বিপাকে অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) ও তাঁর সঞ্চালিত জনপ্রিয় গেম শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ (KBC)। শোয়ের একটি প্রশ্ন ঘিরে দানা বেঁধেছে ক্ষোভ। অভিযোগ উঠেছে হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করার। ইতিমধ্যেই লখনউতে একটি FIR দায়ের হয়েছে বিগ বি ও শোয়ের নির্মাতাদের বিরুদ্ধে। ডাক দেওয়া হয়েছে শো বয়কটেরও।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার, কেবিসি ১২-এর মঞ্চের এক প্রশ্নকে ঘিরে। কর্মবীর স্পেশ্যাল এই এপিসোডে হাজির হয়েছিলেন সমাজকর্মী বেজওয়দা উইলসন এবং অভিনেতা অনুপ সোনি।ওইদিন প্রতিযোগী সমাজকর্মী বেজওয়াদা উইলসন ও অভিনেতা অনুপ সোনিকে ৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার যে প্রশ্ন করেন বিগ বি তা নিয়েই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
অমিতাভ জানতে চান- ২৫ ডিসেম্বর ১৯২৭ সালে বি আর আম্বেদকর এবং তাঁর সঙ্গীরা কোন ধর্মগ্রন্থের প্রতিলিপি জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন ? চারটি অপশন হিসাবে সামনে রাখা হয়- A) বিষ্ণু পুরাণ, B) ভগবত গীতা C)ঋকবেদ এবং D) মনুস্মৃতি।
আরও পড়ুন : দেশে কমল সোনা ও রুপোর দাম,বাজারের চোখ মার্কিন নির্বাচনের দিকে
KBC has been hijacked by Commies. Innocent kids, learn this is how cultural wars are win. It’s called coding. https://t.co/uR1dUeUAvH
— Vivek Ranjan Agnihotri (@vivekagnihotri) October 31, 2020
যার সঠিক উত্তর ‘মনুস্মৃতি’। প্রতিযোগী উত্তরটি সঠিকভাবে উত্তর দেওয়ার পর বর্ষীয়ান মেগাস্টারকে সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা করতেও দেখা যায়। তিনি জানান, ড. বিআর আম্বেদকর প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থটির সমালোচনা করেছিলেন এবং তার বেশ কিছু কপি পুড়িয়েও দিয়েছিলেন।প্রতিযোগী উত্তরটি সঠিকভাবে উত্তর দেওয়ার পর বর্ষীয়ান মেগাস্টারকে সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা করতেও দেখা যায়।
পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- ‘কেবিসিকে কমিউনিস্টরা হাইজ্যাক করে নিয়েছে। নিষ্পাপ শিশুরা তোমরা শেখো কীভাবে সাংস্কৃতিক যুদ্ধ জিততে হয়, এটাকে কোডিং বলে’।
শুধু লখনউতেই এফআইআর দায়ের হয়েছে তা নয়, মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার আসুয়ার বিজেপি বিধায়ক অভিমন্যু পাওয়ার জেলার এসপি নিখিল পিঙ্গলের কাছে এই বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।হিন্দু ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানা এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টায় অমিতাভ, সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি। বিজেপি বিধায়ক আরও জানান, চারটি অপশনেই হিন্দু গ্রন্থের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, এটি স্পষ্ট যে এই প্রশ্নের মাধ্যমে হিন্দু ধর্মের মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হানার চেষ্টা হয়েছে।
এই ঘটে শুনে অনেকে বলেছেন মোদী সরকার ও আরএসএস দেশটাকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলো, দেশটা সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে। তবে মিডিয়া অনেকটা ব্যালেন্স করছে। ‘হিন্দু মৌলবাদী’ কথাটা এখনও কেউ ব্যবহার করছে না। ওটা মুসলিমদের জন্য তোলা রয়েছে। হিন্দুদের ক্ষেত্রে ক্ষুব্দ নেটিজেন ব্যবহার করা হচ্ছে।
এইভাবে চলতে দিলে অচিরেই এই দেশটি হিন্দু ‘পাকিস্তানে’ পরিণত হবে। মজার কথা হল, পাকিস্তান খানিকটা গণতান্তিক দিকে খুঁড়িয়ে এগোচ্ছে। আর ভারত নকল করছে পুরনো পাকিস্তানের অশুভ শাসন পদ্ধতি । সেনাকে রাজনীতিতে ব্যবহারের চল ভারতীয় রাজনীতিতে ছিল না। এদেশের হিন্দুদের ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা শোনা যেত বিদেশেও । কিন্তু এখন সংঘের ও মোদী সরকারের কল্যাণে যাত্রা যেদিকে, তাতে এইভাবে চললে এদেশের পাকিস্তান হয়ে পড়া রুখে সাধ্য কার !
আরও পড়ুন : ধর্ষণের চেষ্টা, জানাজানির ভয়ে ১৭ বছরের ভাইঝিকে খুন দিল্লির দম্পতির