নয়াদিল্লি: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ পেরিয়েছে। কিন্তু সামনে আরও লম্বা লড়াই। তার জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সোমবার বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়ে দিলেন, জয় না আসা পর্যন্ত করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। এ দিন দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠা দিবসে বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘এ বছর এমন একটা সময়ে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পড়েছে, যখন শুধুমাত্র আমাদের দেশই নয়, গোটা বিশ্ব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মানবতার এই সঙ্কটের সময় একনিষ্ঠ ভাবে দেশের সেবা করে যেতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ৬৮ বছরের শাসনে এই নিয়ে পঞ্চমবার! জাতির উদ্দেশে বিরল ভাষণ রানি এলিজাবেথের
এবছর প্রতিষ্ঠা দিবসে উৎসব করা যাবে না। দলীয় কর্মীদের আগেই এই বার্তা দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় অনুষ্ঠান যাতে সামাজিক দূরত্ব ভঙ্গ করে না হয়, তা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও দিয়েছেন তিনি। বিজেপি সভাপতির দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে, কিন্ত ভিড় করে নয়। প্রত্যেক কর্মীর বাড়িতে পতাকা উত্তোলন করতে হবে। দলের প্রতিষ্ঠাতাদের ছবিতে মাল্যদান করা যাবে। প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রত্যেক কর্মীকে এক বেলা উপবাস করতে হবে। এদিন অন্তত ৬ জন ব্যক্তির খাবারের দায়িত্ব নিতে হবে। আগামী এক সপ্তাহ মাস্ক বানিয়ে বুথের প্রত্যেক ব্যক্তিকে অন্তত ২টি করে মাস্ক বিলি করতে হবে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতার পর সবথেকে বড় জরুরি অবস্থার মুখোমুখি ভারত: রঘুরাম রাজন
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে কর্মীদের সেই নির্দেশিকা মেনে চলতে অনুরোধ করেছেন। টুইটে তিনি বলেন, “স্থাপনা দিবসে প্রত্যেক কর্মীকে শুভেচ্ছা। যারা চার দশক ধরে এই দলের জন্য প্রাণপাত করেছেন তাঁদের শ্রদ্ধা। এদের জন্যই এত বছর ধরে বিজেপি ভারতবাসীর সেবা করার সুযোগ পেয়েছে। আমরা এমন একটা সময় দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করছি, যখন দেশ করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। দলের কর্মীদের কাছে আমার অনুরোধ সভাপতি নাড্ডাজি যে নির্দেশিকা দিয়েছেন, সেগুলি মেনে চলুন। গরিবদের সাহায্য করুন, এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।” টুইট করে নমো ভারতকে করোনা মুক্ত করারও ডাক দিয়েছেন।
এ যাবৎ লকডাউনের সাফল্যের জন্য দেশবাসীর পরিণত মানসিকতার প্রশংসা করেন তিনি। মোদী বলেন, ‘‘লকডাউনে পরিণত বিচারবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন দেশবাসী। সামনে লম্বা লড়াই। বিজেপির সব কর্মীর সামনে রাষ্ট্রসেবা-মানবসেবার দায়িত্ব। গরিব মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় মাস্ক পরে নেবেন। কেনা মাস্ক না থাকলে কাপড়ে মুখ ঢেকে নেবেন।’’
আরও পড়ুন: এবার পশুর শরীরেও মিলল করোনা! আক্রান্ত চিড়িয়াখানার বাঘ
এই পরিস্থিতিতেও যাঁরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেছেন, সেই সমস্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষকে ধন্যবাদপত্র লিখে ধন্যবাদ জানানোর পরামর্শ দেন মোদী। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের আরোগ্য অ্যাপ ডাউনলোড করে, পরিচিত আরও ৪০ জনকে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করানোর কথা বলেন তিনি। পিএমকেয়ারস তহবিলে অনুদান বাড়াতে হবে বলেও জানান মোদী।
প্রসঙ্গত ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা হয় বিজেপি। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতায় আসে জনসঙ্ঘ। ১৯৮৪ সালে প্রথম লোকসভা ভোটে লড়ে বিজেপি এবং মাত্র ২ আসনে জয় পায়। কিন্তু শক্তি বৃদ্ধি করে ২০১৪ ও ২০১৯ পরপর দু’বার একক সংখ্যা গরিষ্ঠতায় লোকসভা ভোটে জয়লাভ করে ভারতীয় জনতা পার্টি।
আরও পড়ুন: করোনা চিকিৎসার চাঁদা তুলতে ৩০ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি!