গল্পটা হয়তো অনেকেরই জানা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বিলবোর্ড-এর ‘উওম্যান অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কার নেওয়ার সময়ে মঞ্চেই ভেঙে পড়েছিলেন আন্তর্জাতিক সঙ্গীতের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকাদের অন্যতম সেলেনা গোমেজ। এই সুন্দরীর প্রতিভায়, আবেদনে সারা পৃথিবীর তরুণ প্রজন্ম মুগ্ধ। কিন্তু এই অপরূপ সুন্দরীর জীবন থমকে যেত বছর তিনেক আগে যদি না সেলেনার পাশে দাঁড়াতেন তাঁর বান্ধবী ফ্রান্সিয়া রায়সা।
ফ্রান্সিয়া মূলত অভিনেত্রী এবং সেলেনার সঙ্গে তাঁর আলাপ হয় একটি সেলিব্রিটি ইভেন্টে। সেলেনা যখন জানতে পারেন যে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে ‘লিউপাস’, প্রথমে তিনি বোঝেননি কতটা মারাত্মক এই রোগ। এটি একটি অটোইমিউন ডিজিজ যা শরীরে প্রতিরোধ শক্তিকে ভেঙে দেয় এবং একে একে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খারাপ হতে থাকে।
এই রোগকে উপেক্ষা করে সেলেনা ওয়র্ল্ড ট্যুর করেছেন, দিনের পর দিন স্টেজে পারফর্ম করেছেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা যখন তাঁকে জানান যে অবিলম্বে তাঁর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন, সেলেনা ভেঙে পড়েন। যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করতে হবে অথচ ডোনর পাওয়া মুশকিল। তখনই এগিয়ে আসেন ফ্রান্সিয়া। বন্ধুকে জানান যে তিনি ডোনর হতে চান।
আরও পড়ুন: কাটলো না আশঙ্কা! দ্বিতীয় পরীক্ষাতেও কোয়েল ও নিসপালের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ
দু’জনের কাছেই অপারেশনটা অত্যন্ত জটিল এবং জীবননাশকারী ছিল, সেলেনার ক্ষেত্রে একটু বেশি। কারণ ট্রান্সপ্লান্টের আগেই সেলেনার আরটারি ড্যামেজ হয়, তবে শেষ পর্যন্ত সেলেনার বেঁচে থাকার, লড়াই করার অদম্য ইচ্ছা এবং ফ্রান্সিয়ার পবিত্র বন্ধুত্বের জয় হয়। তাই বিলবোর্ড-এর পুরস্কার মঞ্চে উঠে সেলেনা বলেন যে এই পুরস্কার শুধু ফ্রান্সিয়ারই প্রাপ্য! বন্ধুত্বের ইতিহাসে চিরকাল ভাস্বর হয়ে থাকবে সেলেনা ও ফ্রান্সিয়ার এই কাহিনি। রক্তের সম্পর্ক নয়, আদি অকৃত্রিম প্রাণের টান।
অন্যদিকে, প্রাক্তন প্রেমিক কানাডীয় গায়ক জাস্টিন বিবারের কাছে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন মার্কিন গায়িকা সেলেনা গোমেজ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিবারের সঙ্গে সম্পর্কের চড়াই-উতরাইয়ের দিনগুলোর কথা স্মরণ করলেন সেলেনা। এই বছরের জানুয়ারি মাসে সেই মানসিক হয়রানির ফিরিস্তি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে ও রকম হয়রানির ভেতর দিয়ে যাওয়াটা ছিল ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা। যদিও আমি সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা হারাইনি, কিন্তু হয়রানির যন্ত্রণাটা পলে পলে টের পেয়েছি।’
সাক্ষাৎকারে ‘লুজ ইউ টু লাভ মি’ গানটি প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়। সরাসরি তিনি স্বীকার করেছেন যে গানটি বিবারকে নিয়েই লেখা। তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তবয়সী একজন মানুষ হিসেবে বিষয়গুলো আমি বুঝতে চেষ্টা করেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এসবের মধ্যে জীবন কাটানো যাবে না। আমি সৌভাগ্যবান যে তখন যথেষ্ট শক্ত থাকতে পেরেছি। ওই গানটি তখন আমার প্রেরণা হয়ে উঠেছিল।’ বিবারের সঙ্গে কাটানো সময়ের সবটাই খারাপ ছিল না। গানটির মাধ্যমে সেটাও জানিয়েছেন সেলেনা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইনস্টাগ্রামে বিরাট একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন বিবার। সেখানে লিখেছিলে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মাদক কীভাবে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল, আর তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নারীরা কীভাবে এর আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১১ সালে প্রথম সেলেনার সঙ্গে প্রেমে জড়ান বিবার। ২০১৮ সালে শেষবারের মতো বিচ্ছিন্ন হন তাঁরা। গত বছর মার্কিন মডেল হেইলি ব্যাল্ডউইনকে বিয়ে করেন বিবার। তবে সেলেনা গোমেজ এখনো বিয়ে করেননি।