তবে পুলিশি কড়াকড়ি যাতে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে না যায়, তা নিয়েও সতর্ক করেন তিনি। পরিস্থিতি সামলাতে আইজি উত্তরবঙ্গের কাজের তদারকির জন্য স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের আইজি অজয় নন্দাকে বিশেষ দায়িত্ব দেন।