ওয়াশিংটন: গত কয়েক দিন ধরেই করোনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে আমেরিকা। সেখানে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই দশ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লক্ষ পেরিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ‘গেম চেঞ্জার’ হয়ে উঠতে পারে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা তার উপাদান বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত সরকার। নয়াদিল্লির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সোমবার কার্যত হুমকি দিয়ে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: মৃত্যু আক্রান্তের, বন্ধ NRS-এর পুরুষ বিভাগ-সিসিইউ! কোয়ারেন্টাইনে ৬৫ ডাক্তার-নার্স
সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমি অবাক হব যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) এই সিদ্ধান্ত নেন, আপনারা জানেন। কারণ ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খুব ভাল।’’ এর পরই ট্রাম্প বলেন, ‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলে প্রত্যাঘাত হবে।’’ একই সঙ্গে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘‘আমি এই সিদ্ধান্তটা পছন্দ করছি না। এটা ওঁর সিদ্ধান্ত বলেও শুনিনি। আমি এটা জানি যে কিছু দেশের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমি গতকালই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছি। দু’জনের মধ্যে খুব ভাল আলোচনাও হয়েছে। এটা ওঁর সিদ্ধান্ত ছিল কি না দেখব। বহু বছর ধরেই ওরা (ভারত) বাণিজ্যক্ষেত্রে আমেরিকার থেকে সুবিধা পেয়েছে।’’
রবিবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে আলোচনা হয় মোদীর। সেই প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘আমি অবাক হব এটা যদি তাঁর সিদ্ধান্ত হয়। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা আমাকে জানানো উচিত ছিল। আমি তাঁকে বলেছি, আমরা আপনার প্রশংসা করব, যদি তিনি আমাদের ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেন।’’ এর পরই হুমকির সুরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘যদি তাঁরা সরবরাহের অনুমতি না দেন তা হলে ঠিক আছে। তার ফলও ভুগতে হবে।’’
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘন্টার মধ্যে করোনাকে খতম করছে উকুন মারার ওষুধ! চাঞ্চল্যকর দাবি অস্ট্রেলিয়ান গবেষকদের
যদিও, মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনায় চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিবেশী দেশগুলিতে প্যারাসিটামল ও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করবে ভারত।ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব মঙ্গলবার সকালে বলেন, মানবিকতার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ যেখানে ভয়াবহ আকার নিয়েছে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রতিবেশী দেশের কিছু সংস্থাকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও প্যারাসিটামল উৎপাদনে লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে সেই সঙ্গে এই ওষুধ কয়েকটি দেশে রফতানিতেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে ভারতেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন তৈরি হয়। ২৫ মার্চ সরকার সেই ওষুধ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ৪ এপ্রিল ফের বলা হয়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকেও ওই ওষুধ বা তার কোনও উপাদান বিদেশে পাঠানো যাবে না। সাধারণত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপরে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় না।
আরও পড়ুন: করোনার অন্ধকার দূর করতে একজোট বলিউড, অক্ষয়ের উদ্যোগে প্রকাশ্যে ‘মুসকুরায়েগা ইন্ডিয়া’