Satyajit Ray 100th Birthday : বাঙালি ভাসছে সেই অপরাজিত মিথে!

সত্যজিৎ রায় একজন দক্ষ গল্পকার ছিলেন । তিনি শুধুমাত্র ভারতেরই নয় , গোটা পৃথিবীর কাছে সিনেমাকে এক অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন ।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

একই অঙ্গে বহু গুণের যদি কোনও সংজ্ঞা হয়, তবে ইনি তাঁর প্রকৃষ্ট উদাহরণ । তাঁর নাম সত্যজিৎ রায় । 1921 সালের 2 মে কলকাতায় জন্ম নেন তিনি । মা সুপ্রভা রায় ৷ বাবা ছিলেন, বিখ্যাত লেখক এবং চিত্রশিল্পী সুকুমার রায় । সুকুমার রায় সাধারণত আজগুবি সাহিত্য রচনায় পারদর্শী ছিলেন । তিন বছর বয়স হওয়ার আগেই বাবাকে হারান সত্যজিৎ । ছোট থেকেই মায়ের কাছেই মানুষ ।

ছোটবেলায় একটি সরকারি স্কুলে পড়ার পর, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন । এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার শেষে তিনি শান্তিনিকেতনের কলা ভবনে যোগদান করেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতেনের এই আর্ট স্কুলেই তিনি ভারতীয় এবং প্রাচ্যের বিভিন্ন শিল্প এবং সংস্কৃতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করেন । 1943 সালে তিনি প্রথম বাণিজ্যিক শিল্পী হিসাবে কাজ শুরু করেন । সত্যজিৎ রায় 1947 সালে প্রথম কলকাতার প্রথম ফিল্ম সোসাইটি নির্মাণ করেন । এরপর তিনি একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার হয়ে কাজ করতেন । এই সময়ই 1955 সালে তিনি তাঁর জীবনের প্রথম সিনেমা পথের পাঁচালী তৈরি করেন ।

সত্যজিৎ রায় একজন দক্ষ গল্পকার ছিলেন । তিনি শুধুমাত্র ভারতেরই নয় , গোটা পৃথিবীর কাছে সিনেমাকে এক অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন । তাঁর পরিচালিত সিনেমায় লক্ষণীয় বিষয়গুলি হল মানবিকতা এবং সূক্ষ পর্যবেক্ষণ । এছাড়াও পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে চরিত্রায়ণ করতেন তিনি । সত্যজিতের সিনেমা মানেই বুদ্ধি এবং আবেগের এক সুন্দর মিশেল । তাঁর নিয়ন্ত্রিত, সুনির্দিষ্ট এবং সূক্ষ্ম ভাবে সিনেমা পরিবেশনের মাধ্যমে দর্শকদের থেকে গভীর সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া পান । অতিনাটকীয়তা কিংবা অতিরঞ্জিত না করেও সিনেমাকে সূক্ষ সংবেদনশীলতার মোড়কে মুড়ে ফেলতে পারতেন । তিনি সিনেমা পরিবেশনের এমন এক কায়দা আবিষ্কার করেছিলন যা কার্যত অদৃশ্য । তিনি দৃঢ়ভাবে মনে করতেন সর্বশ্রেষ্ঠ কায়দা সেটাই, যেটা লক্ষ্যণীয় নয় ।

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিয়েও করোনায় আক্রান্ত রণধীর কাপুর, ICU-তে বর্ষীয়ান অভিনেতা

সত্যজিৎ রায়ের চলচিত্র ছবি এবং সাহিত্যকে একই সঙ্গে তুলে ধরে ৷ খুব সহজভাবে ক্লাসিকাল উপায়ে তিনি পর্দায় চলচিত্র তুলে ধরতেন ৷ তাঁর সিনেমায় কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিখুঁতভাবে ব্যাখ্যা করা থাকত ৷ 1955 সালে তাঁর প্রথম ছবি পথের পাঁচালিতেই তিনি নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন ৷ পথের পাঁচালি একাধিক পুরষ্কার অর্জন করে ৷ 1956 সালে কান চলচিত্র উৎসবে সেরা মানব চলচিত্র এবং 1958 সালে ভ্যানকুয়েভারে সেরা চলচিত্র হয় পথের পাঁচালি ৷ অপু ট্রিলজির প্রথম সিনেমা পথের পাঁচালি ৷ অপু ট্রিলজি হল তিন অধ্যায়ে ভাগ করা একটি ছেলের গল্প, যেখানে তাঁর জন্ম বেড়ে ওঠাটা প্রকাশ পায় ৷ পথের পাঁচালি ছাড়া অপু ট্রিলজির বাকি দুটি চলচিত্র হল 1956 সালে অপরাজিত এবং 1959 সালে অপুর সংসার ৷ এছাড়াও তাঁর বাকি সিনেমার মধ্যে জলসাঘর (1958), দেবী (1960), তিন কন্যা (1961), চারুলতা (1964), নায়ক (1966), অশনি সংকেত (1973), সতরঞ্জ কে খিলাড়ি (1977), ঘরে বাইরে (1984), গণশত্রু (1989), শাখা প্রশাখা (1991), আগন্তুক (1991) বিখ্যাত ৷ আগন্তুক তাঁর জীবনের শেষ সিনেমা ৷ এছাড়া ছোটদের পত্রিকা সন্দেশের সম্পাদনার কাজও করেছেন সত্যজিৎ ৷ এছাড়াও একাধিক কাল্পনিক এবং তথ্যভিত্তিক লেখা লিখেছেন ৷

সত্যজিৎ রায় অনেক রায় চলচ্চিত্র নির্মাণের বিভিন্ন আঙ্গিককে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন ৷ তাঁর বেশিরভাগ ছবি চিত্রনাট্য তিনি নিজেই লিখতেন এবং তাঁর মধ্যে বেশিরভাগ গল্পই সত্যজিতেরই লেখা ৷ কস্টিউম বানানো থেকে সেট ডিজ়াইন তিনি একাই করতেন ৷ চারুলতা সিনেমা থেকে ক্যামেরার কাজও তিনি করতে শুরু করেন ৷ এছাড়াও 1961 থেকে নিজের সিনেমার সুর নিজেই দিতেন ৷ ছবি প্রকাশের সময় ছবির পোস্টার নিজের হাতে আঁকতেন ৷

চিত্র পরিচালক ছাড়াও মানিকবাবু সুরকার, লেখক এবং গ্রাফিক ডিজ়াইনারও ছিলেন ৷ ক্যালিগ্রাফির এক নতুন দিগন্ত তিনি খুলে দিয়েছিলেন । 1961 সালে তিনি সন্দেশ পত্রিকার পুনর্সম্পাদনা করেন । সত্যজিতের ঠাকুরদা উপেন্দ্রকিশোর রায় সন্দেশ পত্রিকা প্রথম চালু করেন ।

আরও পড়ুন: ফিরছে ‘পথের পাঁচালী’র নস্ট্যালজিয়া! এবার ‘অপু’র ভূমিকায় আবির

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest