শিকড়ের সন্ধান! নেটফ্লিক্সের ভারত-ফ্রান্স যৌথ ছবিতে অনবদ্য ‘পরম’-প্রাপ্তি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ওয়েব ডেস্ক: আজকের পৃথিবীতে বিশ্বনাগরিক কথাটা ক্লিশে হয়ে গেছে। বহু ক্ষেত্রেই বহু ভাবে এই শব্দ আজ কঠোর বাস্তব। কিন্তু তবু যেন কোথাও নিজের শিকড়ে ফিরতে চাওয়ার টান অনুভব করেন কেউ কেউ। নিছক কৌতুহলে অথবা অন্য কোনও আকর্ষণে মানুষ ফিরে যায় ছেড়ে আসা দেশে। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ইন্দো-ফরাসী ছবি ‘লা প্যাত্রি’ বা ‘হোমল্যান্ড’ সেই টানের কথাই বলেছে।

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ও তাঁর ছবি ‘হোমল্যান্ড- লা প্যাট্রি’-তেও এক ফরাসি মেয়ের শিকড় খুঁজে বের করার গল্প বলেছেন। ভারত ও ফ্রান্সের যৌথ উদ্যোগে তৈরি প্রথম ছবি ‘হোমল্যান্ড- লা প্যাট্রি’। এই মুহূর্তে ছবিটি নেটফ্লিক্সে স্ট্রিমিং হচ্ছে। ছবিতে অন্যতম প্রধান চরিত্রে রয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবির শুরুই হয় জন লেননের বিখ্যাত গান ইম্যাজিনের দুটি লাইন দিয়ে।

একদিকে যেমন এই ছবি শিকড় খোঁজার গল্প বলেছে। তার সঙ্গেই প্রায় পরতে পরতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে আসলে শিকড় বা ঘর খুঁজে পাওয়া যায় পৃথিবীর নানা প্রান্তে। ভাষা কখনও সীমা হতে পারে না । আর তাই ছবিতে ইংরেজি-ফরাসি-বাংলা-সহ একাধিক ভাষায় সংলাপ রয়েছে। মানুষের টেনে দেওয়া সীমাকে এভাবে ভেঙেছেন পরিচালক। খুঁজতে খুঁজতে ভেসে চলার কথা খুব সহজে দেখিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের মায়ের কান্নাভেজা গল্প বলছে নন্দিতা রায়ের ‘কাজল মাসি’, দেখুন…

ছবির নায়িকা অ্যানি আর্মেনিয়ার বাসিন্দা। তাঁর বাবা মা বহুদিন আগে ফ্রান্স ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু আ্যানি তাঁর মায়ের মুখে বহুবার শুনেছে ফ্রান্সের এক ছোট্ট গ্রাম কমেন্সির কথা। শুনেছে সে গ্রামে বয়ে যাওয়া নদীর গল্প, তাঁর দাদু শুয়ে আছে যে নির্জন কবরখানায়, তার কথা। শিকড় খোঁজার অদম্য বাসনায় অ্যানি কমেন্সির এক পরিচিতর সূত্র ধরে চলে আসে সে গ্রামে। কিন্তু সেই ছেলেটি নিজেই ওই গ্রামের বাসিন্দা নয়, মিথ্যে বলেছিল সে অ্যানিকে। অ্যানি বুঝতে পারে যে গ্রামের নদী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল, পাল্টে গেছে সময়। ছেড়ে যাওয়া গ্রাম বা শহর অনেক ক্ষেত্রেই আপন করে নেয় না। কিছুটা মন খারাপ করেই সে চলে আসে প্যারিসে। সেখানেই তাঁর আলাপ হয় ভারত থেকে যাওয়া ‘গঙ্গা’র সঙ্গে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গঙ্গার সান্নিধ্যে এসে পাল্টে যায় অ্যানির চিন্তাভাবনা। নানা দেশে ঘুরে বেড়ানো গঙ্গা পাল্টে দেয় অ্যানির মনজগতের হোমল্যান্ড।

image

 গঙ্গা নদী যেমন ভারতের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে বয়ে চলেছে তেমনই ছবিতে পরমব্রতর চরিত্রটিও বয়ে চলেছে স্থান থেকে স্থানান্তরে। তিনি কোনও নির্দিষ্ট একটি জন্মভূমিতে বিশ্বাসী নন। সমস্ত পৃথিবীটাকেই জন্মভূমি বা বাসভূমি মনে করেন তিনি। আর তাঁর সঙ্গে পরিচয়ের পরেই পাল্টে যায় অ্যানির শিকড় সম্পর্কে ধারণা। তার পরে কি শিকড়ের সন্ধান পায় সে? সেই উত্তর পেতে গেলে নেটফ্লিক্সে দেখা যায় এই ছবি। বিশেষত এই করোনার দাপটে যখন সারা বিশ্ব এক লড়ছে তখন যেন এই ছবি আরও বেশ কিছুটা প্রাসঙ্গিক। কারণ সে অর্থে দেখতে গেলে করোনা যেন গোটা বিশ্বকে একসঙ্গে সঙ্কট-গাঁথায় বেঁধে রেখেছে।

ছবিতে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় অনবদ্য। যে মুহূর্ত থেকে ছবিতে তাঁর উপস্থিতি, তখন থেকেই যেন ছবির গতি আরও বেড়ে যায়। কারণ তাঁর চরিত্রটি থেমে থাকার কথা বলে না। তবে প্রথম দিকের কিছু দৃশ্যের গতি আর একটু বাড়তে পারত। ছবির কিছু শটে সামান্য টেকনিকাল সমস্যা চোখে পড়লেও, তা এড়িয়ে যাওয়া যায়। কারণ গোটা ছবিটাই তৈরি হয়েছে প্রাকৃতিক আলোয়। আর এই স্বাভাবিক প্রেজেন্টেশন ছবিটিকে যেন আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।

আরও পড়ুন: সহমর্মী! করোনা মোকাবিলায় পুলিস কর্মীদের বিশেষ ধরনের রিস্ট ব্যান্ড দিলেন অক্ষয়

Gmail 1

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest