The News Nest: বলি তারকা জিয়া খানের মৃত্যুর ৭ বছর পেরিয়ে গেছে প্রায়। আজ থেকে ৭ বছর আগে ৩ জুন আত্মহত্যা(!) করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জিয়া। ঠিক কী কী ঘটনা ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে! কেন তিনি বেছে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন আত্মহত্যার পথ!
২৫ বছরের জিয়া মুম্বইতে নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে তিনি লিখে যান সুইসাইড নোট। প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন তিনি এই চিঠি। চিঠিতে উঠে এসেছিল জিয়া ও সুরজের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা। দীর্ঘ চিঠিতে জিয়া তাঁর একাকীত্ব ও অসহায়ত্বের জন্য সুরজকে দায়ী করেন। তিনি লেখেন, ‘হয়তো তুমি কখনো জানবে না, তুমি আমার এমন গভীরে স্পর্শ করেছো যার জন্য আমি তোমার প্রেমে হারিয়ে গেছি। যদিও তুমি প্রতিদিন আমার ওপরে নির্যাতন চালাতে, তবুও। আজকাল আমি কোন আলো দেখি না। ঘুম ভাঙ্গলেও আমি চাই না ঘুম ভাঙ্গুক। একটা সময় ছিল যখন আমি তোমার সঙ্গে জীবনযাপনের কথা ভাবতাম, ভবিষ্যতের কথা ভাবতাম।’
নিজের ভয় পাওয়ার কথাও বলেছিলেন জিয়া। লিখেছিলেন, ‘গর্ভধারণের ভয় হচ্ছিল, কিন্তু এরপরও তুমি যে কষ্ট দিয়েছ তা বরণ করে নিয়েছি। প্রতিটি দিন তা আমাকে কুড়েকুড়ে খেয়েছে, আমার মনকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমি খেতে, ঘুমাতে, ভাবতে বা কোন অনুষ্ঠানে যেতে পারি না। সবকিছু থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ক্যারিয়ারের কোন আশাও আর নেই।’
সুরজের সঙ্গে পরিচয় থেকে প্রেম, তারপর আরও বেশি ঘনিষ্ঠতার বর্ণনা দিয়েছেন জিয়া তাঁর চিঠিতে। নিজের নির্যাতিত হওয়ার ও যন্ত্রণায় ভোগার বর্ণনা চিঠিতে ছড়িয়ে রয়েছে। তিনি লিখেছেন: ‘আমি জানি না কেন বিধাতা আমাদের সাক্ষাত্ করালেন। যে যন্ত্রণা, ধর্ষণ, দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের শিকার আমি হয়েছি, তার তো কথা ছিল না। কোন ভালোবাসা বা অঙ্গীকার তোমার মধ্যে দেখিনি। দিন দিন কেবল ভয় পেয়েছি, এই তুমি পেটাবে বা বকাবকি করবে। নারী আর পার্টি নিয়ে তোমার জীবন। আমার জীবনে ছিলে শুধু তুমি আর আমার কাজ। বেঁচে থাকলে তোমাকে আমি ব্যাকুলভাবে চাইতাম। তাই নিজের ১০ বছরের পেশা ও স্বপ্নকে চিরবিদায় জানালাম। তোমাকে বলিনি, কিন্তু তোমার একটি বিষয় আমার কানে এসেছিল। তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছ।’
জিয়া আরও লিখেছেন: ‘আমার সঙ্গে প্রতারণা করার পরও আমি তোমার জন্য ছিলাম। ভীষণ কষ্ট পেলেও আমাদের সন্তানকে আমি গর্ভপাত করিয়েছিলাম।… তুমি বলেছিলেন এক বছরের মধ্যে আমাদের বাগদান হবে। কিন্তু তুমি কথা রাখনি।’ চিঠির শেষে জিয়া লিখেছেন, ‘আমি কেউ নই। আগে আমার সব ছিল। এখন তোমার সঙ্গে থাকলেও আমার একা লাগে। তুমি আমাকে নিঃস্ব ও অরক্ষিত করে দিয়েছ। অথচ আমি এর চেয়েও বেশি কিছু।
জিয়া খানের মৃত্যুর পর সুরজ পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছিল। সিবিআই তদন্ত হয়েছিল। জিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় সুরজকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। কিছুদিন জেলের চার দেয়ালে বন্দী থাকার পর জামিনে মুক্তি পান বলিউডের প্রভাবশালী ও বিতর্কিত অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ।
যদিও জিয়ার মা রাবেয়া আমিনের অভিযোগ তাঁর মেয়েকে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। উল্লেখ্য, জিয়া খান শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম অভিনয় করেছিলেন ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিল সে’ ছবিতে। এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৭ সালে অভিনয় করেন রাম গোপাল ভার্মার ‘নিঃশব্দ’ ছবিতে। ছবিটিতে অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন জিয়া। পরে অভিনয় করেন ‘গজনি’ (২০০৮) ও ‘হাউসফুল’ (২০১০) ছবিতে।