পরিচালক কবীর খানের মতে, ভারতীয় ছবিতে মুঘল সম্রাটদের খলনায়ক হিসাবে তুলে ধরার যে ট্রেন্ড দেখা যায়, তা বেশ ‘অস্বস্তিকর এবং সমস্যাযুক্ত’। ‘এক থা টাইগার’ পরিচালক মনে করেন, সেগুলি বেশিরভাগ সময়ই ঐতিহাস নির্ভর হয় না বরং, প্রচলিত লোকগাথা অনুসরণ করা হয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’, ‘নিউ ইয়র্ক’-এর মতো ছবির পরিচালক জানিয়েছেন, সেই সকল ছবির প্রতি তাঁর কোনও শ্রদ্ধা নেই যা মুঘল সম্রাটদের খলনায়ক হিসাবে তুলে ধরে, কারণ ‘প্রকৃতঅর্থে ভারত গড়েছিলেন’ মুঘলরাই। বলিউড হাঙ্গামাকে তিনি বলেন, ‘আমি সত্যি বলতে আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এটা ভীষণরকমভাবে সমস্যাযুক্ত এবং অস্বস্তিকর। সেই অস্বস্তিরমূল কারণ হল সকলে প্রচলিত কথার উপর ভিত্তি করে সেই ছবি বানায়। একজন ফিল্মমেকার ইতিহাসনির্ভর ছবি করলে নিজে রিসার্চ করবেন, এবং সেই তথ্য-অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করেই ছবি তৈরি হবে। সেখানে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে, তবে যদি আপনি মুঘলদের খতিকারক হিসাবে তুলে ধরতে চান দয়া করে সেটা যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। বুঝিয়ে দিন কেন তাঁরা ভিলেন ছিল? বা আপনি কেন সেটা মনে করছেন। ….. আমি সত্যি এর পিছনে ইতিহাস পড়ে কোনও যুক্তি খুঁজে পাই না। আমার তো মনে হয়, তাঁরা প্রকৃত অর্থে আমাদের দেশ গড়েছে। তাঁদের এক্কেবারে ছেঁটে ফেলা, এটা বলা তাঁরা হত্যাকারী, সেটার পিছনের তথ্য-প্রমাণ কই? শুধুমাত্র তুমি জনপ্রিয় হবে বলে ইতিহাসবিকৃত করা অনুচিত’।
আরও পড়ুন: Viral food hack: তরকারিতে বেশি তেল পড়ে গেল? দেখুন তো এই কৌশল কাজে লাগে কিনা
কবীর খানের কথায়, আজকের দিনে মুঘল এবং অন্য সকল মুসলিম শাসকদের খাটো করে দেখানোটা খুব সহজ কাজ। তবে পরিচালক যোগ করেন এটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। ‘পদ্মাবত’, ‘পানিপথ’, ‘তানাজি’-র মতো বহু ছবিতে সাম্প্রতিক সময়ে মুঘল ও মুসলিম শাসকদের নেগেটিভভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি ‘তানাজি’ অভিনেতা সইফ আলি খান নিজে বলেছিলেন ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। সেই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।
চলতি সপ্তাহেই মুক্তি পেতে চলেছে ডিজনি প্লাস হটস্টারের বহুচর্চিত সিরিজ ‘দ্য এম্পায়ার’, মুঘল সম্রাট বাবরের কাহিনি ফুটে উঠবে এই সিরিজে। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে কবীর খানের পরবর্তী ছবি ‘৮৩’। করোনার জেরে গত বছর থেকে মুক্তি আটকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই ছবি।
আরও পড়ুন: পাখায় ধুলো-ময়লা জমেছে? জানুন নিমেষে পরিষ্কার করার উপায়