বিচ্ছেদের পরেও অঙ্কিতার সাড়ে চার কোটি টাকার ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতেন সুশান্ত? শুক্রবার এই প্রশ্নেই তোলপাড় ছিল মিডিয়া। প্রথমে চুপ থাকলেও অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুললেন সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখণ্ডে।
২০১৬ সালে সুশান্ত-অঙ্কিতার সম্পর্কে ইতি পড়ে। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে প্রাক্তন প্রেমিকের পরিবারের যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন অঙ্কিতা -তাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসিত হয়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে এই খবর সামনে আসবার পর থেকেই অঙ্কিতাকে নানারকমের গুঞ্জন শুরু হয়। তবে এদিন মাঝরাতে সব জল্পনায় জল ঢেলে প্রমাণ সহ যোগ্য জবাব দিলেন সুশান্তের প্রাক্তন প্রেমিকা।
Here i cease all the https://t.co/Hijb7p0Gy6 transparent as I could https://t.co/YUZm1qmB3L Flat's Registration as well as my Bank Statement's(01/01/19 to 01/03/20)highlighting the emi's being deducted from my account on monthly basis.There is nothing more I have to say? pic.twitter.com/qpGQsIaOGw
— Ankita lokhande (@anky1912) August 14, 2020
টুইট বার্তায় অঙ্কিতা লেখেন, ‘এখানেই সব জল্পনা শেষ হোক। আমি ততটাই স্বচ্ছ হওয়ার চেষ্টা করলাম, যতটা হওয়া সম্ভবপর। আমার ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন এবং আমার ব্যাঙ্কের টেস্টমেন্ট। ১লা জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ১লা মার্চ ২০২০ পর্যন্ত। যেখানে হাইলাইট করা রয়েছে, যে আমার ফ্ল্যাটের ইএমআইয়ের টাকা আমার খাতা থেকেই প্রতিমাসে কাটা হয়েছে। এর থেকে বেশি আমার কিছু বলবার নেই। #justiceforssr’। অঙ্কিতা নিজের ফ্ল্যাটের দলিলের স্ক্রিনশটও এদিন শেয়ার করে নেন। যেখানে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে ২০১৩ সালের মে মাসে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় মালাডের ইন্টারফেস হাইটস আবাসনের চারতলায় একটি ফ্ল্যাট কেনেন অঙ্কিতা। যার জন্য সেই সময়ই তিনি ৬.৭৫ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প ডিউটিও ভরেছিলেন।
অঙ্কিতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খণ্ডন করেছেন খোদ সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি। তিনি অঙ্কিতার পোস্টের নিচে কমেন্টে লেখেন, ”তুমি অর্থনৈতিকভাবে নিজের উপরই নির্ভরশীল, স্বাধীন একজন মহিলা। তোমার জন্য গর্ব হয় আমার ” । অঙ্কিতার পাশে দাঁড়িয়ে মহেশ শেঠি লেখেন, ”তোমার প্রমাণ দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। তোমার জন্য গর্ব হয়।”
আরও পড়ুন: ‘ফেলুদা ফেরত’ আসছেন পুজোর আগেই! সিনেমা নয়, এবার সৃজিত পরিচালিত ওয়েব সিরিজে
শুক্রবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর খবর, এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছিলেন,মুম্বইয়ের মালাড অঞ্চলে প্রাক্তন বান্ধবীরএকটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতি মাসের ইএমআই দিয়ে যেতেন সুশান্ত। প্রাক্তন বান্ধবী থাকলেও সুশান্তের নামেই ফ্ল্যাটটি। ইডি সূত্রে এ-ও জানা যায়, রিয়া নাকি জেরায় জানিয়েছেন সুশান্তের সেই প্রাক্তন বান্ধবী আদপে অঙ্কিতা লোখণ্ডে। যার সঙ্গে ৬ বছর সম্পর্কে ছিলেন সুশান্ত।
EMI of a flat where #SushantSinghRajput's friend and actor Ankita Lokhande used to stay, was deducted from Sushant's bank account. This flat is registered in Sushant's name: ED (Enforcement Directorate) Officer pic.twitter.com/ZusHOFIJaw
— ANI (@ANI) August 14, 2020
তাহলে ইডির দাবি কী মিথ্যা? আসলে বিষয়টি হল ২০১৩ সালের মে মাসে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকায় মালাডের ইন্টারফেস হাইটস আবাসনে অঙ্কিতার পাশাপাশি একটি ফ্ল্যাট কেনেন সুশান্ত সিং রাজপুতও। ৬৮৩ স্কোয়ার ফিটের সেই ফ্ল্যাটটির ইএমআইয়ের টাকাই টাকা হত সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে।সুশান্তও নিজের ফ্ল্যাটের জন্য ৬.৭৫ লক্ষ টাকাই স্ট্যাম্প ডিউটি হিসাবে ভরে ছিলেন। তাঁর ফ্ল্যাটটির তখন মূল্য ছিল ১.৩৫ কোটি টাকা, যার বর্তমান বাজার দর ৪.৫ কোটি টাকা। এই আবাসনে অঙ্কিতার ফ্ল্যাট নম্বর হল ৪০৪ এবং সুশান্তের ফ্ল্যাটের নম্বর ৪০৩। চারতলাতেই দুজনের ফ্ল্যাট। সুশান্ত অন্ধেরি থেকে মালাডের ওই ফ্ল্যাটে শিফট করেছিলেন ২০১৩ সালে।
বিচ্ছেদের পর সুশান্ত বান্দ্রার এক ফ্ল্যাটে চলে গেলেও অঙ্কিতা থেকে যান। পরে নাকি পাশাপাশি ওই দুই ফ্ল্যাটের সংযোগকারী দেওয়াল ভেঙে একটি বড় ফ্ল্যাটের আকার দেওয়া হয়। সে কারণেই নাকি অঙ্কিতার ফ্ল্যাটে আজও নেমপ্লেটে তাঁর নামের পাশপাশি দেখা যায় সুশান্তের নাম। যেহেতু ৩০৩নম্বর ফ্ল্যাটটি সুশান্তের নামে কেনা হয়েছিল তাই তারই ইএমআই বাবদ টাকা দিতেন সুশান্ত।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, অঙ্কিতার ফ্ল্যাট বাবদ যদি সুশান্ত টাকা না দিয়ে থাকেন তবে ইডি’র কথা অনুযায়ী কোন প্রাক্তন বান্ধবীর জন্য মাস গেলে ইএমআই দিতেন সুশান্ত? অন্য দিকে ইডি সূত্রে শুক্রবারই জানা গিয়েছিল, সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে রিয়ার অ্যাকাউন্টে কোনওরকমের বড় লেনদেন নজরে আসেনি তাদের। তবে গত বছর নভেম্বর মাসে সুশান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েক বার বড় অঙ্কের টাকা তোলা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে ফিক্স ডিপোজিটও।
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতি বারই টাকা তোলার জন্য ব্যাঙ্কে আসতেন সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা। স্যামুয়েলকে নিযুক্ত করেছিলেন রিয়াই। সুশান্ত জীবিত থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে নিয়মিত কথা হত রিয়ার। তবে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে স্যামুয়েল বা রিয়া কেউই কাউকে ফোন করেননি। ইতিমধ্যেই স্যামুয়েলকে জেরা করেছে ইডি। সুশান্তের বাবা যে এফআইআর করেছিলেন তাতে রিয়া ও তাঁর পরিবারের পাশাপাশি নাম রয়েছে স্যামুয়েলেরও।
আরও পড়ুন: ক্যানভাসে ফুটে উঠল জাতীয় পতাকা, গিটারে জাতীয় সঙ্গীতের সুর তুললেন নুসরত