Site icon The News Nest

করোনার জেরে মন্দার মুখে বিশ্ব, প্রভাব পড়বে না ভারত-চিনে, আশা রাষ্ট্রসংঘের

IMG 20200328 WA0004 640x430 1

রাষ্ট্রপুঞ্জ: খুব শীঘ্রই বিরাট মন্দার কবলে পড়তে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতি। একথা কয়েকদিন ধরেই বলছেন অর্থনীতিবিদরা। এর মধ্যে আশার কথা শোনাল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে, মন্দার কবল থেকে রেহাই পেতে পারে ভারত। এমনকি যে দেশটি থেকে বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, সেই চিনও এবারের মতো মন্দার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে।

আরও পড়ুন: Corona Update: একদিনে দেশে করোনা আক্রান্তের রেকর্ড বৃদ্ধি, মৃত্যু বেড়ে ৩২

রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারীর জেরে বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি হবে হাজার হাজার কোটি ডলার। এর ফলে সবচেয়ে বিপদে পড়বে উন্নতিশীল রাষ্ট্রগুলি। বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই বাস করেন উন্নতিশীল দেশগুলোয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসাবমতো, তাঁদের জন্য ২৫০০ কোটি ডলার ত্রাণ প্যাকেজ প্রয়োজন হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংক্রান্ত দফতর থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন উন্নত দেশ এবং চিন অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বিরাট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তার পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার। একটা অভুতপূর্ব সংকটের মোকাবিলায় যে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে তাও অভুতপূর্ব। তাতে অর্থনীতির ক্ষতিপূরণ হবে। মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে।

‘দ্য কোভিড-১৯ শক টু ডেভলপিং কান্ট্রিজ’ নামে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ বসবাস করা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আর্থিক মন্দার প্রভাব সব চেয়ে বেশি পড়বে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘এ বছর লাখ লাখ কোটি ডলারের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। চিন ও ভারত বাদে এটা উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে মারাত্মক হবে। কী কারণে চিন এবং ভারতে প্রভাব কম পড়বে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়নি ওই সমীক্ষায়।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চিন থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশের মধ্যে সংক্রমণ বেঁধে রাখতে পেরেছে চিন। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বলেও দাবি করেছে বেজিং। অন্য দিকে ভারতে এখনও পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ ব্যাপক আকার নেয়নি। এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের নজিরও মেলেনি। আবার ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১ কোটি ৭০ লক্ষের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, রেপো রেট কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, তিন মাসের ইএমআই স্থগিত হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সব কারণেই এই দুই দেশের অর্থনীতি অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির মতো খারাপ পরিস্থিতিতে পৌঁছবে না।

আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করছে জনসন অ্যান্ড জনসন, ট্রায়াল হবে সেপ্টেম্বরে

দিন দুই আগেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার ঘোষণা করেছে, করোনার জেরে এক দশকের সর্ববৃহৎ আর্থিক মন্দার দিকে হাঁটছে বিশ্ব। আইএমএফের মতে, এখনই করোনার প্রকোপ কমানো না গেলে আগামী বছরও বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।আর্থিক এই মন্দার মূল কারণ হল লকডাউন। আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা মনে করছেন, এই লকডাউন বিশ্বের আর্থিক এবং সামাজিক কাঠামো ভেঙে দেবে। এর ফলে বহু সংস্থায় ছাঁটাই এবং বহু মানুষের কাজ হারানোর আশঙ্কা করছেন তিনি। তাঁর মতে, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে এই মন্দা চরমে উঠবে।

ক্রিস্টালিনা বলেন, অতিমহামারীর ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ‘আচমকাই স্তব্ধ’ হয়ে গিয়েছে। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য ২৫০০ কোটি ডলার অর্থাৎ ১৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন হবে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, খুব কম করেই এই হিসাব করা হয়েছে। বাস্তবে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে মন্দার কবল থেকে উদ্ধার করতে হলে আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে।

কিছু দিন আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছিল, উন্নত ২০টি দেশ (জি-২০) মিলে মোট ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারে। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘‘অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মোকাবিলায় অভূতপূর্ব এই সাড়া অর্থনীতির এই ধাক্কাকে বস্তুগত ও মানসিক দিক থেকে সাময়িক ভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে।’’ তবে নতুন সমীক্ষায় এ কথাও বলা হয়েছে যে, এখনও এই সব পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। জানা সম্ভব হলে চিত্রটা আরও স্পষ্ট হবে।

আরও পড়ুন: করোনা এড়াতে হস্তমৈথুনে মন দিন, পরামর্শ নিউইয়র্কের স্বাস্থ্য দফতরের

Exit mobile version