The News Nest: সবাইকে কাঁদিয়ে দিয়ে চলে গেলেন সুশান্ত সিং রাজপুত । তাঁর মৃত্যুর ছয় দিন পরেও এই অপূরণীয় ক্ষতি মানতে পারছে না বলিউড । গোটা দেশকে ভাবিয়ে তুলেছে, মৃত্যুর কারণ, অবসাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, কদর্য বলিউড, নেপোটিজম… । সব কিছু নিয়েই প্রশ্ন উঠছে মানুষের মনে ।
অন্যদিকে থামছে না দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপও । কখনও আঙুল তোলা হচ্ছে সুশান্তের বান্ধবীদের দিকে, কখনও মামলা দায়ের হচ্ছে বি-টাউনের হেভিওয়েট প্রযোজক-পরিচালকদের বিরুদ্ধে । তবে হিট লিস্টে যে নামটা সবার উপরে, সেটা অবশ্যই সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী । গতকালই জিয়া খানের মা রাবিয়া প্রশ্ন তুলেছিলেন রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে । তিনি যে অন্যের কথায় নিজের জীবন চালনা করেছিলেন এবং সঠিক সময়ে সুশান্তের পাশে থাকেননি, তা নিয়েই কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন রিয়াকে । শুধু তাই নয়, ঠাকুরদার বয়সী একজন লোককে কাজের লোভে জীবনে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন বলেও রিয়াকে কটাক্ষ করেন তিনি । অন্যদিকে, ‘জলেবি’র কো-রাইটার সুহরিতা সেনগুপ্ত আগেই স্বীকার করেছিলেন মহেশ ভাটই রিয়াকে সুশান্তের থেকে সরে আসতে বলেছিলেন।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ‘ভাটসাব’-এর ৭০ বছরের জন্মদিনে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন রিয়া। রিয়ার বুকের কাছে মহেশের মাথা, চোখ বন্ধ। মুখে মিষ্টি হাসি, দুজনেরই। ক্যাপশনে লেখা, “শুভ জন্মদিন মাই বুডঢা। তুমি আমায় ভালবাসায় জড়িয়েছ, ভালবাসা কী তা তুমিই শিখিয়েছ… সারাজীবনের জন্য আমার বন্ধ হয়ে যাওয়া পাখা মেলতে শিখেছি তোমারই কারণে। তুমি সেই আগুন যে আগুন প্রতিটি আত্মাকে উদ্দীপ্ত করে। আই লাভ ইউ”।
পাপারাৎজির নজর এড়ায়নি এই পোস্ট। নজর এড়ায়নি নেটাগরিকদেরও। শুরু হয় গুঞ্জন। ২৬-এর রিয়ার ৭০ -এর মহেশের জন্য এ হেন পোস্টে কমেন্ট আসতে থাকে, “তোমরা কী সম্পর্কে রয়েছ?” রাতারাতি তাঁদের সেই ছবি জায়গা করে নেয় পেজথ্রির লিড স্টোরিতে। ইন্ডাস্ট্রি ধরেই নেয় মহেশের জীবনে নতুন বসন্ত এই বাঙালি মেয়ে। রিয়া আর মহেশ কন্যা আলিয়া প্রায় একই বয়সী হওয়ায় ওঠে সমালোচনার ঝড়। যদিও পরে সেই পোস্টের আর হদিশ মেলে নি। রিয়াই সেই পোস্ট মুছে দিয়েছিলেন নাকি অন্য কোনও কারণ, তা আজও অজানা।
ঠিক দু’দিন পর। সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ। মহেশের সঙ্গে আরও একটি পোস্ট করেন রিয়া। রিয়ার এই পোস্টে যেন নড়ে যায় বলিউড। কিশোর কুমারের গলায় ‘অমর প্রেম’ ছবির সেই বিখ্যাত গানের কয়েকটি লাইন…”তু কউন হ্যয়, তেরা নাম হ্যয় কেয়া… সীতা ভি ইহা বদনাম হুয়ি …” সঙ্গে লেখা, “দূষিত হৃদয় থেকে আসা ট্রোল যদি নোংরামো তে পরিপূর্ণ হয় তবে আমাদের অন্ধকার যুগ থেকে বেরিয়ে আসার যাবতীয় দাবি মিথ্যে।”
মিডিয়ার কাছেও মুখ খোলেন রিয়া। প্রেমের গুঞ্জন, অসমবয়সী সম্পর্ক, ইত্যাদিকে চুপ করিয়ে দিয়ে রিয়া বলেন, “ছি! এই মানসিকতা! উনি আমার বাবার মতো”। তাঁর ঠিক এক মাস পরেই অক্টোবরে রিয়ার একটি ছবি মুক্তি পায়, নাম ‘জলেবি’। প্রযোজক মুকেশ ভট্ট এবং চিত্রনাট্যকার মহেশ ভট্ট। রিয়া আর মহেশের প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে বলিপাড়ার অনেকেই তখন মুখ টিপে বলেছিল, “এ সব পাবলিসিটি সটান্ট ‘
বলিউডে খবরের স্থায়িত্ব বেশিদিন না।সে গসিপই হোক বা কলঙ্ক । তাই দিন যত যেতে থাকে মহেশ-রিয়ার ‘প্রেম’-এর খবরও ফিকে হতে থাকে।রিয়ার জীবনেও আগমন হয় সুশান্তের। কিন্তু গত লেখিকা সুহরিতা সেনগুপ্তর এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার আচমকাই সামনে নিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি গোপন তথ্য। লেখিকা বলেছেন, ‘সড়ক 2’তে অভিনয় করতে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে সুশান্ত ছুটে গিয়েছিলেন মহেশ ভট্টর কাছে।তাঁর মানসিক অস্থিরতা দেখে মহেশ ভাট নাকি বলেই ফেলেছিলেন, এ তো আর এক পরভিন ববি।
আদরের রিয়াকে এখনই এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘ভাটসাব’। রিয়া তাও হাল ছাড়েননি। কিন্তু শেষের বেশ কয়েক দিন চারিদিকে কন্ঠস্বর শোনা, ছায়ামূর্তি দেখে সুশান্তের চিৎকার করে ওঠা… ভয় পাইয়ে দিয়েছিল রিয়াকে। কী করবেন? জানতে ছুটে গিয়েছিলেন মহেশ ভাটের কাছে। মহেশ নাকি এ বারেও বলেছিলেন, এই সম্পর্কে থাকলে রিয়া পাগল হয়ে যাবেন খুব শীঘ্রই। এর পরেই নাকি সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন রিয়া।
এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেরাচ্ছে রিয়া আর মহেশ ভাটের পুরনো ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি । সেই অন্তরঙ্গ ছবি দেখে রোষে ফেটে পড়ছেন নেটিজেনরা।
আরও পড়ুন: VIRAL VIDEO: IIT বোম্বেতে মোটিভেশনাল স্পিচ, দেব আনন্দকে নকল, সুশান্তকে ভুলতে নারাজ দেশবাসী