আদালতের নির্দেশ অমান্য করে অষ্টমীর সকালে সুরুচি সংঘের মণ্ডপে অঞ্জলি দিয়ে আইনি নোটিশের মুখে নুসরত-সৃজিতরা। তাঁদের আইনি নোটিশ পাঠাতে চলেছেন পুজো অনুমতি সংক্রান্ত মামলার আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। শনিবার সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন সব্যসাচীবাবু নিজে। সঙ্গে অন্য যারা আইন ভঙ্গ করেছেন তাঁদেরও আইনি চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগে থেকেই দর্শকশূন্য দুর্গাপুজোর নির্দেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। দুর্গাপুজোয় পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধিপুজো ও সিঁদুর খেলাতেও ছাড় দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। তবে কলকাতার অন্যতম মেগাহিট পুজো সুরুচি সংঘের পুজোয় টলিউডের প্রথম সারির সেলেব্রিটিরা উপস্থিত থাকলেন। এদিন অষ্টমীর সকালেই পুজো প্রাঙ্গনে দেখা গেল সস্ত্রীক পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও স্বামীকে নিয়ে সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহানকেও। পুজোর অন্যতম আয়োজক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পাশে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দিলেন সৃজিত-মিথিলা, নুসরত-নিখিল।
আরও পড়ুন: সাত পাকে বাঁধা পড়লেন নেহা কক্কর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বিয়ের ভিডিও
নির্দেশ অনুযায়ী, উদ্যোক্তা ছাড়া আর কারও পুজো মন্ডপের ভিতরে ঢোকা বারণ। তাহলে সেলিব্রিটি বা তাঁদের স্ত্রী-স্বামী হলেই কি আদালতের নির্দেশের ঊর্ধ্বে? যদিও নুসরতের তরফে জানানো হয়েছে, বছর তিনেক আগে থেকেই তিনি সুরুচি সংঘের সদস্য। জানা গিয়েছে, সৃজিৎ মুখোপাধ্যায়ও সদ্যই সদস্য হয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী মিথিলা বা নুসরতের স্বামী নিখিল জৈন সুরুচির সদস্য কিনা, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়।
এবছর অতিমারীর কথা মাথায় রেখেই আদালতের নির্দেশ মান্য করে সব নিয়ম-কানন পালন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন প্রত্যেকের মুখে ছিল মাস্ক। দূরত্ব বজায় রেখেই অঞ্জলি দিয়েছেন দিয়েছেন তাঁরা। এমনকি সেলেব্রিটিদের দেখতে আসা দর্শকদের মধ্যে যাতে হুড়োহুড়ি না পড়ে যায় তার জন্য আগাম সতর্কতা বজায় রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্বেও আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বলেই মত অনেকের। এবার সেই সূত্রেই উঠে এল আদালত অবমাননার নোটিশের প্রসঙ্গ।
অন্যদিকে, কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে অঞ্জলি দিয়েছেন বলে তাঁর ফেসবুক পেজে দেখা গিয়েছে।বেশি রাতে মহুয়াকে ফোন করা হয়েছিল তাঁর বক্তব্য জানতে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।
লক্ষীপুজোর পর আবার ওই মামলার শুনানি। তার আগে আদালতের নির্দেশ কতটা পালন করা হল, সে বিষয়ে আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে। পুজো মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের তরফে ইঙ্গিত মিলছে যে, পরবর্তী শুনানির সময় এদিনের অঞ্জলি দেওয়ার ঘটনাকে হাতিয়ার করতে পারেন মামলাকারী। তবে এখনই মামলাকারী নুসরতদের আইনি নোটিস পাঠাবেন কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চিত জবাব পাওয়া যায়নি। এখন দেখার, রবিবার, নবমীর দিন কোনও মণ্ডপে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় কি না বা নুসরতরা ওই বিষয়ে মুখ খোলেন কি না। মন্ত্রীর অরূপ গোটা বিষয়ে কী ভূমিকা নেন, তা-ও দেখার।
আরও পড়ুন: মহেশ ভাটের ছত্রছায়াতেই চলে মাদক ও মহিলা সরবরাহ! ভাগ্নের স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ পরিচালকের