উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হওয়ার পর এবার সর্বভারতীয় ডাক্তারি পরীক্ষাতেও তাক লাগালেন মুর্শিদাবাদের কান্দির রুমানা সুলতানা (Rumana Sultana)। ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (NEET) ইউজি পরীক্ষায় সুলতানার স্থান ১,০৫৭ । তাঁর স্কোর ৯৯.৯২ শতাংশ। মেয়ের এমন সাফল্যে স্বাভাবিকভাবে খুশির হাওয়া পরিবারে। খুশি তাঁর শিক্ষকেরা।
মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরএলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হোটেল পাড়া। এখানকারই বাসিন্দা রুমানা সুলতানা। কান্দি মণীন্দ্রচন্দ্র গার্লস স্কুলের ছাত্রী সে। শিক্ষক পরিবারের সন্তান রুমানা। বাবা রবিউল আলম ভরতপুর থানার অচলা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক। মা সুলতানা পারভীন ভরতপুরের গয়সাবাদ অচলা বিদ্যামন্দিরে শিক্ষিকা। ফলে ছোটবেলা থেকে জ্ঞানার্জনে আগ্রহের একটা পরিবেশ ছিলই। রুমানা নিজেও পড়াশোনা করেছে ভালবেসে, স্রেফ পরীক্ষায় ভাল ফল করার প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে নয়। আর তার ফল পেয়েছে বারবার। ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছিল রুমানা। বিজ্ঞান বিভাগে ভরতি হওয়া ছাত্রীর লক্ষ্য ছিল, উচ্চ মাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করার।
২০২১ সালে অতিমারী করোনা (Corona Virus) আবহে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। উচ্চমাধ্যমিকে রুমানা পেয়েছিল পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯। তাঁর রেজাল্ট ঘোষণা করতে গিয়ে সংসদ সভাপতি বলেছিলেন, ”প্রথম হয়েছে রুমানা, প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯। এক মুসলিম কন্যা।” পরবর্তীতে সংসদ সভাপতির পদ থেকেও সরতে হয়েছিল মহুয়া দাসকে।
রুমানাকে কেন্দ্র করে সংসদ সভাপতি বিতর্কে জড়ালেনও তাঁকে এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। বরাবরই চুপ ছিলেন তিনি। তাঁর ধ্যান ছিল শুধুমাত্র পড়াশোনা। লক্ষ্য ছিল ডাক্তার হওয়া। সেই দিকেও আর একধাপ এগোলেন তিনি। উচ্চমাধ্যমিকের পর নিট পরীক্ষাতেও প্রশংসনীয় ফল করলেন রুমানা। এইমসে পড়তে চান তিনি।
উল্লেখ্য, সোমবার প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এনট্রান্স টেস্ট (NEET) ইউজি-এর ফল। এই সর্বভারতীয় পরীক্ষায় সফল হওয়ার পরে দেশের প্রথম সারির মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস (MBBS) কোর্সে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান পড়ুয়ারা। পরীক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় যত নম্বর পান, তার ওপর ভিত্তি করে এনপিএ অল ইন্ডিয়া কোটার ১৫ শতাংশ সিটের একটি মেধা তালিকা তৈরি করে। এর পাশাপাশি এনটিএ রাজ্য কোটার বাকি ৮৫ শতাংশ আসনের কাউন্সেলিং করে। রাজ্যের যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা বিভাগ অনুসারে প্রকাশ করা হয়। আর তার ভিত্তিতে রাজ্য নিজেদের মেধা তালিকা বানাবে।