নয়াদিল্লি: করোনা আতঙ্কে গোটা দেশ যখন ঘরবন্দি, ঠিক সেইসময় দূষণমুক্ত পরিবেশ পেয়ে যমুনা নাকি স্বমহিমায় ধরা দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবি অন্তত এমনই দাবি করছে, যাতে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকও।
আরও পড়ুন: বাঙালি নারী ও বঙ্গ সংস্কৃতিকে অসম্মানের অভিযোগ, ‘গেন্দা ফুল’- এর বিরুদ্ধে দায়ের এফআইআর
রবিবার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে যমুনার বুকে টলটলে নীল জলের একাধিক ছবি ছড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের টুইটার হ্যান্ডল এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তেমনই একাধিক ছবি শেয়ার করা হয়। প্রকাশ করা হয় একটি ভিডিয়োও। যমুনার যে তীরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, ঠিক তার উল্টো দিকে কালিন্দি কুঞ্জে ভিডিয়োটি তোলা হয়। তাতে দেখা যায়, মাথার উপর পরিষ্কার নীল আকাশ। আর তার নীচে কুচকুচে কালো জলের পরিবর্তে যমুনার বুকে টলটল করছে স্বচ্ছ জল। তার মধ্য দিয়ে জলের নীচের পলিও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
যে ব্যক্তি ভিডিয়োটি তোলেন তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এপ্রিলের দুপুরে দিল্লির যমুনা তটকে চেনাই যাচ্ছে না। একসময় যে নদীতে নর্দমার কালো জলের মতো জল বয়ে যেত, আজ সেখান দিয়ে কুলকুল করে পরিষ্কার, স্বচ্ছ জল বয়ে যাচ্ছে। যেখান থেকে আগে দুর্গন্ধ পাওয়া যেত, আজ সেখানে ঠান্ডা হাওয়া বইছে। দুর্গন্ধের নামগন্ধও নেই। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে করোনার জন্য। মানুষ যমুনার জল নোংরা করা বন্ধ করে দিয়েছেন। আসলে যমুনা সাফাইয়ের কোনও প্রয়োজনই নেই, মানুষ জল নোংরা না করলেই চলবে। নোংরা না করলে পরিষ্কার করার প্রয়োজনই পড়ে না।’’
আরও পড়ুন: ‘আপনাদের জন্য আমরা গর্বিত’, করোনায় এয়ার ইন্ডিয়ার লড়াইকে কুর্নিশ পাকিস্তানের
https://twitter.com/MoJSDoWRRDGR/status/1246446614928977920
অন্যদিকে, লকডাউনের জেরে দেশবাসী ঘরবন্দি থাকায় ও কল-কারখানা বন্ধ থাকায় ক্রমেই কমছে গঙ্গায় দূষণের প্রভাব।আইআইটি বিএইচইউ-এর কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি-র অধ্যাপক ড. পিকে মিশ্র জানান,”গঙ্গার দূষণের এক দশমাংশ আসে শিল্প থেকে। যেহেতু শিল্পোৎপাদন এখন বন্ধ লকডাউনে, তাই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা গঙ্গায় ৪০-৫০ শতাংশ উন্নতি লক্ষ করেছি। এটা তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি।” তিনি আরও বলেন,”১৫-১৬ মার্চ বৃষ্টি হওয়ায় এখানে গঙ্গার জলস্তর বেড়েছে। এর ফলে পরিষ্কার করার ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। যদি ২৪ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার আগের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা যায়, তাহলে অভাবনীয় উন্নতি ধরা পড়বে।”
গঙ্গার দূষণ কমে যাওয়ায় কার্যত খুশি গঙ্গার তীরবর্তী শহরের মানুষেরা। এক স্থানীয়ের কথায়,”ক’দিনে আগে আমরা গঙ্গার যে জল ব্যবহার করেছি আর এখন যে পরিস্থিতি, তা দেখলে পার্থক্যটা বোঝা যায়। আজ জল কত পরিষ্কার। এর অন্যতম কারণ, এখন কারখানা বন্ধ। মানুষজনও ঘাটে স্নান করতে আসছেন না। যদি ১০ দিনেই এমন হয়ে থাকে, তাহলে আমার বিশ্বাস অচিরেই গঙ্গা একেবারে আগে যেমন ছিল তেমন হয়ে উঠবে।”
আরও পড়ুন: হাইড্রক্সিক্লোরোক্যুইন দ্রুত আমেরিকায় পাঠান প্লিজ, ভারতের থেকে ওষুধ চেয়ে মোদিকে ফোন ট্রাম্পের