নয়াদিল্লি: উত্তর-পূর্ব দিল্লির মুস্তাফাবাদে খোলা হয়েছিল ইদগাহ ত্রাণ শিবির । আশ্রয় পেয়েছিলেন দিল্লি হিংসায় সর্বহারা ৫০টি পরিবার। কিন্তু সেই ক্ষতে প্রলেপ পড়ার আগেই ফের আতঙ্ক গ্রাস করল ওই পরিবারগুলিকে। করোনা প্রতিরোধে (জারি করা লকডাউন মানতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেই ত্রাণ শিবির। তাই মাথা গোঁজার আশ্রয় হিসেবে দগ্ধ বাড়িতেই ফিরছেন পরিবারের মানুষরা।এই টানাপোড়েনে নিজের শহরেই এখন ‘উদ্বাস্তু’ শ’ দুয়েক মানুষ। আগুনের গ্রাসে কঙ্কালসার সেই বাড়িতে ফিরলে কী হবে, খাবার জোগান কে দেবে, জানেন না তাঁরা।
আরও পড়ুন: স্মৃতির ঝাঁপি! রামায়ণ, মহাভারতের পর এ বার দূরদর্শনে ফিরছে ‘সার্কাস’, ‘ব্যোমকেশ’ও
ঠিক যেমনটা করতে হল আনসার মালিককে। প্রায় এক মাস পরে পা রাখলেন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া মুস্তাফাবাদের বাড়িতে।
দিল্লি হিংসার পর থেকে এতদিন আনসার এবং তাঁর পরিবারের বাকি ১১ জন সদস্য ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছিলেন। তবে দেশে করোনা থাবা বসানোর পর, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে ১৪ এপ্রিল, টানা ২১ দিন সারা দেশে লকডাউ ঘোষণা করেন। তারপরই ঘরে ফেরার এই উদ্যোগ নিতে হয়েছে আনসারের মতো আরও অনেককেই।
আরও পড়ুন: কেরলে মৃত ৬৯ বছরের করোনা আক্রান্ত রোগী, ভারতে সংখ্যা বেড়ে ২০
এক পরিবারের প্রৌঢ়া সদস্য শিববিহারের মুনিসা বলেছেন, “ওরা আমার সর্বস্ব লুট করেছে। টাকা, মেয়ের বিয়ের গয়না। পুড়িয়ে দিয়েছে বাড়িও। এখন আমার কাছে কিছুই নেই। না টাকা, না ঘর, না খাবার।” তাঁর দাবি, “বাড়ি ফিরে যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে খুঁজেছিলাম। পরে মনে পরে গদির নীচে ২৫ হাজার টাকা রেখেছিলাম। সেটা নিতে গিয়ে দেখি পোড়া কাগজ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।” অপর এক আর্ত জাইবুনিশা কান্না ভেজা কণ্ঠেই জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি পুড়ে খাক। কেউ যদি দয়া করে খেতে দেয়, খাবার পাচ্ছেন। নয়তো খিদে পেটেই তাঁদের দিন কাটাতে হচ্ছে।
ত্রাণ শিবিরে থাকার সময়েই ভেবেছিলেন, ধীরে ধীরে ফের বাসযোগ্য করে তুলবেন পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বাসস্থানটিকে। কিন্তু আচমকাই করোনার প্রকোপে সেই স্বপ্ন আপাতত অধরাই থেকে যাবে। ভয়ংকর সেই রক্তাক্ত, আগুনে ঝলসানো স্মৃতিকে সঙ্গী করেই আগামী বেশ কিছুদিন কাটাতে হবে উত্তরপূর্ব দিল্লির হিংসা বিধ্বস্ত বহু পরিবারকে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকায় খুশি নমো, আর্থিক প্যাকেজে মোদীকে ধন্যবাদ মমতার