ওয়েব ডেস্ক: তিনি যে একজন দক্ষ অভিনেতা, সেটা ভিকি কৌশল অনেক আগেই প্রমাণ করেছেন। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও তিনি অনেককে ছাপিয়ে গিয়েছেন। বিশেষ করে মহিলা মহলে ভিকির জনপ্রিয়তার কথা নতুন করে না বললেও চলে তবে অনেকেই হয়ত জানেন না একজন ভালো অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি ভিকি পড়াশোনাতেও তুখোড় ছিলেন।
ফিল্ম ইন্ডিস্ট্রির অ্যাকশন ডিরেক্টর শ্যাম কৌশলের ছেলে হয়েও ভিকি কৌশল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে ভিকি চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতেও যান। একটি জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের আয়োজিত অনুষ্ঠানে গিয়ে একথা নিজেই জানিয়েছিলেন ভিকি। ভিকির বলেছিলেন, ”২০০৪-২০০৯ আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ি। আমি ক্যাম্পাস ইন্টারভিড দিতেও গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম ইঞ্জিনিয়ারিং আমার জন্য নয়। আর সেদিনই প্রথম অভিনয়ের চিন্তা আমার মাথায় আসে। তারপরই আমি অভিনয় নিয়ে লেগে পড়ি। ছোটবেলায় মঞ্চে ভালো অভিনয় করতাম। অমল পালেকর আমার পছন্দের অভিনেতা। ওনার সিনেমার ওই দৃশ্যের মত আমি টাই পরে ইন্টারভিউ দিতে চেয়েছিলাম।”
ভিকি আরও জানিয়েছিলেন, ”আমি জানতাম আমি কোন ইন্টারভিউ দিয়ে অভিনেতা হতে পারব না। তবুও ওই ভালোলাগা থেকেই আমি ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম। গ্রুপ ডিসকাশন রাউন্ড পার করে আমি ইন্টারভিউ রাউন্ড পর্যন্ত পৌঁছেও গিয়েছিলাম। তবি আমি চিন্তিত ছিলাম না, কারণ, কোনওদিনই আমি চাকরি করতে চাই নি।”
ভিকির কথায়, ”আমি এটাও জানতাম, ইন্টারভিউতে আমাকে এটাও প্রশ্ন করা হবে যে আমার বাবা যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত, তখন আমি কেন হিরো হতে যাই নি। এই প্রশ্নের উত্তরের জন্যও আমি তৈরি ছিলাম। আমি ওদেরকে বলেছিলাম, আমি ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। আমি প্রিজন ব্রেক বলে একটি টেলি সিরিজ দেখে ছিলাম। সেখানও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য একটি চরিত্র ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিল। ওই চরিত্রটি নির্বাচিত হয়েও যায় কারণ, সে ওটা পারতো। আর ঘটনাচক্রে আমিও চাকরিটা পেয়ে যাই।”
চাকরিটা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি কিন্তু শেষমেষ করেননি। অনুরাগ কাশ্যপের গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর-এ সহকারী হিসেবে কাজ করার সময় ভিকির সঙ্গে নীরজের আলাপ হয়। নীরজ তখন মাসান-এর চিত্রনাট্যের ওপর কাজ করছিলেন। ভিকি যে চরিত্রটি করেন তা আগে রাজকুমার রাও মনোজ বাজপেয়ীকে অফার করা হয়। রাজকুমার ৫ মিনিটের প্রোমো শ্যুটও করেন। কিন্তু ডেটের সমস্যায় রাজকুমার চরিত্রটি করেননি, ডাক পান ভিকি। প্রথমে ভেবেছিলেন, ছোট রোল। এক সপ্তাহ পরে নীরজের ফোন আসে, তিনিই মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নওয়াজ উদ্দিনকে খুঁজছে মুম্বই পুলিশ ! দেখে নিন ‘ঘুমকেতু’র TEASER
মাসান-এ ভিকির চরিত্র ছিল এক চণ্ডালের, পারিবারিক পেশা হিসেবে যিনি মড়া পোড়ান। বারাণসীর ঘাটে গিয়ে প্রথমবার তাঁর নাকে মড়া পোড়ার গন্ধ আসে। প্রথমদিন মিনিট কুড়ির বেশি সেখানে থাকতে পারেননি। কিন্তু ঠিক করেন, রোজ ঘাটে যাবেন। শেষকৃত্য়র সময় হওয়া রামনাম রেকর্ড করে নেন তিনি, রাতে তা শুনতেন। একটি দৃশ্যে তাঁকে নেশাগ্রস্ত দেখানোর কথা ছিল, সে জন্য তিনি প্রকৃতই মদ পান করেছিলেন।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্ট্যান্ডিং ওভেশন পায় মাসান। ভিকি বলেছেন, সেটি এক দুর্লভ মুহূর্ত , যখন দেশপ্রেম অনুভব করেন তিনি। বুঝতে পারেন, দর্শক কোনও ব্যক্তির জন্য এই হাততালি দিচ্ছেন না, দিচ্ছেন অসাধারণ একটি ছবির জন্য যা ভারত থেকে এসেছে।ভিকি জানতেন না, কয়েক বছরের মধ্যে তিনি ভারতের অন্যতম সেরা হিট দেশপ্রেমমূলক ছবির নায়ক হবেন- উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক। এই ছবি তারকা করে দেয় তাঁকে। রামন রাঘব ২.০, রাজি, সঞ্জু- সবেতেই তাঁর পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে।
১৬ মে নিজের ৩২ বছরের জন্মদিন সেলিব্রেট করছেন ভিকি কৌশল। আর জন্মদিনেই উঠে এসেছে ইঞ্জিনিয়ার থেকে ভিকির অভিনয় জগতে পা রাখার কথা।
আরও পড়ুন: গায়িকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ, জন্মদিনে নতুন সফর শুরু করলেন মাধুরী দীক্ষিত