নয়াদিল্লি : আগামী অগাস্ট থেকেই চালু হচ্ছে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ (One Nation, One Ration Card) প্রকল্প। ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর অভিযানের আওতায় নয়া আর্থিক প্যাকেজের দ্বিতীয় অংশের ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকার সেই প্যাকেজের একটি অংশ বুধবার জানিয়েছেন তিনি।
এর ফলে কোনও উপভোক্তা দেশের যে কোনও প্রান্তের রেশন দোকান থেকে সরকার নির্ধারিত ভর্তুকিযুক্ত মূল্যে খাদ্যশস্য কিনতে পারবেন। এই প্রকল্প নিশ্চিত করতে দেশের সমস্ত রেশন কার্ডের তথ্য একটিই সার্ভারে জমা করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনা পজিটিভ স্বামীর দেহ নিয়ে ৬ ঘণ্টা শ্রমিক ট্রেনে মহিলা
দেখে নেওয়া যাক নির্মলার ঘোষণার এক ঝলক
১. ছোটো ও ভাগচাষির জন্য বাড়তি জরুরি ৩০,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। নাবার্ড যে ৯০,০০০ কোটি টাকা দেয়, তার বাড়তি হিসেবে দেওয়া হবে। ফলে তিন কোটি কৃষক সুবিধা পাবেন।
২. নিম্ন মধ্যবিত্তের জন্য আবাসন ক্ষেত্রে ৭০ হাজার কোটি টাকার জন্য প্রকল্প। ক্রেডিট লিঙ্ক সাবসিডি স্কিম বাড়ানো হয়েছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। এখন তা বাড়িয়ে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ করা হল। আড়াই লাখ সুবিধা পাবেন। ফলে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। চাহিদা বাড়বে। নিম্ন মধ্যবিত্ত বলতে বার্ষিক আয় ৬-১৮ লাখের মধ্যে হবে।
৩.পরিযায়ী শ্রমিকরা সহজলভ্য ভাড়াবাড়ি পাবেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় হবে। পিপিই মডেলে তা তৈরি হবে। রাজ্য, শিল্পপতি, ব্যক্তিরাও করতে পারবেন।
৪.পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আগামী দু’মাস বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। যাঁদের কোনও কার্ড নেই, তাঁদের রেশন দেওয়া হবে। কার্ড ছাড়াও রেশন মিলবে। আট কোটি পরিযায়ী শ্রমিক সুবিধা পাবেন। ৩,৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে। রাজ্যের মাধ্যমে তা দেওয়া হবে। শ্রমিকপিছু পাঁচ কিলো চাল বা আটা দেওয়া হবে। পরিবারপিছু এক কিলো চানা মিলবে। এক দেশ, এক রেশনের আওতায় পরিযায়ী শ্রমিকরা দেশের সর্বত্র রেশন পাবেন।
৫.মার্চ ও এপ্রিলে কৃষিখাতে ৬৩ লাখ ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৮৬,৬০০ কোটি টাকা। গ্রামে কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলিকে শুধুমাত্র মার্চেই ২৯,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে নাবার্ড। পরিকাঠামো তহবিলের মাধ্যমে রাজ্যকে ৪,২০০ কোটি টাকা রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে।
৬. পরিযায়ী শ্রমিক, ছোটো ব্যবসায়ী, ছোটো কৃষক, শিশু লোন মুদ্রা নিয়ে ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। ২৫ লাখ কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মঞ্জুর দেওয়া হয়েছে। লোনের সীমা ২৫,০০০ কোটি টাকা।
৭.তিন হাজার কোটি কৃষক ইতিমধ্যে চার লাখ কোটি টাকা পেয়েছেন। জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
৮.পরিযায়ী শ্রমিকের বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। মনরেগার অধীনে বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। গত বছর মে’র তুলনায় ৪০-৫০ শতাংশ বেশি মানুষ নিজের নাম নথিভুক্ত করেছেন। ১৩ মে পর্যন্ত ১৪ কোটি ৬২ লাখ মানুষের কাজ হয়েছে। ২ কোটি ৩ লাখ চাকরিপ্রার্থীকে কাজ দেওয়া হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিক-সহ শহুরে গরীবদের জন্য ১১,০০০ কোটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
৯. ন্যূনতম বেতনের সুবিধা মাত্র ৩০ শতাংশের মানুষ পেয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্যের মধ্য়ে যে অসাম্য রয়েছে, তা সারা ভারতে একই হারে করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। বছরে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার করা হবে। বিপজ্জনক কারখানায় কর্মরতের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা। সামাজিক সুরক্ষা তহবিল অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য ব্যবহার করা হবে। যেখানে মহিলারা রাতে কাজ করেন, সেখানে সুরক্ষা নিশ্চিত করার নিয়ম আনা হবে।
১০.করোনার মতো সংকটের কথা মাথায় রেখে যে কোনও শ্রমিক দেশের যে কোনও প্রান্ত থেকে রেশন নিতে পারবেন। অর্থাৎ এক দেশ, এক রেশন কার্ড হবে।
১১. মুদ্রা শিশু লোন উপভোক্তাদের ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
১২. ৫০ লাখ রাস্তার দোকানিদের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকার সুবিধা পাবেন। ব্যক্তিপিছু ১০,০০০ টাকা সুবিধা পাবেন। এক মাসের মধ্যে চালু করা হবে। ডিজিটাল পেমেন্ট করলে বাড়তি সুবিধা মিলবে। পরে বেশি টাকাও নেওয়া যাবে।
১৩. মূলত আদিবাসীদের কর্মসংস্থানের জন্য় ৬,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশপ্রেম জাগাতে ৩ বছরের মেয়াদে বাহিনীতে আমআদমি! প্রস্তাব ভারতীয় সেনার