ফের মানবিকতার নজির গড়লেন সাংসদ-অভিনেতা দেব। অভাবী দুই আদিবাসী সম্প্রদায়ের ছাত্রীর যাতে ভবিষ্যতে পড়াশোনা করতে কোনওরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, তার জন্য এগিয়ে এলেন তৃণমূল সাংসদ দেব (Dev)।
বাবা দিনমজুর, মা পরিচারিকা, নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন ঘাটালের পান্না গ্রামের দুই বোন। সংসারের এই সঙ্গীন পরিস্থিতিকে সঙ্গী করেই কলেজে ভরতি হয়েছেন দুই আদিবাসী কন্যা। তবে ভবিষ্যতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার টাকাপয়সা ছিল না। উপরন্তু এই লকডাউনে যখন অনক্লাসেই কোচিং চলছে, তখন বেজায় অসুবিধের মধ্যে পড়েছিলেন তাঁরা। ল্যাপটপ কিংবা কমপিউটার না থাকায় অনলাইনে ক্লাস করতে অসুবিধে হচ্ছিল। প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সেই খবর সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেবের কানে পৌঁছতেই তিনি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। তার অন্যথা হয়নি। উচ্চশিক্ষার জন্য ল্যাপটপ ও আর্থিক সাহায্য করে কথা রাখলেন সাংসদ তথা অভিনেতা।
সাংসদ দেবের হয়ে ঘাটালের মহকুমা শাসক অসীম পাল দুই বোন রিনা ও বিনা নায়েকের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন। ল্যাপটপ ছাড়াও এক বোনকে পড়াশোনার খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ল্যাপটপ পেয়ে উচ্ছ্বসিত দুই বোন। এর আগেই জুন মাসে মহকুমা শাসক নিজের পারিশ্রমিক থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন এক বোনকে।
আরও পড়ুন: সীতারূপেণ সংস্কৃতা! লকডাউনের পর কাজে ফিরলেন মধুমিতা, সামনে এল ‘সীতা লুক’
করোনা আবহে লকডাউন চলাকালীন সাংসদ দেবের প্রতিনিধিরা ঘাটালের বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবার এবং রান্না করা খাবার বিলি করেছিলেন। তখনই অভাবী আদিবাসী সংসারের ওই দুই বোনের কথা জানতে পারেন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জানতে পারেন দেব। রিল লাইফে’র পর ‘রিয়েল লাইফে’ও যে আদতে তিনি ‘হিরো’ হয়ে উঠেছেন, আবারও সেই প্রমাণই দিলেন দেব। শুধু তাই নয়, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাক্ষেত্রে সমস্যা হলে ভবিষ্যতেও পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সাংসদ।
অন্যদিকে পান্না গ্রামের দুই ছাত্রীর পাশাপাশি পাঁশকুড়া ব্লকের কেশাপাটের এক অসহায় ছাত্রীর পাশেও দাঁড়িয়েছেন দেব। পাঁশকুড়ার জয়শ্রী রানা, এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি ৭৫ শতাংশের ওপরে নম্বর পেয়েছেন। বাংলায় ৮৪, ইতিহাসে ৭১, সংস্কৃতে জয়শ্রী পেয়েছেন ৮৪। তাঁর মোট প্রাপ্ত নম্বর ৩৮৯। কিন্তু অর্থের অভাবে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা। কয়েক বছর আগেই জয়শ্রীর বাবার স্নায়ুজনিত রোগের কারণে একটি পা বাদ চলে যায়। যার ফলে তিনি কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। মা বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন. আবার কখনও দিনমজুর খেটে কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছেন।
পড়ার খরচের সঙ্গে সংসারে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে কয়েকটা টিউশন করেন জয়শ্রীও। বাড়িতে রয়েছে তাঁর ভাই। সে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ভাইয়ের পড়াশোনার খরচও জোগাড় করেন জয়শ্রীই। তবে স্নাতকস্তরে পড়াশোনা করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা এই মুহূর্তে জোগাড় করতে পারছিলেন না এই মেধাবী ছাত্রী। এমন অসহায় সময়ে শেষ পর্যন্ত জয়শ্রী পাশে পেলেন অভিনেতা সাংসদকে।
আরও পড়ুন: এবার করোনা আক্রান্ত অভিনেতা আফতাব শিবদাসানি