ওয়েব ডেস্ক: করোনা ত্রাসে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যু মিছিল। এই অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ছাড়া কোনও উপায় নেই। করোনা বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ ও আন্দোলনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। আপাতত বন্ধ সব প্রতিবাদ-আন্দোলন। এই সংক্রমণ ২১ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ নিয়েছে। একজোট হয়ে মিছিল মিটিং কিংবা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনার লকডাউনেও চতুর্থ শ্রেণীর সংবাদকর্মীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভয় দেখিয়ে!
নয়াদিল্লি, হংকং ও চিলিতে চলছিল গণবিদ্রোহ। সকলেই আপাতত প্রতিবাদ কর্মসূচির গতিপথ বদল করছে। সিএএ-র বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে শাহিনবাগে প্রতিবাদ চলছিল। দিল্লি দাঙ্গা,মতান্তরে গণহত্যার সময়ও শাহিনবাগ অনড় ছিল। মানুষের বিরুদ্ধে লড়া যায়। কিন্তু ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়া যায় না। এই সার সত্যতা বুঝেছেন সকলে। প্রাথমিক ভাবে শাহিনবাগ বলেছিল তারা জায়গা ছেড়ে নড়বে না। তাদের বক্তব্য ছিল, করোনা যদি করুণাও করে এনআরসি তো করবে না। এখন প্রাণে বাঁচলেও মোদী সরকারের নীতি ছাড়বে না। দেশ ছাড়া করা হবে। সমানে ভয় দেখানো হবে সংখ্যালঘুদের। গরিষ্ঠ -লঘিষ্টর মধ্যে বিভাজন টেনে রাজনীতি হবে দেশজুড়ে। এদেশের অগণিত মানুষকে পরিচয়পত্র দেওয়ার নাম করে হেনস্থা করা হবে।গরিব এবং মুসলিমদের অনুপ্রবেশকাকারী বলে দেগে দেওয়া হবে। শাহিনবাগের প্রতিবাদ ছিল সেসবের বিরুদ্ধেই।
আরও পড়ুন: পুলিশের বাড়াবাড়িতে নষ্ট ১৫ হাজার লিটার দুধ, ১০ হাজার কেজি সবজি- অভিযোগ ই-কমার্স সংস্থাগুলির
কেজরি সরকার গণপ্রতিবাদ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। ফলে গতিপথ বদলে গিয়েছে শাহিনবাগ। গত সপ্তাহেও ৫o জন প্রতিবাদী দূরত্ব বজায় রেখে সেখানে বসেছিলেন। বিধি মোতাবেক স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেখানে মাত্র ৬ জন অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। সেটিও পরে দিল্লি পুলিশ তুলে দিয়েছে। এরপরই সোশ্যাল মাধ্যমে শাহিনবাগের আন্দোলন ভেস্তে যাওয়া নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ শুরু হয়। বাধ্য হয়ে আন্দোলনকারীদের বলতে হয়, এই উঠে যাওয়া সাময়িক। করোনার প্রকোপ বন্ধ হলেই ফের পথে নামবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: গোলাপ ছড়ানো বাথটবে বসে করোনা মোকাবিলার বার্তা, নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার ম্যাডোনা
অন্যদিকে, হং-কং – এ প্রথম গত ২২ জানুয়ারী সেখানে প্রথম করোনা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তখন থেকেই সেখানকার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন আপাতত মুলতুবি হয়ে যায়। চীনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চলছিল এই প্রতিবাদ। শাহিনবাগের মতোই তারাও যে আন্দোলন থেকে সরছে না সে কথা অবশ্য হংকং আন্দোলনকারীরা বুঝিয়ে দিয়েছে। এই সময় প্রতিবাদ মিছিলের পরিবর্তে নিজেদের রক্ষা করতে হবে। বেঁচে থাকতে হবে। চিনের সীমান্ত যাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় তার দাবিতে। গত মাসে কয়েক হাজার স্বাস্থ্যকর্মী স্ট্রাইক করেছিলেন। হংকং পুলিশ প্রায় ৭ হাজার মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতার করেছিলেন। কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন: Love in Corona Time: ফের এক ছাদের তলায় প্রাক্তন জুটি
সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন চিলির নাগরিকরাও। করোনা থামিয়ে দিয়েছে তাদেরও প্রতিবাদ। অসাম্য এবং মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে চলছিল লাগাতার প্রতিবাদ। আন্দোলনকারীরা থালা, বাসন ও পাত্র বাজিয়ে প্রতিবাদ করছিলেন। গত অক্টোবরে সেখানে বেড়ে যায় মেট্রো ভাড়া। তার বিরুদ্ধে প্রথমে শুরু হয় আন্দোলন। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হন বহুজন। কম ৩০ জনের মৃত্যু হয় এই আন্দোলনে। আহত হন বহু মানূষ।আন্দোলনকারীরা রাষ্ট্রের পেনশন সিস্টেম, শিক্ষা সহ একগুচ্ছ দাবি করেন। এই সব দাবির বাইরে তাদের অন্যতম দাবি ছিল নয়া সংবিধান। করোনার কারণে আপাতত সব পিছিয়ে গেল।