Site icon The News Nest

করোনা আক্রান্তদের না হয় ‘ভগবানরা’ দেখুন, আমাদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এখন দরকার ‘ডাক্তার’

সৈয়দ আলি মাসুদ

সোশ্যাল সাইটে শুনছি ডাক্তাররা সবাই ভগবান। এখন মনে হচ্ছে কথাখানি ষোলোআনা না হলেও বারো আনা সত্যি। ভগবানের দেখা তো সবাই পায় না। বর্তমানে কোভিড -১৯ আক্রান্ত কিংবা সন্দেহভাজনরা ছাড়া ভগবানদের দেখা পাচ্ছেন না কোনও রোগীই।

ডাক্তারদের নিয়ে আমাদের নানা অভিযোগ ছিল। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের সম্পর্কে একরকম অভিযোগ, বেসরকারি হাসপাতালের ডক্তারদের সম্পর্কে অভিযোগ অন্যরকম । সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার কথা শুনতে চায় না। কেবলই ভাগিয়ে দেয়। বেসরকারি হাসপাতালের আবার রকম সকম আলাদা।খরচের ঠেলায় রোগীর পরিবারের প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার উপক্রম। কিন্তু তাও বিপদে-আপদে আমরা ডাক্তারের দেখা পেতাম। ডাক্তার কেবল কোভিড আক্রান্তদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যায়নি। কিন্তু এখন সেসবও বন্ধ।

একটা কথা সকলের ভাবা উচিত, করোনা ছাড়াও বহু অসুখ রয়েছে। সেসব রোগীদের চিকিৎসা জরুরী। তারা এই বিপদে যাবে কোথায়? বেশিরভাগ হাসপাতাল খাঁ খাঁ করছে। রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এক আধজন থাকতে না পেরে হাসপাতাল মুখী হচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু চিকিৎসা শুরু হচ্ছে না। করোনা পরীক্ষা করে বেডে ফেলে রাখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মহিলার কানের মধ্যে জাল বুনছে মাকড়সা! দুর্বল হৃদয়ের জন্য ভিডিওটি নয়

চিকিৎসায় যদি না হবে হাসপাতালে গিয়ে লাভই বা কি? এই ভাবনা থেকে অনেকেই ঘরে ককিয়ে মরছেন। ‘ভগবানরা’ করোনা নিয়ে ব্যস্ত। সকলেই জানেন করোনার ওষুধ নেই। এটি মূলত হামলা চালায় শ্বাসযন্ত্রে। খুব বাড়াবাড়ি হলে চিকিৎসা বলতে অক্সিজেন।আরও বাড়াবাড়ি হলে ভেন্টিলেটর। চিকিৎসা মূলত এই। কিন্তু এমন হাজারও অসুখ রয়েছে যার চিকিৎসা অবিলম্বে দরকার। চিকৎসা পেলেই রোগটা সেরে যাবে। তাদের নিয়ে কারও কোনও কথা নেই। এখন মনে হচ্ছে আমাদের ‘ভগবান’ দরকার নেই, আমরা যাদের আড়ালে গাল পারতাম সে ডাক্তারদের ফিরিয়ে দিন। সকলে ভগবান হওয়ার দরকার নেই। করোনা আক্রান্তরা ‘ভগবানদের’ নিয়ে থাকুক। বাকিদের ডাক্তারের দরকার।

হাসপাতাল তো দূর, যেসব ডাক্তার সকাল সন্ধে চেম্বার করতেন, বন্ধ তাঁদের দোকানও। এক কিলোমিটার দূর থেকেও কেউ রোগী দেখতে চাইছেন না। এর আগে নানা মহামারীর মুখোমুখি হয়েছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু তা বলে চিকিৎসা পরিষেবা এমনভাবে হোঁচট খায়নি। জ্বর, সর্দি, কাশির কথা শুনে ভয় লাগতেই পারে। ডাক্তাররাও কারও বাবা কিংবা মা, স্বামী অথবা স্ত্রী,কারও ভাই কিংবা বোন,প্রেমিক কিংবা প্রেমিকা। তাদের জন্য বাড়িতে বহু মানুষ অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। কোনভাবেই এই মানুষগুলোকে হারাতে চায়না তারা। ঠিক তেমনি ডাক্তারের কাছে যাঁরা আসছেন তাদের জীবনের মূল্যও নেহাত কম নয়। এই সম্পর্কগুলো তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।কেবল করোনা আতঙ্কে তাদের এমন দূর ছাই করা যায় না।

রোগের সিম্পটমস পর্যন্ত ডাক্তাররা শুনতে চাইছেন না।আগেই ধরে নিচ্ছেন রোগীর করোনা হয়েছে। এটি ভীষণভাবে অবৈজ্ঞানিক। মূল সমস্যা সেখানেই। সোশ্যাল সাইটের দৌলতে ভীতির পশরার কমতি নেই। ডাক্তারাও পরে গিয়েছেন সেই ফাঁদে। ফলে সব কিছুতেই তাঁরাও দেখছেন করোনার ছায়া। আসলে বিপত্তি দ্বিগুন হয়েছে তাতেই।

আরও পড়ুন: Covid-19: করোনা রুখতে এবার কমলালেবু নিয়ে কাড়াকাড়ি, চড়ছে দাম

Exit mobile version