কলকাতা: খারিজ হয়ে গেল নির্দল প্রার্থী দীনেশ বাজাজের রাজ্যসভার মনোনয়নপত্র। ত্রুটি থাকার জন্য খারিজ করা হয়েছে মনোনয়নপত্রটি। ফলে রাজ্যসভায় বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের সরাসরি নির্বাচিত হওয়ার পথে কোনো বাধাই থাকল না।
২৬ মার্চ রাজ্যসভার ভোট। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবার পাঁচজন সদস্য রাজ্যসভায় নির্বাচিত হবেন। পাঁচ আসনে মনোনয়ন পেশ করেছিলেন ছ’জন প্রার্থী। সোমবার ছিল মনোনয়নপত্রের স্ক্রুটিনি। এরমধ্যে তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজির নুর ও তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী দীনেশ বাজাজের মনোনয়নে ত্রুটি ধরা পড়ে। মৌসমের মনোয়নপত্রে সম্পত্তিগত বিষয় ঘোষণা নিয়ে দেখা দিয়েছিল জটিলতা।আর, দীনেশ বাজাজ মনোয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজে সাক্ষর করলেও, সেখানে নেই ফার্স্টক্লাস ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারির সাক্ষর।তার প্রেক্ষিতে আজ, মঙ্গলবার দুই প্রার্থীকে আবার শুনানিতে ডেকেছিলেন রাজ্যসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার। মৌসম বেনজির নুরের মনোনয়ন বৈধ ঘোষিত হয়।
বাকি চার প্রার্থী, তৃণমূলের দীনেশ ত্রিবেদী, সুব্রত বক্সী ও অর্পিতা ঘোষ এবং সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মনোনয়নপত্রের স্ক্রুটিনি অবশ্য নির্বিঘ্নে মিটে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য হচ্ছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ
রাজ্যসভায় বাংলা থেকে শূন্য হওয়া পাঁচ আসনে প্রার্থী ছিল ৬ জন। তাতে ভোটাভুটি অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু দীনেশ বাজাজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় এ বার পাঁচ আসনে প্রার্থী পাঁচ জনই। রয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত সুব্রত বক্সী, অর্পিতা ঘোষ, মৌসম বেনজির নূর ও দীনেশ ত্রিবেদী। অন্য একটি আসনের জন্য রয়েছেন বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। বুধবারের মধ্যে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে এই পাঁচ জনই এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় যেতে চলেছেন। যদিও মনোনয়ন প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচন কমিশন সবুজ সঙ্কেত দিলে বুধবারই ওই পাঁচ জনকে জয়ী ঘোষণা করে তাঁদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে জারি মহামারী আইন, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ,যেতে হবে না শিক্ষকদেরও
দলীয় শক্তির বিচারে রাজ্যসভায় তৃণমূলের চার প্রার্থীর জয় নিশ্চিত ছিলই। কিন্তু দীনেশ বাজাজ ‘নির্দল’ হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় ভোটাভুটি অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ভোট হলে বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মসৃণ ভাবে রাজ্যসভায় যাওয়া একেবারেই সম্ভব হত না। বরং পাল্লা কিছুটা ভারী ছিল দীনেশের দিকেই। এ দিন ভোটাভুটির কাঁটা সরে যেতেই উচ্ছ্বসিত বাম ও কংগ্রেস শিবির। সোমেন মিত্রের কথাতেই সেই উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, ‘‘রাজ্যসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের যৌথ প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্য নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হল। সংসদের অভ্যন্তরেও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র হবে।’’
(আপনার আশপাশের পরিবর্তনের অংশ হতে চান? আমাদের খবর পাঠান ইমেল্ ও হোয়াটআপের মাধ্যমে)