সোমবার রাত থেকেই অতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর কিডনি কাজ করছে না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে যে সৌমিত্রবাবু হেমো ডাইনামিকালি স্টেবল রয়েছেন। অর্থাৎ শারীরবৃত্তীয় ভাবে স্থিতিশীল। কিন্তু ঘটনা হল, লাইফ সাপোর্ট দিয়েই তাঁকে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কেননা তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই কমে গিয়েছে। তাই পুরোদস্তুর অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। তা ছাড়া কিডনি সহ একাধিক অর্গ্যান ফেল করা শুরু করেছে। যেমন, বর্ষীয়ান অভিনেতার মস্তিষ্কে অসাড়তা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ফুসফুসে নতুন করে সংক্রমণ হতে পারে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল দুপুরের পর থেকেই বেড়েছে কিডনির সমস্যা। স্বাভাবিক ভাবে কাজ করছে না কিডনি। দুপুরের পর থেকে মূত্রের পরিমাণও স্বাভাবিক নয়। সন্ধের পর আরও অবনতি হয় সৌমিত্রবাবুর স্বাস্থ্যের। চিকিৎসকদের অনুধাবন করেন যে তাঁর একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে।
সৌমিত্রবাবুর শরীরে ইউরিয়ার পরিমাণও স্বাভাবিকের থেকে বেশি রয়েছে। তবে অভিনেতার প্লেটলেট কমে যাওয়ার হার কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। এবং এছাড়াও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অন্ত্রের রক্তক্ষরণ।
আরও পড়ুন: ঠিক যেন পাশের বাড়ির মেয়ে! প্রসাদ বিতরণ থেকে ধুনুচি নাচ, নজর কাড়লেন মিমি চক্রবর্তী
বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসকদের যে বোর্ডের আওতায় সৌমিত্রবাবু রয়েছেন তার প্রধান ডক্টর অরিন্দম কর। তিনি জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে এয়ারওয়ে প্রোটেক্ট করার জন্য ইনটিউবেশন চালু করা হয়েছে প্রবীণ অভিনেতার। শরীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ঘাটতি থাকার কাড়নে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সৌমিত্রবাবুর শরীরে নতুন করে নিউমোনিয়া সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা চিকিৎসকদের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। এছাড়াও তাঁর শরীরে রয়েছে একাধিক কো-মর্বিডিটির সমস্যা। অভিনেতার জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে। চিকিৎসায় সেভাবে সাড়াও দিচ্ছেন না তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ৭২ ঘণ্টায় সেই অর্থে সৌমিত্রবাবুর স্বাস্থ্যের কোনও উন্নতি হয়নি। বরং ক্রমশ অচল হচ্ছে স্নায়ু। মস্তিষ্কের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতার অবনতি হয়েছে। চিকিৎসকদের অনুমান কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি বাড়ছে। মাঝে মধ্যেই কমে আসছে চেতনা। কোনও ভাবেই চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মস্তিষ্কের যে অংশ ফুসফুসের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, সৌমিত্রবাবুর ক্ষেত্রে সেই অংশ ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাবে প্রবীণ অভিনেতার দমবদ্ধ হয়ে যাওয়া এবং ফুসফুসে অন্যান্য সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছিল। তাই অভিনেতার শ্বাসপ্রশ্বাস যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এন্ডোট্র্যাকিয়াল ইনটিউবেশন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে গতকাল দুপুর ৩টেয়।
আরও পড়ুন: কলকাতা ছেড়ে অনেক দূরে! দুর্গাপুজোয় কোথায় ঘুরতে গেলেন ‘কর্ণ’ ক্রুশাল আহুজা ?