ওয়েব ডেস্ক: করোনা আতঙ্কের জেরে ধস নামছে গোটা বিশ্বের শেয়ার বাজারে। থাবা পড়েছে ভারতের শেয়ার বাজারেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) করোনাকে বিশ্বব্যাপী মহামারি ঘোষণা করতেই বৃহস্পতিবার রেকর্ড পতন হল ভারতের শেয়ার বাজারে। সেনসেক্স পড়ল প্রায় ২৭০০ পয়েন্ট। পাল্লা দিয়ে নিফটির সূচক নামল ১০ হাজারের নিচে। ডলারের তুলনায় টাকার দামেও পতন হয়েছে এদিন। শেয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যতম বৃহৎ পতন হয়েছে এদিন।
আরও পড়ুন: ধিক্কার! মানুষের লালসায় পৃথিবী থেকে চিরতরে মুছে গেল সাদা জিরাফ
মুম্বই শেয়ার সূচক সেনসেক্সের সকাল শুরু হয়েছিল ১৫ হাজার পয়েন্ট নীচে থেকে। তার পর সারা দুপুর পর্যন্ত ২০০০ থেকে ২৫০০ পয়েন্ট নীচে ঘোরাফেরা করেছে। কিন্তু তার পর থেকে কার্যত উল্কার বেগে পতন শুরু হয়। এক সময় ৩২০৪.৩০ পয়েন্ট নেমে সেনসেক্স পৌঁছে যায় ৩২৪৯৩ পয়েন্টে। তবে বাজার বন্ধ হওয়ার আগে কিছুটা উঠে দিনের শেষে বন্ধ হয়েছে ৩২778.১৪ পয়েন্টে। পতন ২৯১৯ পয়েন্ট বা ৮.১৮ শতাংশ। নিফটিতেও কার্যত ‘ফ্রি ফল’।
করোনাভাইরাস যত ছড়াচ্ছে, ততই ধস নামছে ভারতের সঙ্গে গোটা বিশ্বের শেয়ার বাজারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাকে এনডেমিক বা ‘অতিমারী’ (মহামারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর) ঘোষণা করেছে। তার জেরে বাজার খোলার সময় থেকে ক্রমাগত পড়তে থাকে শেয়ার বাজার। দিনের মধ্যে কখনও সামান্য উপরে উঠেছে, তো পরের মুহূর্তেই হু হু করে নেমেছে সূচক।
বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন পতন ছিল ৯৫০.৪ পয়েন্ট। তখন নিফটির সূচক ছিল ৯৫০৮ পয়েন্টে। বাজার বন্ধের সময় সেই সূচক কিছুটা বেড়ে ৯৫৯০ অঙ্কে। পতন ৮৬৮.২৫ পয়েন্ট (৮.৩০ শতাংশ)। দুই সূচকের ইতিহাসেই এত বড় পতন এর আগে কখনও হয়নি। ব্যাঙ্ক থেকে গাড়ি, উৎপাদন থেকে বিমা, সবক্ষেত্রেই পতনের হার প্রায় একই রকম। তার মধ্যেও সবচেয়ে বেশি পড়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক (৯%), এইচডিএফসি (৭%), রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (৭%), এসবিআই, এক্সিস ব্যাঙ্ক, আইটিসি, ওএনজিসি-র (প্রায় ১৩%) শেয়ার।
করোনা আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে গিয়েছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। ক্রমাগত বাজার থেকে লগ্নি তুলে নিচ্ছেন বিদেশি লগ্নিকারীরা। করোনাকে অতিমারী ঘোষণা করায় সারা বিশ্বে তার জেরেই এই পতন বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। ব্যাঙ্ক অব আমেরিকার অর্থনীতিবিদরা আগে বলেছিলেন, চলতি আর্থিক বছরে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির বিকাশ হবে ২.৮ শতাংশ হারে। এখন তাঁরা বলছেন, বড় জোর ২.২ শতাংশ বিকাশ হতে পারে। জে পি মর্গান চেজ অ্যান্ড কোম্পানির অর্থনীতিবিদরা বলেন, মন্দা শুরু হতে বেশি দেরি নেই। তাঁদের মতে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ যদি শীঘ্র কমে যায় এবং বিভিন্ন দেশের সরকার যদি বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়, তাহলে মন্দা এড়ানো যেতে পারে। একইসঙ্গে তাঁরা বলেন, তেলের দাম কমার ফলে মন্দার শক কম লাগবে।
(আপনার আশপাশের পরিবর্তনের অংশ হতে চান? আমাদের খবর পাঠান ইমেল্ ও হোয়াটআপের মাধ্যমে)