ওয়াশিংটন: নিজের দেশের মানুষদের কাজের সুযোগ দিতে অভিবাসন বন্ধ করার পথে আমেরিকা। মঙ্গলবারই টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প বলেন, “গ্রেট আমেরিকান সিটিজেনদের বাঁচানোর জন্য আমি একটা এক্সিকিউটিভ অর্ডারে সই করছি। তাতে আপাতত আমেরিকায় অভিবাসন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।” বুধবার বিকেলে টুইট করে জানালেন এদিনই সেই নির্দেশে সই করতে চলেছেন তিনি।
কার্যত করোনার গ্রাসে আমেরিকা। সংক্রমণের জেরে ইতিমধ্যেই ৪৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। মঙ্গলবার এই অতিমারি নিয়ে হোয়াইট হাউসে বিবৃতি দেওয়ার সময়েই ট্রাম্প গ্রিন কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া ৬০ দিন স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন। তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন, ‘‘অভিবাসন আপাতত স্থগিত করলে, আমেরিকায় যখন কাজকর্ম শুরু হবে তখন মার্কিন নাগরিকরাই প্রথম সুযোগ পাবেন।’’ আপাতত ৬০ দিনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পর কি পুরনো নীতিতেই ফিরে যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেই সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কোনও গবেষণাগারে করোনার সৃষ্টি হয়নি, ফের চিনের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা WHO-র
I will be signing my Executive Order prohibiting immigration into our Country today. In the meantime, even without this order, our Southern Border, aided substantially by the 170 miles of new Border Wall & 27,000 Mexican soldiers, is very tight – including for human trafficking!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) April 22, 2020
তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, এই নীতি তাঁদের উপরেই কার্যকর করা হবে যাঁরা আমেরিকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে চান অর্থাৎ যাঁরা গ্রিন কার্ড চাইছেন। যাঁরা আমেরিকায় অস্থায়ী ভাবে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর হবে না। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দেশের মাটিতেও প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ তুলেছে, যথাসময়ে পদক্ষেপ না করার ফলেই এখন করোনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। আর সেই ক্ষোভ সামলাতে অন্য দিকে মোড় ঘোরাতে চাইছেন তিনি।
করোনা অতিমহামারীর জেরে আমেরিকায় চাকরি গিয়েছে রেকর্ড সংখ্যক কর্মীর। গত সপ্তাহে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ বেকারভাতার জন্য আবেদন করেছেন। দেশের নানা প্রান্তে যাতায়াতের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাছাড়া ভারত সহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসও বন্ধ।
আগামী নভেম্বরেই নির্বাচনে যেতে হবে ট্রাম্পকে। আমেরিকা যেভাবে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে, তাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্যই ট্রাম্প আপাতত অভিবাসন বন্ধ করে দিতে চাইছেন।
আরও পড়ুন: জলের চেয়েও সস্তা তেল! করোনার মারে টালমাটাল জ্বালানির বাজার