নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে করোনা প্রকোপের মধ্যে সুখবর। শুক্রবারের হিসেব অনুযায়ী, মোট ১৩.৬% রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
বৃহস্পতিবার সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর পরিমাণ ছিল ১২.২ %। বুধবার তা ছিল ১১.৪১%। গত মঙ্গলবার সেরে ওঠা রোগীর পরিমাণ ছিল ৯.৯৯%।
দেশের মধ্যে কেরলেই প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে তিন জনের। আবার কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণেও সাফল্যের শীর্ষে দক্ষিণের এই রাজ্য। দ্রুত নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হিসেবে চিকিৎসকরা প্রায় গণহারে করোনার পরীক্ষার ব্যবস্থা করাকে নির্দেশ করেছেন। কিন্তু সেখানেই থেমে না থেকে আরও কঠোর নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে রাজ্যে। ১৪ দিন নয়। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেই ২৮ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। করোনা-যুদ্ধে কেরলের সাফল্যের অন্যতম কারণ সেটাও, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সারা দেশের মধ্যে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সুস্থ হয়ে ওঠা রোগী পাওয়া গিয়েছে কেরালায়। এই রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪৩২। তাঁদের মধ্যে অ্যাক্টিভ রোগী ৩৯৫ জন, মারা গিয়েছেন ৩ জন। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৪৫ জন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিননাডুর চেয়ে এই মুহূর্তে সুস্থতার ভিত্তিতে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে কেরালা।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘স্নেহের পরশ’ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, মিলবে ১০০০ টাকা
গত ১৯ মার্চ দুবাই থেকে কেরলের কুন্নুরে ফিরেছিলেন এক ব্যক্তি। জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো করোনার কোনও রকম উপসর্গ ছিল না তাঁর। তাঁকে ২৮ দিনের জন্য হোম আইসোলেশন থাকার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এর পর গত ১৪ এপ্রিল ২৭ দিন পর তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।দু’দিন পরে রিপোর্ট আসে কোভিড-১৯ পজিটিভ। অথচ প্রায় এক মাসের মধ্যে কোনও উপসর্গই তাঁর ছিল না। প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল ২০ মার্চ দুবাই থেকে কুন্নুরে ফেরা আরও দুই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও। তাঁদেরও ২৬ দিন পর টেস্টে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাঁদেরও কোনও উপসর্গ ছিল না।
উপসর্গ না থাকা এবং ২৬-২৭ দিন পরে পরীক্ষায় করোনার জীবাণু মেলায় উদ্বেগ বেড়েছে কেরল প্রশাসনের। কুন্নুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে নারায়ণ নায়েক বলেন, আমরা ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম চালু করেছি। সংক্রমণের ঝুঁকি যাঁদের রয়েছে, কোনও উপসর্গ না থাকলেও তাঁদের করোনার পরীক্ষা করাচ্ছি।’’
কেরল সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে নিযুক্ত হয়েছেন চিকিৎক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মহম্মদ আশিল। তিনি বলেন, ‘‘উহানে ২৭ দিন আইসোলেশনে থাকার পরেও এক জনের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। অন্তত পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোয়রান্টিনে ১৪ দিন থাকার পরেও করোনার সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।’’ তিনি আর জানান, ‘‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষাটা পেলাম, সেটা হল, উপসর্গবিহীন ব্যক্তিও করোনার জীবাণুর বাহক এবং ছড়াতে সক্ষম। আর এই সংখ্যাটা ৫ শতাংশেরও বেশি।’’
আরও পড়ুন: দরকারে সশস্ত্র পুলিশ, কলকাতা-হাওড়ার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নির্দেশ মমতার