কলকাতা: রাজ্যে ফের করোনার থাবা। এবার করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ল হাবড়ার এক ছাত্রীর শরীরে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্কটল্যান্ড থেকে ফিরেছেন তিনি। গতকাল উপসর্গ দেখা দেওয়ায় স্থানীয় হাসপাতালে যান তিনি। সেখান থেকে বেলেঘাটা আইডি-তে রেফার করা হয় তাঁকে। সন্ধে নাগাদ রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই আইসোলেশন কেবিনে ভর্তি করানো হয় ছাত্রীকে। আপাতত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রী। বাড়ির লোককে পর্যবেক্ষণে রেখে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা ঠেকাতে জনতা কার্ফু মোদীর, সমর্থনে বলিউড তারকারা
করোনা আক্রান্ত তরুণী স্কটল্যান্ড থেকে ফিরে কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, তিনি গৃহ পর্যবেক্ষণে ছিলেন কি না— সেই তথ্য তাঁর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। তাঁর পরিবারের লোক জনের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল ওই তরুণীর বাড়িতে যাচ্ছে। সেখানে পরিবারের সদস্যদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রয়োজনে তাঁদের জেলা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হবে, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার সতর্ক করছেন, যাঁরা বিদেশ থেকে ফিরছেন তাঁরা নিজেদের স্বস্থ্য পরীক্ষা করান ও বাড়িতে নজরবন্দিতে থাকুন। সরকারি হাসপাতালে এসে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করান। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু বিদেশ ফেরত মানুষ শারীরিক পরীক্ষা না করেই এ দিক সে দিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনেক অভিযোগও আসছে। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিচ্ছে। শুক্রবার দুই বিদেশ ফেরত মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে পুলিশ। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
আরও পড়ুন: ‘জনতা কার্ফু’-তে চলবে না লোকাল, দূরপাল্লা ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন, জারি বিজ্ঞপ্তি
হাবড়ার বাসিন্দার শরীরে করোনার জীবাণু মিলেছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী আতঙ্কে কাঁটা হয়ে যান। সংক্রমণের ভয়ে কেউ বাইরে বেরতে চাইছেন না। যদিও গোটা এলাকাটি স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীদের নজরে রয়েছে। যথাযথভাবে স্যানিটাইজেশনের প্রক্রিয়া চলেছে। পুলিশও এলাকাবাসীকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছে।
এই নিয়ে গত চার দিনে তিন জন আক্রান্তের খোঁজ মিলল। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন, মধ্য প্রাচ্যের মত দেশ থেকে এসে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি, জ্বরভাব বা জ্বর- এই চারটি উপসর্গের কোনও একটি দেখা দিলেই হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই নির্দেশ বারবার উপেক্ষা করা হচ্ছে।এদিকে কার্যত লাফিয়েই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী সপ্তাহ থেকেই বাড়বে ঝুকি। করোনার স্টেজ থ্রি-তে পৌঁছবে দেশ। সেসব দিক মাথায় রেখেই একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।